আজ- ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  দুপুর ১২:৪০

দেশরত্ন শেখ হাসিনার ৭২তম জন্মদিন আজ

 

দৃষ্টি নিউজ:


বাহাত্তুরে পা দিলেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সভাপতি, দেশরত্ন, বিশ্বনেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফেলে আসা একাত্তুর বছরের অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে দিশাহারা ও বহুধাবিভক্ত দলের হাল ধরেন শেখ হাসিনা। শুরু হয় রাজনৈতিক প্রতিকূল স্রোতে তাঁর নৌকা বাওয়া। মৃত্যুশঙ্কা পায়ে ঠেলে, বহু ঝড়ঝাপটা সামলে, বিপদসংকুল সমুদ্র পেরিয়ে বারবার নৌকাকে সফলতার সঙ্গে তীরে ভিড়িয়েছেন এই কাণ্ডারি। এভাবেই তিনি হয়ে উঠেছেন দলে পরম নির্ভরতার প্রতীক। শুধু দল নয়, রাষ্ট্র পরিচালনায়ও দেখিয়েছেন বহু চমকপ্রদ সাফল্য। অর্জন করেছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, বহু পুরস্কার ও সম্মাননা। নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুননেসা মুজিবের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। মধুমতী নদী বিধৌত গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর জন্ম। সেখানেই শৈশব-কৈশোর কাটে। বাংলার মাটির নিবিড় সংস্পর্শে বেড়ে ওঠার কারণেই পরবর্তী সময়ে এ দেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে তাঁর গভীর যোগসূত্র গড়ে ওঠে। শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবনের শুরু টুঙ্গিপাড়াতেই। ১৯৫৪ সালে তিনি ঢাকায় টিকাটুলির নারী শিক্ষা মন্দিরে (শেরে বাংলা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ) ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ওই কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। কলেজ জীবন শেষ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ১৯৬৮ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় শেখ হাসিনার। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিপথগামী একদল সেনা সদস্য যখন বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে, তখন শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা জার্মানিতে ছিলেন ড. ওয়াজেদ মিয়ার বাসায়। মা-বাবাসহ স্বজনদের হারিয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার এক অবর্ণনীয় দুঃসহ জীবন শুরু হয়। নানা দেশ ঘুরে তাঁদের আশ্রয় মেলে প্রতিবেশী দেশ ভারতে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে যায় আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি হয়ে পড়ে বিভক্ত। এই বিভক্ত আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ওই বছরই তিনি তৎকালীন শাসকদের বিরোধিতাকে উপেক্ষা করে দেশে ফিরে আসেন। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে আওয়ামী লীগের মতো একটি প্রাচীন দলের হাল ধরেন শেখ হাসিনা। বিরূপ রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে তাঁকে দলের অভ্যন্তরেও নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়। আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ অনেক নেতা সে সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ভালোভাবে নেননি। একদিকে সামরিক স্বৈরাচার শাসককে মোকাবেলা, অন্যদিকে দলে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, এ দুটো চ্যালেঞ্জই একসঙ্গে তাঁকে সামাল দিতে হয়েছে।
নিজের বিচক্ষণতা, ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার বলে শেখ হাসিনা ধীরে ধীরে দলের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেন। শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। মাঝে একবার বিরতি দিয়ে ২০০৯ সালে আবারও প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। তখন থেকে এখন পর্যন্ত টানা তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে। এ দেশে এখন পর্যন্ত তিনিই সবচেয়ে বেশি সময় ধরে এই পদে রয়েছেন। তবে রাজনীতি ও রাষ্ট্রপরিচালনার এই অঙ্গনটি শেখ হাসিনার জন্য কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। বারবার তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। ১৯ বার তিনি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বর্বরোচিত হামলাটি হয় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। ওই দিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ও গুলি চালানো হয়। দলের নেতা ও দেহরক্ষীরা সেদিন মানবঢাল তৈরি করে তাঁকে রক্ষা করলেও মারা যান ১৯ জন। পঙ্গুত্ব বরণ করেন অসংখ্য নেতাকর্মী। তবে এসব প্রতিবন্ধকতা দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবেলা করে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলাসহ সব শাখা এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ী সহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ সভাপতি, দেশরত্ন, বিশ্বনেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাহাত্তুরদম জন্মদিন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা সভাসহ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সমবেদনা জ্ঞাপন করে মানবিক কর্মসূচি ইত্যাদি।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno