আজ- ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার  রাত ৮:৪৯

টাঙ্গাইলে কঠোর বিধিনিষেধেও করোনার সংক্রমণ কমছে না

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইল ও এলেঙ্গা পৌরসভা এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমছে না।

বিধিনিষেধ আরোপের তৃতীয় দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার(২৪ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলায় একদিনে করোনা সংক্রমণের হার ৩৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, মৃত্যুবরণ করেছে এক জন।

করোনা উপসর্গ নিয়ে কালিহাতী উপজেলা সদরে মৃত্যুবরণ করেছে তিন জন। এরআগে বুধবার ছিল ৩৫ দশমিক ২২শতাংশ, এদিন মৃত্যুবরণ করেছে তিন জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেছে দুই জন।

কঠোর বিধিনিষেধ অরোপের দিন মঙ্গলবার(২২ জুন) করোনা সংক্রমনের হার ছিল ৩৬ দশমিক ১১ শতাংশ, মৃত্যুবরণ করেছে দুই জন।

জেলা স্বাস্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার(২২ জুন) ভোর ৬টা থেকে ২৮ জুন(সোমবার) রাত ১২টা পর্যন্ত সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

কঠোর বিধিনিষেধ বহাল রাখা হলেও আন্ত:জেলা যাত্রীবাহী বাস সার্ভিস চলাচল করছে। শহরের নতুন বাসটার্মিনাল থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দূর পাল্লার যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কঠোর বিধি নিষেধের কারণে টাঙ্গাইল শহরের মার্কেট ও বিপণি বিতানগুলো বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু কিছু ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা, অটোভ্যান ও ইজিবাইক চলাচল করছে। কোথাও কোথাও সিএনজি চালিত অটোরিকশাও চলছে।

একই সাথে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েণ্টে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে ঢিলেঢালাভাবে কাজ করছে।

টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্র নিরালা মোড়, বটতলা মোড়, শান্তিকুঞ্জ মোড়, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, কুমুদিনী কলেজ মোড়, নতুন বাস টার্মিনাল, বেবীস্ট্যান্ড ঘুরে অধিকাংশ এলাকা ফাঁকা দেখা গেছে।

তবে ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, অটোভ্যান চলাচল করতে দেখাগেছে। কোথাও জনসমাগম না থাকলেও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালনে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হচ্ছেনা।

এছাড়া শহরের প্রবেশমুখ আশেকপুর বাইপাস রোড, বিলঘারিন্দা রোড, এলজিইডি রোড, ধুলেরচর মাদ্রাসা রোড, কাগমারী কলেজ রোড, বেড়াডোমা-বাঘিল রোড, বাজিতপুর-দেলদুয়ার রোড সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি পয়েণ্টে পুলিশি ব্যারিকেড বসানো হয়েছে।

শহরের পাইকারী মালামাল বিকিকিনির পার্ক বাজার, বটতলা, ছয়আনী, বেবীস্ট্যান্ড, সাবালিয়া, আমিন বাজার, বউ বাজার সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতা কাউকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি।

উন্মুক্তস্থানে কাঁচা বাজার বসানোর নির্দেশনা থাকলেও কোন বাজারেই তা করা হয়নি। এ বিষয়ে স্ব স্ব বাজার কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসনের কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।

উন্মুক্ত স্থানে কাঁচা বাজার বসানো প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) রানুয়ারা বেগম জানান, জেলার সর্ববৃহৎ পার্ক বাজারটি পৌরসভার নিয়ন্ত্রণে। এ বিষয়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, দ্রুতই তারা পার্ক বাজারের পাশে কেন্দ্রীয় ঈদগাঁ মাঠে সাময়িকভাবে স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

কাঁচা বাজার সাময়িক স্থানান্তরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বিপিএম জানান, কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের জন্য টাঙ্গাইল পৌর এলাকায় পুলিশের ১৩টি চেকপোস্ট ও এলেঙ্গা পৌর এলাকায় পাঁচটি চেকপোস্টের মাধ্যমে তদারকি করা হচ্ছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯৬টি নমুনা পরীক্ষায় ১৭৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৮০ জন, কালিহাতীতে ২৩ জন, ঘাটাইলে ১৫ জন, মির্জাপুরে ১৪ জন, ভুঞাপুরে ১২ জন, মধুপুর ও

দেলদুয়ারে নয় জন করে, বাসাইল ও গোপালপুরে পাঁচ জন করে এবং সখীপুর উপজেলায় তিন জন রয়েছেন।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা মোট ছয় হাজার ৭১৯ জন। জেলায় করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছে মোট ১০৫ জন।

সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চার হাজার ৪৩৮ জন। হাসপাতালে করোনা রোগীর ভর্তি রয়েছে ৪৯৬ জন। কোয়ারেণ্টিন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৫ হাজার ২২২ জন।

টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান জানান, কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। তারপরও করোনা সংক্রমণ কমছেনা।

মূলত: মানুষের করোনা ভীতি অনেকটা কমে গেছে, তাই চেষ্টা করেও মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছেনা। এ বিষয়ে তিনি নাগরিক সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সহায়তা প্রত্যাশা করেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno