আজ- ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার  সকাল ৭:৫৬

টাঙ্গাইলে আ’লীগ-বিএনপি-জাপার একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন

 

বুলবুল মল্লিক:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল-৫(সদর) আসনে চলছে সরব রাজনীতি। এ আসনে সব দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বেশ জোরে শোরে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। বড় দুই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময়, নির্বাচনী এলাকার অলি-গলিতে পোস্টার ও লিফলেট সেঁটে জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। সেই সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের সমর্থন ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সন্তুষ্ট করতে লবিং করছেন।

জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে হঠাৎই শাসক দলের নেতাদের বাহ্যিক ব্যবহারে পরিবর্তন এসেছে। গণমানুষের সঙ্গে মোলায়েম সুরে কথা বলছেন- যার তার সাথে হ্যান্ডশেক করে কুশল জানতে চাইছেন। এসব ঘটনা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার পর জেলার আওয়ামী রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা হচ্ছে।


জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে একাদশ সংসদ পর্যন্ত কাকতালীয় ভাবে এ আসনে বিজয়ী প্রার্থীর দলই সরকার গঠন করেছে। তবে, পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান জয়লাভ করলেও পরবর্তী সময়ে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। সে হিসেবে টাঙ্গাইল-৫ সরকার গঠনেরই আসন। ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আবদুল মান্নান জয়লাভ করেছিলেন। এরপর যথাক্রমে বিএনপির আবদুর রহমান (১৯৭৯), জাতীয় পার্টির মীর মাজেদুর রহমান (১৯৮৬), জাতীয় পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান(১৯৮৮), পরবর্তীতে বিএনপির মে.জে. (অব.) মাহমুদুল হাসান (১৯৯১), বিএনপির মে.জে. (অব.) মাহমুদুল হাসান(১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি), আওয়ামী লীগের আবদুল মান্নান (১৯৯৬ সালের ১২ জুন), বিএনপির মাহমুদুল হাসান (২০০১), জাতীয় পার্টির আলহাজ আবুল কাশেম (২০০৮), আওয়ামী লীগের আলহাজ মো. ছানোয়ার হোসেন (২০১৪), আওয়ামীলীগের আলহাজ মো. ছানোয়ার হোসেন(২০১৮) পর্যায়ক্রমে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।


আগামি নির্বাচন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা সীমাবদ্ধ থাকলেও দু’টি দলেই রয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সমস্যা। আওয়ামী লীগের কোন্দল গোপণে হলেও বিএনপির এ সমস্যা তীব্র ও প্রকট।

কিছুদিন আগেও তারা আলাদা আলাদা স্থানে সভা-সমাবেশ ও দলীয় কর্মসূচি পালন করেছে। গত বছরের ১ নভেম্বর গোপণ ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়ে হাসানুজ্জামিল শহীনকে সভাপতি ও ফরহাদ ইকবালকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার পর ধীরে ধীরে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা হতে থাকে। কর্মীদের মধ্যে সমঝোতা হলেও নেতৃত্ব পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা এখনও ফিরে আসেনি- নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব বিদ্যমান।


এই সেদিনও আওয়ামী লীগের জেলার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন শহরের আলোচিত ‘খান পরিবার’। খান পরিবারের চার ভাইয়ের জ্যেষ্ঠ আমানুর রহমান খান রানা এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিন বছরের অধিক সময় হাজতে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি ঘাটাইলে গিয়ে আস্তানা গড়েন। একই মামলায় তার অপর এক ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি আত্মসমর্পন করে কারাগারে রয়েছেন। অপর দুই ভাই যথাক্রমে ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা এখনও আত্মগোপণে রয়েছেন।

চার ভাইকেই দলের জেলা এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি সম্মেলনের মধ্য দিয়ে গঠিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়নি। সঙ্গত কারণেই ওই কমিটিতে তাদের স্থান হচ্ছেনা। তবে এমপি হওয়ায় আতাউর রহমান খানকে জেলা কমিটিতে রাখা হচ্ছে। জেলার রাজনীতি থেকে ‘খান পরিবার’ কার্যত: বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও তাদের অনেক অনুসারী রয়ে গেছে। তারা নানাভাবে খান পরিবারের প্রভাবকে পুন:প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।


এদিকে, আওয়ামী রাজনীতিতে যোগ হয়েছেন খান পরিবারের বিপক্ষ শক্তি সাবেক পৌর মেয়র জামিলুর রহমান মিরন এবং জার্মান প্রবাসী দুই ভাই গোলাম কিবরিয়া(বড় মনি) ও তানভীর হাসান(ছোট মনির)। বড় মনি ও ছোট মনির এক সময় মুরাদ সিদ্দিকীর ঘনিষ্ঠজন থাকলেও সময়ের ক্রমধারায় তানভীর হাসান ছোট মনির এখন টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য এবং গোলাম কিবরিয়া বড় মনি জেলা বাস কোচ মালিক সমিতির মহাসচিব।

দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মো. ছানোয়ার হোসেন খান পরিবারের অনুসারী হওয়ায় তাদের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী খান পরিবারের মনমতো না হলে তাদের অনুসারীরা দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করবে অনেকেই এ রকম ধারণা পোষণ করেন। তবে মো. ছানোয়ার হোসেন খান পরিবারের অনুসারী হলেও তার কর্মকান্ডে খান পরিবারের প্রভাব দেখা যায়নি।

দশম ও একাদশ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মো. ছানোয়ার হোসেন কাজের মাধ্যমে অনেকটা ক্লিন ইমেজ তৈরি করেছেন। তিনি আগামি নির্বাচনেও মনোনয়ন চাইবেন। খান পরিবারের অনুসারী হওয়ায় তার ক্লিন ইমেজে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তিনি আওয়ামী রাজনীতির মূলধারায় নিজের অবস্থানকে ধরে রাখতে সচেষ্ট রয়েছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। সভা-সমাবেশ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বীয় কণ্ঠে গান গেয়ে মানুষের মনযোগ আকর্ষন করছেন।


বহুদিন থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন টাঙ্গাইলের এক সময়ের প্রতাপশালী সিদ্দিকী পরিবারের অন্যতম সদস্য মুরাদ সিদ্দিকী। এর আগে তিনি এ আসন থেকে বার বার জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেছেন। প্রতিবারই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভোট পেয়েছেন।

মুরাদ সিদ্দিকীর সমর্থকদের ধারণা তার প্রাপ্ত ভোটগুলো আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাপার বাইরের। তাকে যদি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে দলীয় ভোটের সঙ্গে তার ভোট যুক্ত হলে তিনি অনায়াসে এমপি নির্বাচিত হবেন। আওয়ামী লীগ থেকে তিনি গ্রিণ সিগনাল পেলেও গঠিতব্য জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাকে নেওয়া না নেওয়া নিয়ে দোলাচল চলছে। তবে আওয়ামীলীগে ভিরতে তিনি চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫(সদর) আসনে আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মামুনুর রশিদ মামুন মনোনয়নের প্রত্যাশায় গণসংযোগ করছেন। তিনি আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসি হওয়া মুফতি হান্নানের আইনজীবী হওয়ায় বিতর্কে পড়ে যান। ওই সময় তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে দেশ ছাড়েন। পরে দেশে এসে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মনোনীত হন।

দীর্ঘদিন টাঙ্গাইলের রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও ইদানিং বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সফর করছেন। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন, গণমানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।

এছাড়া প্রার্থী হিসেবে সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরন ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ বাহারুল ইসলাম তালুকদার মিন্টুর নামও শোনা যাচ্ছে। মনোনয়নের ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রাজ্ঞ রাজনীতিক একুশে পদকপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুকের সমর্থন যার প্রতি থাকবে তিনিই এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পাবেন- এমনটাই ধারণা আ’লীগ নেতাকর্মীদের।

এ কারণে এখনও স্পষ্ট নয়, কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন। আবার আওয়ামীলীগ জোটবদ্ধ হয়ে মহাজোটের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিলে এ আসনটি মহাজোটের অন্যতম শরীকদল জাতীয়পার্টির প্রার্থীর হতে পারে- এমন আলোচনা প্রকট।


অপরদিকে, জেলা শহরে বিএনপির কোন্দল নয়া কমিটি গঠনের পর কিছুটা কমে আসলেও দ্বাদশ জবাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় আবার মাথাচারা দিচ্ছে- এর বিরূপ প্রভাব নির্বাচনে পড়বে এটা স্পষ্ট। নবগঠিত জেলা বিএনপির কমিটি সম্মিলিতভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুন:প্রবর্তন ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিগুলো পালন করছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী যুব দলের সভাপতি সুলতান সাউদ্দিন টুকু এ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করায় স্থানীয় নেতৃত্ব নড়েচড়ে বসেছে।

সুলতান সালাউদ্দিন টুকু টাঙ্গাইল-৫(সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পান- ভেতরে ভেতরে স্থানীয় নেতৃত্ব এটা চায় না। তবে যুব দলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এ আসনের প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান এ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী, তবে তিনি বয়সের ভারে ন্যূব্জ। ইতোপূর্বে এ আসন থেকে তিনি চার বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, মন্ত্রীও হয়েছেন। তার ছেলে প্রকৌশলী রাশেদ হাসান মনোনয়ন চাইতে পারেন।

গেল শীত মৌসুমে তাকে গণসংযোগ ও শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেখা গেছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল এ আসনে শক্তিশালী প্রার্থী। দলীয় মনোনয়ন পেতে তিনি গণসংযোগের পাশাপাশি দুস্থ্যদের সহায়তাও করছেন। তিনি দলের ত্যাগী নেতাদের একজন, দলের সকল কর্মসূচিতে তাকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। দলের নেতাকর্মীদের বিপদে-আপদে তিনি নিজ উদ্যোগে এগিয়ে আসেন।

জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীনও এ আসনে দলের মনোনয়ন চাইবেন। গত বছরের নভেম্বরের দলীয় সম্মেলনে তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি হয়েছেন। বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার আহসান হাবিবও এ আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

টাঙ্গাইলের সব সময়ের প্রার্থী সৈয়দ খালেদ মোস্তফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশায় শহর ও গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পায়ে হেটে প্রচারণা চালাচ্ছেন, ভোট প্রার্থণা করছেন। স্বীয় প্রচারণার অংশ হিসেবে তিনি নিজের হাতে ব্যানার টাঙান, দেওয়ালে চিকা মারেন, পায়ে হেটে গ্রামে গ্রামে, মহল্লায় মহল্লায় দ্বারে দ্বারে গিয়ে দোয়া ও ভোট প্রার্থণা করছেন। এ ধরণের কর্মকান্ডের মাধ্যমে তিনি সারা বছরই মানুষের কাছে ভোট প্রার্থণা করে থাকেন।


রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি ও জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি জেলায় আলাদা আলাদা আহ্বায়ক সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি দেওয়ায় জেলায় জাপার রাজনীতিতে ধূ¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় পার্টি(এরশাদ) থেকে মনোনয়ন চাইবেন ক্লিনম্যান হিসেবে পরিচিত শিল্পপতি আলহাজ আবুল কাশেম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সালাম চাকলাদার ও জেলা জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক।

২০০৮ সালের নির্বাচনে আবুল কাশেম মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু পুরো সময় তিনি সংসদ সদস্য থাকতে পারেননি। ঋণ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা মামলায় তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান এবং বিএনপির মেজর জেনারেল(অব.) মাহমুদুল হাসানকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। জাপা এবার মহাজোটের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলে এ আসনের দাবিদার হিসেবে জাতীয়পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার শিল্পপতি আবুল কাশেম ও জেলা জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক প্রাধান্য পাবেন।

একক কিংবা পৃথক জোট করলেও এ আসনের মনোনয়ন জাপার হাতে থাকার সম্ভাবনাই বেশি। দীর্ঘদিন জেলার রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকলেও জাতীয়পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার আবুল কাশেম মনোনয়নের প্রত্যাশায় সক্রিয় হয়েছেন। জেলা জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশায় দীর্ঘদিন ধরে প্রচারণা চালাচ্ছেন। জেলা জাপা’র নেতাকর্মীরা আবার উজ্জীবিত হচ্ছে।

টাঙ্গাইল-৫(সদর) আসনে সিদ্দিকী পরিবারের মুরাদ সিদ্দিকী জনপ্রিয় ও শক্তিশালী প্রার্থী হলেও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কোন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছেনা। একইভাবে জাকের পার্টি, খেলাফত মজলিশ সহ ছোটখাট দলগুলোর প্রার্থীরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে এখনও তৎপরতা শুরু করেন নি।


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আগামি নির্বাচন কঠিন হওয়ার বিবেচনায় তারা গণমানুষের সঙ্গে রুক্ষতা পরিহার করে মোলায়েম ও ভালো ব্যবহার করছেন, সাধারণ মানুষের কথা মনযোগ দিয়ে শুনছেন। দলীয় কার্যক্রম থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানও তারা বর্ণাঢ্যভাবে আয়োজন করছেন।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত ও হামলা-মামলায় পর্যুদস্ত বিএনপি এখনও গা ঝাড়া দেয়নি। তবে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আশায় প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে বিএনপির সমর্থকরা।


মহান জাতীয় সংসদের ১৩৪ টাঙ্গাইল-৫(সদর) আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৮০ হাজার ২৭৯ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৯১ হাজার ৭৩৬ জন ও পুরুষ ভোটার এক লাখ ৮৮ হাজার ৫৪৩ জন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno