আজ- ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার  দুপুর ১:০০

টাঙ্গাইলে করোনা ও উপসর্গে ১১৮ জনের মৃত্যু, শনাক্তের গড় হার ৪১.৩৮ শতাংশ

 

দৃষ্টি নিউজ:

কঠোর লকডাউনেও টাঙ্গাইল জেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গত ১৪ দিনের কঠোর লকডাউনের মধ্যে জেলায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মোট ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬৫ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৫৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ে সাত হাজার ৭৪৪টি নমুনা পরীক্ষায় তিন হাজার ২০৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

শনাক্তের গড় হার ৪১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল থেকে দেওয়া প্রতিদিনের তালিকায় বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জেলা স্বাস্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৩ জন মারা গেছেন।

এদিন জেলায় নতুন করে ৫৯২টি নমুনা পরীক্ষায় ২০৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

সূত্রমতে, গত ১৪ দিনের কঠোর লকডাউনের ১৩তম দিনে ৭৯১টি নমুনার মধ্যে ২৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে- শনাক্তের হার ৩৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এদিন করোনা ও উপসর্গে ৯ জনের মৃত্যু হয়।

১২তম দিনে ৫৩১টি নমুনা পরীক্ষায় ২০৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়- শনাক্তের হার শতকরা ২৮ দশমিক ৩২ ভাগ। এদিন করোনা ও উপসর্গে ৯ জন মারা যান। ১১তম দিনে ৫২১ জনের নমুনায় ১৭৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়- শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। করোনা ও উপসর্গে ৬ জনের মৃত্যু হয়।

১০ম দিনে ৪৪৩টি নমুনা পরীক্ষায় ১৮৬ জনের করোনা পজেটিভ হয়- শনাক্তের হার শতকরা ৪২ দশমিক ৪৬ ভাগ। এদিন করোনা ও উপসর্গে ৭ জন মারা যান। ৯ম দিনে ৭১৭টি নমুনায় ২৯০ জনের করোনপা শনাক্ত হয়- শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এদিন ৪ জনের মৃত্যু হয়।

৮ম দিনে ৬৪৬টি নমুনায় ২৫৪ জনের করোনা পজেটিভ আসে- শনাক্তের হার শতকরা ৩৯ দশমিক ৫১ ভাগ। এদিন করোনা ও উপসর্গে ১১ জনের মৃত্যু হয়। ৭ম দিনে ৫৪২টি নমুনা পরীক্ষায় ২৭৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়- শনাক্তের হার ৫১ দশমিক ১০ শতাংশ। এদিন করোনা ও উপসর্গে ৬ জনের মৃত্যু হয়।

৬ষ্ঠ দিনে ৭১৩টি নমুনায় ৪১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়- শনাক্তের হার ৫৭ দশমিক ৯২ শতাংশ। এদিন করোনা ও উপসর্গে ৭ জনের মৃত্যু হয়।

৫ম দিনে ৫৮১টি নমুনায় ২২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়- শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ০৭ শতাংশ। এদিন করোনা ও উপসর্গে ৭ জনের মৃত্যু হয়।

৪র্থ দিনে ৪৮১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৯৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়- শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এদিন করোনা ও উপসর্গে ১১ জন মারা যান। ৩য় দিনে ৩২টি নমুনা পরীক্ষায় ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়- শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ। এদিন করোনা ও উপসর্গে ৯ জনের মৃত্যু হয়।

২য় দিনে ৫২৬টি নমুনায় ২৩৫জনের করোনা শনাক্ত হয়- শনাক্তের হার শতকরা ৪৪ দশমিক ৬৭ ভাগ। এদিন করোনা ও উপসর্গে মারা যান ৭ জন। কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন ৬২৮টি নমুনা পরীক্ষায় ২৫৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়- শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ৯২ শতাংশ। এদিন করোনা ও উপসর্গে ১৬ জনের মৃত্যু হয়।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনের উপর নির্ভর না করে স্ব স্ব এলাকার জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শিক্ষক, ইমাম, মুয়াজ্জিন, এনজিওকর্মী সহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন।

তাদেরকে স্বতস্ফূর্ত সচেতনতায় এনে জনসাধারণের মাঝে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, সাবান দিয়ে বার বার হাতধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা নিশ্চিত করা হলে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাদিকুর রহমান জানান, করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের নাম-ঠিকানা পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসকরা জানতে পেরেছেন- করোনা আক্রান্তদের অধিকাংশই গ্রাম থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন।

এছাড়া কঠোর লকডাউনের আগে জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বেসরকারি কুমুদিনী হাসপাতালে করোনা রোগী ছিলনা বললেই চলে।

কিন্তু গ্রামে-গঞ্জে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বেসরকারি কুমুদিনী হাসপাতালেও রেকর্ড সংখ্যক করোনা রোগী ভর্তি রয়েছে।

টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান জানান, কঠোর লকডাউনেও টাঙ্গাইলে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। লকডাউন বাস্তবায়নে বৃহত্তর স্বার্থে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

গ্রামাঞ্চলের মানুষ মাস্ক না পড়ে, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে, স্বাস্থ্য বিধি না মেনে অবাধে চলাচল করছে। ফলে গ্রামের মানুষ বেশি সংখ্যায় করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে।

গ্রাম এলাকার মানুষ এখনই স্বাস্থ্য সচেতন না হলে আগামি দিনে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno