আজ- ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার  বিকাল ৫:৪০

নাগরপুরে ধর্মীয় সম্প্রীতির নিদর্শন :: পাশাপাশি মসজিদ-মন্দির

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের নাগরপুরের চৌধুরীবাড়িতে পাশাপাশি মসজিদ-মন্দির প্রতিষ্ঠা ও আচারানুষ্ঠান এবং রীতি-নীতি পালনের মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অমীয় নিদর্শন স্থাপন করেছে এলাকাবাসী।

প্রায় ৮৯ বছর আগে চৌধুরীবাড়িতে উঝা ঠাকুর কেন্দ্রীয় দুর্গা মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। মন্দিরটি প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর পর পাশেই প্রতিষ্ঠা করা হয় চৌধুরীবাড়ি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ।

দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরে পাশাপাশি মসজিদ-মন্দিরে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করা হচ্ছে। একইস্থানে মসজিদ ও মন্দির নিয়ে কখনও কারো কোনো সমস্যা হয়নি। বরং সবাই মিলে-মিশে নিজেদের ধর্ম পালন করছেন।


সরেজমনি নাগরপুর চৌধুরীবাড়ি কেন্দ্রীয় মসজিদ ও দুর্গা মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার(১৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় পূজা মণ্ডপে ঊলুধ্বনি, কাঁসর ঘণ্টা ও গান-বাজনা পুরোদমে চলছে। প্রতিমা দেখতে দর্শনার্থীরা আসা-যাওয়া করছেন। প্রতিমায় অঞ্জলী দিচ্ছেন।

সেখানে থাকতে থাকতেই দুপুর সোয়া একটায় থেমে গেল পূজার কার্যক্রম। এরপরই বলা হলো আজান এবং নামাজের পর আবার মন্দিরের মাইক, ঢাক-ঢোলসহ যাবতীয় কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর পাশের মসজিদ থেকে ভেসে এলো আজানের সুর।

নামাজ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর আবার মন্দিরের মাইক, ঢাক-ঢোলসহ ঊলুধ্বনি শুরু হল।


উঝা ঠাকুর কেন্দ্রীয় দুর্গা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক লিটন কুমার সাহা পোদ্দার জানান, ৮৯ বছর আগে বাংলা ১৩৩৯ সালে এ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ মন্দিরের নামকরণ করা হয় নাগরপুর চৌধুরীবাড়ি উঝা ঠাকুর কেন্দ্রীয় দুর্গা মন্দির।

মন্দির প্রতিষ্ঠার প্রায় ৪০ বছর পর বাংলা ১৩৭৯ সালের দিকে এখানকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের পাশেই প্রতিষ্ঠা করেন নাগরপুর চৌধুরীবাড়ি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। এরপর থেকে পাশাপাশি মসজিদ-মন্দিরে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কার্যক্রম চলে আসছে।


তিনি জানান, আজানের সময় থেকে নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক, ঢাক-ঢোল, ঊলুধ্বনি বন্ধ থাকে। নামাজ শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম আবার শুরু করা হয়। এখানকার মানুষ শান্তিপ্রিয়, দুই ধর্মের মানুষদের মধ্যে কোনো দিন কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি।

নাগরপুর চৌধুরীবাড়ি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা খন্দকার কামরুল হুদা রওশন জানান, ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের পর মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। চার দশক ধরে পাশাপাশি চলছে নামাজ ও পূজা-অর্চনা।

কিন্তু মসজিদ নির্মাণের প্রায় ৩৯ বছর আগে মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। নামাজের সময় মন্দিরের ঢাক-ঢোলসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।

কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই চার দশক ধরে এ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ধর্মীয় উৎসব পালন করছেন তারা। এখানকার দুই ধর্মের মানুষ সকল কাজেই একে অপরকে সব সময় সহযোগিতা করে থাকেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno