আজ- ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  বিকাল ৫:২৫

টাঙ্গাইলের কালচারাল অফিসারের জানাজা সম্পন্ন ॥ স্বামীর খোঁজ মেলেনি

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইল জেলা কালচারাল অফিসার খন্দকার রেদওয়ানা ইসলামের জানাজা নামাজ রোববার(২৮ মার্চ) দুপুরে জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমি মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জানাজা নামাজে বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এলেন মল্লিক, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদসহ জেলার সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

পরে তার লাশ দাফনের জন্য বাবার বাড়ি রংপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। খন্দকার রেদওয়ানা ইসলাম রংপুরের রোমানতলা এলাকার মৃত রফিকুল ইসলামের মেয়ে। সেখানেই লাশ দাফন করা হবে। তার পলাতক স্বামী সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের গ্রামের বাড়ি পাবনায়।

এদিকে, মামলার বাদী নিহতের ভাই খন্দকার আসাদুল ইসলাম আবিদ জানান, ২০১৯ সালে তার বোনের সাথে ব্যাংকার মিজানের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে তারা জানতে পারেন মিজান আরও একটি বিয়ে করেছে।

এ নিয়ে বিভিন্ন সময় তার বোনের সাথে মিজানের ঝগড়া বিবাদ হত। মিজান তার বোনকে খুন করার জন্য সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। হাসপাতালে তার বোনকে মিজানই খুন করেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুর থানার এসআই শাহ্জাহান খান জানান, তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ ছিল। বিরোধ মিমাংসা করতে জেলা কর্মকর্তারা একবার উদ্যোগও নিয়েছিলেন। সেই কলহের জের ধরেই এ হত্যাকা- ঘটে থাকতে পারে।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আসামি মিজানুর রহমানকে ধরতে জোর চেষ্টা চলছে।

এরআগে টাঙ্গাইল জেলা কালচারাল অফিসার খন্দকার রেদওয়ানা ইসলামের মরদেহ শনিবার (২৭ মার্চ) বিকালে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ১১ নম্বর কেবিন (ভিআইপি) থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তার স্বামী দেলোয়ার হোসেনকে খুঁজছে পুলিশ।

জেলা প্রশাসনের সূত্রমতে, প্রায় দুই বছর আগে খন্দকার রেদওয়ানা ইসলাম টাঙ্গাইল জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে বদলি হয়ে আসেন। তার স্বামী মিজানুর রহমান ওরফে দেলোয়ার টাঙ্গাইলে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকুরি করতেন।

সম্প্রতি তিনি ভোলায় বদলি হয়ে যান। স্বামী-স্ত্রী দুজন জেলা প্রশাসনের কোয়ার্টারে থাকতেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২২ মার্চ(সোমবার) কালচারাল অফিসার খন্দকার রেদওয়ানা প্রসব ব্যাথা নিয়ে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।

এরপর থেকে কন্যা সন্তানটি তিন তলার ইনকিউবেটরে রাখা হয়। গত চারদিন আগে খন্দকার রেদওয়ানা ইসলামকে চিকিৎসকরা ছুটি দিয়ে দেন। কিন্তু জন্ম নেওয়া মেয়ে কিছুটা অসুস্থাবস্থায় হাসপাতালে থাকার কারণে তিনি হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ১১ নম্বর ভিআইপি কক্ষ নিয়ে থেকে যান।

নবজাতককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের তিনতলায় ইনকিউবেটরে থাকায় সেখান থেকে শনিবার(২৭ মার্চ) বেলা দুইটার দিকে খন্দকার রেদওয়ানা ইসলাম ও তার শিশুসন্তানের দেখভালের জন্য সঙ্গে থাকা তার মামী খোদেজা বেগম শিশুটিকে মায়ের বুকের দুধ খাইয়ে পুনরায় তিনতলায় নিয়ে যান।

কিছুক্ষণ পর খোদেজা বেগম ফিরে এসে কেবিনের দরজা ভেতর থেকে আটকানো দেখতে পান। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরও ভেতর থেকে কেউ দরজা না খোলায় কর্তব্যরত নার্স অনুরাধাকে তিনি বিষয়টি জানান। পরে নার্স অনুরাধা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কেবিনটির দরজা অতিরিক্ত চাবি দিয়ে খুলে ভেতরে ঢুকে মরদেহ দেখতে পান।

খন্দকার রেদওয়ানা ইসলামের মামী খোদেজা বেগম জানান, শিশুটিকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর পর যখন তিনি বাইরে বের হন, তখন তার (রেদওয়ানা) স্বামী মিজানুর রহমান ওরফে দেলোয়ার কেবিনেই ছিলেন। ফিরে এসে তাকে আর দেখতে পাননি।

কুমুদিনী হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক (অপারেশন) অনিমেষ ভৌমিক জানান, বিষয়টি জানতে পেরে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানান।

মির্জাপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দীপংকর কুমার ঘোষ জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কক্ষের ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে তালা খুলে ভেতরে রেদওয়ানার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়।

নিহতের স্বামী পলাতক থাকার তাকে খুঁজছে পুলিশ। নিহতের গলায় ওড়না পেঁচানোর চিহান রয়েছে বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে তার স্বামী দেলোয়ার হোসেন গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে করে হত্যা করে পালিয়ে গেছেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno