আজ- ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার  দুপুর ১২:১৩

ধনবাড়ীতে খামারিদের প্রণোদনায় অনিয়মের প্রতিবাদে প্রাণিসম্পদ অফিস ঘেরাও

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে করোনাকালীন সংকটে প্রাণিসম্পাদ ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্পের(এলডিডিপি) আওতায় সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস ঘেরাও করে খামারিরা।

সোমবার(১২ জুলাই) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপজেলার কয়েক হাজার খামারি উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস ঘেরাও করে রাখে।

পরে খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশীদ হীরা, পৌর মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকল, থানার ওসি মো. চান মিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত সাপেক্ষে আগামি সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে খামারিরা ঘেরাও কর্মসূচি তুলে নেয়।

এর আগে একই দাবিতে খামারিরা উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন এবং বিক্ষোভ মিছিল করে।

প্রাণি সম্পদ অফিস ঘেরাও ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেব-উন-নাহার লীনা বকল, ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, আকবর হোসেন, সুরুজ্জামান মিন্টু প্রমুখ।

কর্মসূচি চলাকালে বানিয়াজান ইউনিয়নের খামারি আ. করিম ও ইদ্রিস আলী জানান, প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র ও খামারে গরুর ছবি সহ খরচ বাবদ এক হাজার করে টাকা প্রাণিসম্পদ অফিসের লোক এসে নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে অফিসে যোগাযোগ করা হলে আরও চার হাজার টাকা না দিলে চূড়ান্ত তালিকায় নাম উঠবে না বলে জানানো হয়। টাকা পাওয়ার পর অবশিষ্ট টাকা দেওয়ার কথা বলা হলেও তাদেরকে প্রণোদনার টাকা দেওয়া হয়নি।

বলিভদ্র ইউনিয়নের ইসপিঞ্জারপুর গ্রামের খামারি রেনুকা ইয়াসমিন ও বাঐজানের খালেদা বেগমের কাছ থেকে দুই হাজার করে টাকা নিয়ে তাদেরকেও প্রণোদনা দেওয়া হয়নি।

এরকম মুশুদ্দি ইউনিনের খামারি বদিয়ার, সুলাইমান, আব্দুর রাজ্জাক, আজিজুল হক, জিন্না, ছোহরাব আলী, ফটিকসহ উপজেলার প্রকৃত শ’ শ’ খামারি ওই প্রণোদনার টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

অপরদিকে, প্রণোদনার টাকার অর্ধেক ছেড়ে দেওয়ার শর্তে খামারি না হয়েও শ’ শ’ ব্যক্তি তালিকাভুক্ত হয়ে প্রণোদনার টাকা টাকা পেয়েছেন।

মুশুদ্দি দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারি সমবায় সমিতির সভাপতি ছোহরাব আলী জানান, খামারি না হয়ে অনেকেই প্রণোদনার টাকা পেলেও প্রকৃত খামারিরা রহস্যজনক কারণে প্রণোদনা পান নাই।

এ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ে এলএসপি’র সদস্যদের মাধ্যমে তালিকা করে উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার খামরিকে প্রণোদনার আওয়তায় আনা হয়েছে।

গরু নেই এমন ব্যক্তি কিভাবে খামারি হয় এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি জানান, দেড় হাজার লোকের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয়নি।

মাঠ পর্যায় থেকে এলএসপির মাধ্যমে যে তালিকা এসেছে সে মোতাবেক হেড অফিস বিকাশ ও নগদে প্রণোদনা প্রদান করেছে।

ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশীদ হীরা জানান, উপজেলার কোন ইউপি চেয়ারম্যানকে এ প্রণোদনার বিষয়ে জানানো হয়নি।

এমন জনগুরুত্বপূর্ণকাজে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত না করায় প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এরকম অনিয়ম-দুর্নীতি করার সাহস পেয়েছে। আগামি সাত দিনের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রকাশ, করোনাকালীন সংকটে প্রাণিসম্পাদ ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্পের(এলডিডিপি) আওতায় ধনবাড়ী উপজেলার এক হাজার ৫২৬ জন গাভী খামারির অনুকূলে খামারি প্রতি ১০ হাজার টাকা থেকে ২২ হাজার ৫০০ টাকা হারে প্রায় আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে প্রকৃত খামারিরা প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

অপরদিকে, খামারি না হয়েও নির্দিষ্ট অংকের টাকা দেওয়ার শর্তে প্রাণিসম্পদ অফিসের এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজসে স্থানীয় দালাল ও এলএসপি (লাইভ স্টক সার্ভিস প্রোভাইটর) এর মাধ্যমে ভুয়া নাম ও মোবাইল নম্বর তালিকাভুক্ত করে প্রণোদনার টাকা হরিলুট করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno