আজ- ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার  রাত ৮:০২

টাঙ্গাইলে রেলসেতুর অ্যাপ্রোচে ধ্বস :: রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় পৌলি নদীর উপর রেল সেতুর অ্যাপ্রোচের মাটি প্রায় ৩০ ফুট ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রোববার(২০ আগস্ট) সকাল ছয়টার দিকে স্থানীয়রা রেল সেতুর অ্যাপ্রোচের মাটি সরে যেতে দেখে। তারা স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করে। এরপর স্থানীয় লোকজন লাল কাপড় টানিয়ে সতর্কবার্তা প্রদর্শন করে ট্রেন থামায়। সকাল ১০টার দিকে গাজিপুর থেকে উদ্ধারকারী রেল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ধসেপড়া অ্যাপ্রোচ পর্যবেক্ষণ করে। পরে বালির বস্তা ফেলে ধসে যাওয়া অংশ সংস্কারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ঘটনাস্থলে রেলওয়ের স্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, রেল সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কের বিরাট একটি অংশের মাটি সড়ে গিয়ে গর্ত দেখতে পেয়ে তারা সেখানে লাল কাপড় ঝুঁলিয়ে দেন। লাল কাপড় উড়ানো দেখতে পেয়ে নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস রেলের চালক সোহরাওয়ার্দী ট্রেন থামিয়ে দিলে কয়েক হাজার যাত্রী ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। পরে নীলসাগর এক্সপ্রেস পিছিয়ে ইব্রাহিমাবাদ(বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব) স্টেশনে নেওয়া হয়।
নীলসাগর এক্সপ্রেস রেলের চালক সোহরাওয়ার্দী জানান, দূর থেকে রেলসেতুর উপর কিছু লোকজনের লাল কাপড় উড়ানো দেখে তিনি রেল থামান। তিনি রেলসেতুর দক্ষিণ পাশে ধস দেখে উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং খবর দেন। পরে উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে রেলটি পিছিয়ে ইব্রাহিমাবাদ স্টেশনে নেন।
রেলওয়ে পশ্চিম অঞ্চলের(পাকশী) প্রধান প্রকৌশলী রমজান আলী বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করছি। এখানে প্রায় ৩০ ফুট গভীর হয়েছে এবং মাটি সরে পড়েছে। ঢাকা থেকে প্রকৌশলী দল এসেছে। তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে, যত দ্রুত সম্ভব অ্যাপ্রোচ সংস্কার সম্পন্ন হবে। এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কে ফোর লেনের কাজ চলছে। পৌলি রেল সেতুর কাছে ফোর লেন প্রকল্পের সেতু নির্মাণের সময় থেকে সেখানে পানি বাঁধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে রেল সেতুর উপর। এ কারণেও এ ঘটনা ঘটতে পারে।   
টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেল স্টেশনের মাষ্টার জালাল উদ্দিন জানান, সকাল সাড়ে ৫টার দিকে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি যমুনা নদীর শাখা পৌলি নদীর উপর অবস্থিত কালিহাতী উপজেলার পৌলী রেল ব্রিজ এলাকায় অতিক্রম করার পর পরই পৌলী রেল ব্রিজের ৩০ ফুট এলাকা জুড়ে অ্যাপ্রোচ অংশ ধসে পড়ে। বন্যার পানিতে মাটি নরম হয়ে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। এতে রেল লাইনের নিরাপত্তা জনিত কারণে ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে ঢাকাগামী নীলফামারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকা পড়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশনে ঢাকাগামী রংপুর এক্সপ্রেস, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম স্টেশনে দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস এবং ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো জয়দেবপুর রেলস্টেশনে আটকা পড়ে আছে।
এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই রেল সেতুর কোল ঘেষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে এ ঘটনা ঘটেছে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে জানান, এ ঘটনা যদি বালু উত্তোলনের কারণে হয়ে থাকে তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno