নাচ দেখে আকৃষ্ট হয়ে শিশু তিশাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে বখাটেরা

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার তিশা আক্তার নামে এক শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে তিন বখাটেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। টাঙ্গাইল পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের স্বপন মন্ডলের ছেলে গোবিন্দ মন্ডল(১৯), আনন্দ মন্ডলের ছেলে চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল(১৭) ও লালিত সরকারের ছেলে বিজয় সরকার(১৬)।

পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন জানান, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের মো. আবু ভূইয়ার মেয়ে তিশা আক্তার। বয়স ৮ বছর- স্থানীয় একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। নাচে খুবই পটিয়সী- স্থানীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচের জন্য তার ডাক আসে। তার নাচ দেখে প্রতিবেশি গোবিন্দ মন্ডল, চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল ও বিজয় সরকার আকৃষ্ট হয়।

বিকৃত যৌন লালসা চরিতার্থে তারা তিশাকে বিভিন্ন সময় নানা কায়দায় উত্যক্ত করতেন। দুই মাস আগে তিশা আক্তার তার মা সম্পা বেগমের কাছে বিষয়টি খুলে বলে।

কিন্তু অভিযুক্তরা বখাটে ও স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় সম্পা বেগম তাদের তেমন কিছু বলেননি। তারা তিশার মায়ের গতিবিধি অনুসরন করতেন। এক পর্যায়ে অভিযুক্তরা জানতে পারেন- তিশাকে বাড়িতে একা রেখে তার মা স্কুল ছুটির পর ছেলে শুভকে এগিয়ে আনতে যান।

পুলিশ সুপার জানান, গত ২৬ মে সকালে শুভকে নিয়ে তার মা পাশের শহীদ ক্যাডেট একাডেমিতে নিয়ে গেলে অভিযুক্তরা তিশার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং তিশাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তার মায়ের ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। তার মা বাড়িতে এসে তিশাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর(রেফার্ড) করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, তিশাকে বহনকৃত অ্যাম্বুলেন্স গাজীপুর পর্যন্ত গিয়ে নষ্ট হলে তাকে সাভার এনাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ মে তিশা আক্তারের মৃত্যু হয়।

ওই দিনই বাসাইল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলার পর লাশটির ময়না তদন্ত করা হয়। ৪ জুন ময়না তদন্তের রির্পোটে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। ওই দিনই তিশার বাবা আবু ভূইয়া বাসাইল থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।

মামলাটির গুরুত্ব বিবেচনায় পিবিআই স্বউদ্যোগে তদন্তের উদ্যোগ নেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার আশরাফুল কবির তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেন।

পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন বলেন, আসামিরা স্বেচ্ছায় নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। জবানবন্দি না দিলে মামলা তদন্তের স্বার্থে আদালতের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে