আজ- ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার  দুপুর ২:৫২

টাঙ্গাইলে ৬৬ স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরা অনিশ্চিত

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলে যমুনা ও অভ্যন্তরীণ নদীগুলোর পানি কমতে থাকায় জেলার সাতটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে।

বর্তমানে জেলার ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ এবং বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তায় বন্যার পানি রয়েছে।

এছাড়া পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ক্লাসে ফেরায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জেলার শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের বন্যায় জেলার এক হাজার ৬২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৬৬টি বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করে।

৩৪টি বিদ্যালয়ের শ্রেণিক্ষ ও মাঠে এখনও পানি রয়েছে। ৬৯৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৮৭টি বন্যা কবলিত হয়। ২৭টি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ এখনও বন্যা কবলিত।

এছাড়া পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করায় পাঠদানযোগ্য নয়।


জানা যায়, বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর স্কুল খোলার আনন্দে ভাসছে শিক্ষার্থীরা। এখনও জেলার প্লাবিত স্কুলগুলো পাঠদানের যোগ্য না হলেও শিক্ষক-কর্মচারীরা ধোয়া-মুছা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ সেরে রাখছেন।

তারা আগামি ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্কুলের ক্লাসরুম থেকে পানি নেমে যাওয়ার আশা করছেন। কিন্তু ওইসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে ফেরা এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।

সরেজমিনে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের অয়নাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এখনও বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। স্কুলে যাতায়াতের রাস্তাটি পানির নিচে। বিদ্যালয়ের তিনটি ভবনের মধ্যে দুটির শ্রেণিকক্ষে পানি রয়েছে।

বেঞ্চগুলোও এক প্রকার পানির নিচে হামাগুড়ি দিচ্ছে। একই উপজেলার গালারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও একই অবস্থা। এ বিদ্যালয়ের মাঠে এখনও হাটু পানি রয়েছে। পশ্চিম দিকে একটি ভবনের প্রায় অর্ধাংশ পানির নিচে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, বন্যার পানি নেমে না গেলে ছোট ছোট শিশুদের স্কুলে পাঠানো ঠিক হবেনা। মাঠে এখনও পানি রয়েছে। আগামি ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পানি নেমে যাবে কিনা এর কোন নিশ্চয়তা নেই।

সদর উপজেলার মগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠেও পানি জমে রয়েছে। সেখানে অবস্থিত মগড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ভবনের সামনে জাল দিয়ে মাছ ধরছে স্থানীয়রা। বিদ্যালয়ের পুরো মাঠ পানির নিচে।

কালিহাতী উপজেলার দশকিয়া ইউনিয়নের হাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে পানি নেমে গেলেও কাঁদায় পরিপূর্ণ। এ স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ পারভীন জানান, স্কুলের মাঠ থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে।

কিন্তু এখানকার বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা নদী পাড় হয়ে স্কুলে আসে। এছাড়া স্কুলে আসার রাস্তাটি এখনও পানি নিচে রয়েছে। তারপরও স্কুল খোলার সকল প্রস্তুতি তারা গ্রহন করেছেন। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের সাথে তারা বৈঠকও করছেন।

টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী আহসান জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্যা কবলিত স্কুলগুলো নিয়েও কাজ করা হচ্ছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে সমস্যা সমধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। অর্থাৎ যে কোন উপায়ে ১২ সেপ্টেম্বর শতভাগ স্কুল খোলা নিশ্চিতে চেষ্টা করা হচ্ছে।

টাঙ্গাইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম জানান, এখনও বন্যা কবলিত স্কুলগুলো কীভাবে খোলা যায়- এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

এছাড়া যেসব এলাকার স্কুলগুলো থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে সেগুলোতে নির্দেশনানুযায়ী ক্লাস চলবে। আগামি ১২ সেপ্টেম্বর জেলার সবগুলো বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno