আজ- ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  রাত ৩:০০

জাতির বিজয় দিবস আজ

 

দৃষ্টি নিউজ:


‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে/বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা/তোমাদের এই ঋণ কোনো দিন শোধ হবে না… মৃতু্্যর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সাত কোটি মানুষের/জীবনের সন্ধান আনলে যারা/সে দানের মহিমা কোনো দিন ম্লান হবে না…’ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনা বীর শহীদদের আজ আকুণ্ঠ চিত্তে স্মরণ করার দিন। বিজয়ের গৌরবের-বাঁধভাঙা আনন্দের মাঝে লাখো স্বজন হারানোর শোকে ব্যথাতুর-বিহ্বল হওয়ার দিন।
আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। একাত্তরের এই দিনটিতে প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝিকমিকিয়ে উঠেছিল বাংলার শিশিরভেজা মাটি,অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাড়ে তেইশ বছরের নির্বিচার শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের কালো অধ্যায়। নয় মাসের জঠর-যন্ত্রণা শেষে এদিন জন্ম নেয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জেনারেল এএকে নিয়াজি ৯৩ হাজার সেনা নিয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তখনকার রেসকোর্স ময়দানে) মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেন। এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।
যথাযোগ্য মর্যাদা আর আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে জাতি আজ মহান বিজয় দিবস উদযাপনের সঙ্গে শ্রদ্ধাবনতচিত্তে স্মরণ করবে পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তির সংগ্রামে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর বেদনার কথা।
আজ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দর এলাকায় সশস্ত্র বাহিনীর তোপধ্বনির মাধ্যমে সূচিত হবে বিজয় দিবসের কর্মসূচি। এরপর প্রতু্্যষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে মুক্তিযোদ্ধা, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিএনসিসি, বর্ডার গার্ড, পুলিশ, র্ যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সমন্বয়ে সম্মিলিত বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে।
আজ সকাল থেকেই সারাদেশে পথে নামবে উৎসবমুখর মানুষ। শহীদদের স্মরণ করে বিনম্র শ্রদ্ধায় দেশের সব স্মৃতিসৌধ ভরিয়ে দেবে ফুলে ফুলে। রাজধানীতে সব বয়সী অগণিত মানুষ সমবেত হবে সভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। শ্রদ্ধার ফুলে ঢেকে যাবে সৌধের বেদি।
লাল-সবুজ পতাকা উড়বে আজ বাড়িতে-গাড়িতে, সব প্রতিষ্ঠানে। মাথায় থাকবে পতাকার রঙে রাঙা ফিতা। পতাকার রঙের পোশাকও থাকবে উৎসবে শামিল অনেকের পরনে। পতাকায় সজ্জিত করা হবে রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলোর প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ। রাতে গুরুত্বপূর্ণ ভবনে করা হবে আলোকসজ্জা। হাসপাতাল, শিশুসদন ও কারাগারগুলোতে পরিবেশন করা হবে বিশেষ খাবার।
বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে সংবর্ধনায় মিলিত হবেন। দিবসটি ছুটির দিন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ হবে এবং সরকারি ও বেসরকারি বেতার ও টিভি চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হবে।
বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno