আজ- ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  রাত ১০:০৪

টাঙ্গাইলে রক্তক্ষরণে প্রসূতি মৃত্যু ॥ দুই লাখ টাকায় সমঝোতা

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইল শহরের নূরুল আমিন খান মাল্টিপারপাস মেডিকেল সেণ্টার কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারের দায়িত্বে অবহেলায় শুক্রবার(১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রিনা বেগম নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

গৃহবধূ রিনা বেগম(২৬) টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের রাঙাচিরা গ্রামের ইসরাইল মিয়ার স্ত্রী। মৃত্যুর ঘটনা ধাপাচাপা দেওয়ার জন্য কয়েক দফা বৈঠক হয়। পরে রোগীর স্বজনদের দুই লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বিষয়টির সমঝোতা করেছেন।

গৃহবধূর স্বামী ইসরাইল মিয়া জানান, প্রসব ব্যথা শুরু হলে বৃস্পতিবার(৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নূরুল আমিন খান মাল্টিপারপাস সেণ্টারে রিনা বেগমকে ভর্তি করা হয়। গাইনী চিকিৎসক ডা. সাজিয়া আফরিনের নেতৃত্বে অস্ত্রপচারের (সিজার) মাধ্যমে রিনা বেগম কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তাকে কেবিনে আনার পর রাত থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

বিষয়টি ক্লিনিকের নার্সকে জানালে তিনি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারকে অবগত করেন। কিন্তু একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা কেউ আসেননি। শুক্রবার সকালে তার অবস্থার অবনতি হলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রিনা বেগমকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হয়।

ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স অনামিকা সরকার জানান, তিনি শুক্রবার সকাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। রাতে ও বৃহস্পতিবার কি হয়েছে- তা তিনি জানেন না।

গৃহবধূ রিনা বেগমের মা চায়না বেগম জানান, সিজার ভালোভাবে করা হয়নি। সিজার করার পর পরই পেট ফুলতে থাকে। পেটের দুই পাশ দিয়ে রক্ত ঝড়া শুরু হলেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

তার মেয়ে বার বার ডাক্তারের কথা বলেছে। কিন্তু ডাক্তার আসেনি। ডাক্তারের অবহেলায় তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

নিহতের স্বামী ইসরাইল মিয়া জানান, ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিক কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তার মেয়ে এতিম হয়েছে। তার মেয়েকে যারা এতিম করেছে- তিনি তাদের শাস্তি দাবি করেন।

নূরুল আমিন খান মাল্টিপারপাস মেডিকেল সেণ্টারের অভ্যর্থনাকর্মী সাদিয়া আফরিন জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। ক্লিনিকের ম্যানেজার সেলিম জাবেদ ও মালিক মো. সরোয়ার হোসেন খান বাইরে রয়েছেন, তারা কখন ফিরবে তাও তিনি জানেন না। অনুমতি ছাড়া তাদের ফোন নম্বরও দেওয়া যাবে না বলে জানান তিনি।

নূরুল আমিন খান মাল্টিপারপাস মেডিকেল সেণ্টারের মালিক মো. সরোয়ার হোসেন খান জানান, তিনি খবর পেয়ে ক্লিনিকে গিয়ে জানতে পারেন ডা. সাজিয়া আফরিন রোগীকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন। রোগীর আত্মীয়রা গাড়ির সাথে যেতে রাজি না হওয়ায় তার ক্লিনিকের তিন জন স্টাফ দিয়ে মির্জাপুর পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ডাক্তারই ভালো জানেন রোগীকে কোথায় রেফার্ড করবেন। এ বিষয়ে ক্লিনিক মালিক কিছু বলার রাইট রাখে না।

টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত রয়েছেন। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno