আজ- ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  সকাল ৬:২৫

নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ

 

দৃষ্টি নিউজ:

dristy-pic-fo-29
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার(৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে রোববার(৩০ অক্টোবর) নাসিরনগরে প্রায় ১৫টি মন্দির ও ৬০-৭০টি হিন্দু বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয় লোকজন, প্রশাসন ও পুলিশ বলছে, উপজেলা সদরের মধ্যপাড়ার অমর দেবের রান্নাঘর, দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা ফুলকিশোরের গোয়ালঘর, একই এলাকার মৃণাল কান্তির রান্নাঘর ও জ্বালানি কাঠ রাখার ঘরসহ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
রাতেই স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় আগুন নেভানো হয়। তবে কয়েকটি রান্নাঘর ও গোয়ালঘর পুরোপুরি পুড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।নাসিরনগরে হিন্দু বাড়িঘরে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অগ্নিসংযোগের পর ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
শুক্রবার(৪ নভেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমেদ। তাঁর ভাষ্য, ৮ থেকে ১০টি বসতঘর ও গোয়ালঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। সেগুলো ‘পরিত্যক্ত’ বলে তিনি জানান।
সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল করিমের মতে, পাঁচটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। জড়িত ব্যক্তিদের খোঁজ করছে পুলিশ। অপরাধীরা কেউ ছাড় পাবে না বলে তিনি জানান।dristy-pic-fo-30
ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে গত রোববার নাসিরনগরে প্রায় ১৫টি মন্দির ও ৬০-৭০টি হিন্দু বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দায়ের করা দুটি মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা দুই হাজার ৪০০ জন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগে শনিবার গ্রেপ্তার হওয়া রসরাজ দাসের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
হামলার চার দিন পর বৃহস্পতিবার(৩ নভেম্বর) দুপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর আসনের সাংসদ ছায়েদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। তিনি উপজেলা সদরের চারটি সর্বজনীন মন্দির, কয়েকটি পারিবারিক মন্দির ও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শন করেন। তিনি দাবি করেন, সব স্বাভাবিক আছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা সদরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ছিল সুপরিকল্পিত। একটি চক্রান্তকারী গোষ্ঠী দেশে অরাজকতা তৈরির জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর দূরদর্শিতার অভাব, উদাসীনতা এবং অবহেলা এ হামলার সুযোগ করে দিয়েছে।
অপরদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ মিলনায়তনসহ পুরো শহরে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর ১০ মাসেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনায় দায়ের করা ১৬টি মামলার কোনোটিরই অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ। এর মধ্যেই আবার ঘটে গেল নাসিরনগরে মন্দির ও হিন্দু বাড়িঘরে হামলা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সাহিত্য একাডেমির সভাপতি ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জেলা শাখার সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অতীতের নাশকতা ও হামলার বিচার হলে নাসিরনগরে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতো না। বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, মূল অপরাধীদের চিহ্নিত না করে এসব মামলায় শুধুই বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার আর হয়রানি করা হয়েছে।
তুচ্ছ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যুর জের ধরে গত ১১ ও ১২ জানুয়ারি শহরজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালায় মাদ্রাসার ছাত্ররা। তারা রেলস্টেশন, আওয়ামী লীগের কার্যালয়, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গনসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর চালায়।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno