আজ- ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার  বিকাল ৩:৫৪

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর ৪৭ ভাগ সম্পন্ন ॥ কাজ করছে দেশি-বিদেশি সহস্রাধিক শ্রমিক

 

দৃষ্টি নিউজ:

ট্রান্স এশিয়ান রেলরুটের অন্যতম ও দেশের বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেলসেতুর ৪৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। যমুনা নদীর উপর বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিতব্য ওই রেলসেতু নির্মাণে এক হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক দিনরাত কাজ করছে।

কাজের গতি অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২৪ সালের অগাস্টে সেতুটির উদ্বোধন করা সম্ভব হবে। বৃহস্পতিবার(১০ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রকল্প পরিচালক(পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন।


তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে চলমান রেল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পারাপারের সময় গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ব্রডগেজ পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে ৪৮টি রেল বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু ব্যবহার করে চলাচল করলেও ২০২৪ সালে যখন স্বাতন্ত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেল সেতুর উদ্বোধন করা হবে তখন দ্বিগুণ অর্র্থাৎ ৮৮টি ট্রেন চলাচল করবে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় পণ্যবাহী ট্রেন থাকবে। ফলে উত্তরবঙ্গ থেকে রাজধানী ঢাকায় সহজে পণ্য পরিবহন করা যাবে।


প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে রেলসেতুর ৬টি স্প্যানের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি ৪৪ স্প্যানের কাজ চলমান রয়েছে।


সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ মেগা প্রকল্পে এখন তেমন কোন চ্যালেঞ্জ নেই। সবকাজ সঠিকভাবেই সম্পন্ন হচ্ছে। এ প্রকল্পে জাইকা জাপানি মূদ্রা ইয়ানের মাধ্যমে লেনদেন হচ্ছে। সেজন্য চলমান ডলারের কোন সংকট পড়বে না বা এখনই ব্যয় বাড়ার সম্ভবনা নেই।


রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানাগেছে, ঢাকা ও উত্তরবঙ্গের ২২টি জেলার সঙ্গে রেল চলাচল সহজ করার এ মেগা প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। যার মধ্যে ৬ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা অর্থ ব্যয় হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ৩৬ শতাংশ।


প্রকল্প সূত্র জানায়, নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেলওয়ে সেতু দিয়ে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেনও চালানোর উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের এক বছর) সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।


২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নেওয়া প্রকল্পে চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি সাত লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেশের বৃহত্তর এ রেল সেতু নির্মাণে সাত হাজার ৭২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। প্রথম দফা ডিপিপি সংশোধনের পর সেতুর নির্মাণব্যয় ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।


বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার এই রেলসেতুর দুইপাশে ০.০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৭ দশমিক ৬শ ৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেণ্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে।


একইসাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেল সেতুর পাশাপাশি প্রকল্পের অধীনে ৩টি স্টেশন বিল্ডিং, ৩ টি প্ল্যাটফর্ম ও শেড, ৩টি লেভেল ক্রসিং গেট ও ৬ টি কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। রেল সেতুর পূর্বপ্রান্তে লুপ লাইনসহ প্রায় সাড়ে ১৩ কিলোমিটার, ১৩টি কালভার্ট ও ২টি সংযোগ স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে।


প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরকালে সে দেশের সরকার এ প্রকল্পে অর্থায়নে সম্মত হয়। ২০১৭ সালের মার্চে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন শেষ হয়।

প্রকল্প পরিদর্শনকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার, বাংলাদেশ রেলওয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা শরিফ আলম প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno