আজ- ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  রাত ৩:০৩

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি শূণ্য, ক্লাস হচ্ছেনা ॥ সেশন জটের আশঙ্কা

 

দৃষ্টি নিউজ:

logo_largeটাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ আড়াই মাস যাবত ভিসি না থাকায় সেশন জটের আশঙ্কা তীব্রতর হচ্ছে। এছাড়া প্রো-ভাইস চান্সেলর ও ট্রেজারারের পদ কয়েক বছর যাবৎ শূন্য থাকায় ভিসি’র অবর্তমানে দায়িত্ব পালনের কেউ নেই। ১৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. সিরাজুল ইসলামের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সম্পূর্ণরূপে অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির চেইন অব কমান্ড সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। ছাত্রদের আন্দোলনের বিষয় সুরাহা না হওয়ায় শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন অব্যাহত রাখায় কোন ক্লাস হচ্ছেনা।
জানাগেছে, ভিসি নিয়োগে বিলম্ব হওয়ায় পরীক্ষার ফল প্রকাশ, মূল সনদপত্র উত্তোলন, অর্থ সংক্রান্ত অনুমোদন, একাডেমিক সভা, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, বিদেশ গমন, বিভিন্ন সভা-সেমিনার আয়োজনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ বন্ধ রয়েছে। বেশি বিপাকে পড়েছেন শিক্ষা ও গবেষণার কাজে দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য আবেদন করা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গত ৫ মে বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভের সময়ে শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও অতিথি ভবনে ভাংচুুরের ঘটনায় শিক্ষকরা সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে। ভিসি না থাকায় ওই ঘটনার এখনও কোন সুরাহা না হওয়ায় শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যাননি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও হলেও ক্যাম্পাস প্রাণ ফিরে পায়নি। শিক্ষকদের ক্লাস বর্জন ও ভিসি না থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা এখনো ক্যাম্পাসে আসেনি। যারা এসেছেন তাদের মধ্যে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভিসি স্যারের স্বাক্ষর ব্যতীত পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না- এটা তো শিক্ষকদের জানা ছিল। তবে কেন ভিসি স্যার চলে যাওয়ার আগে শিক্ষকরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেননি? তাছাড়া এদের অনেকেই দেশের বাইরে বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাবৃত্তি পেয়েছেন। অনেক শিক্ষার্থী প্রতিদিনই পরীক্ষার ফলপ্রকাশ ও মূল সনদের জন্য এসে ফিরে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা আরো জানান, ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে মূল সনদ সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা প্রদানে ব্যর্থ হলে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ হাত ছাড়া হয়ে যাবে। এই আশঙ্কায় প্রত্যেকেই তারা প্রচন্ড হতাশায় ভুগছেন, এমনকি কথা বলতে গিয়ে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। অধিকাংশ শিক্ষার্থী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে প্রায় এক বছরের সেশনজটে পড়েছি। এমতাবস্থায় অতিদ্রুত যদি পরীক্ষা শুরু না হয় তবে নিশ্চিতভাবেই আবারও সেশনজটে পড়তে যাচ্ছি। এতগুলো শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ারের কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি শূণ্যপদ পুরণের জোর দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান, ভাইস চ্যান্সেলর হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাবক। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় আড়াই মাস যাবত ভিসি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ধরনের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা যাচ্ছেনা এবং পরীক্ষা নেয়াও যাচ্ছেনা। অতিদ্রুত যদি ভিসি নিয়োগ না করা হয় তরে আমরা কোন ভাবেই সেশনজট এড়াতে পারব না। আমরা মহামান্য চ্যান্সেলরের কাছে দ্রুত একজন ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ প্রদানের দাবি জানাচ্ছি। তারা আরও জানান, গত ১১জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সংকট তুলে ধরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। এরআগে ১২জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ দ্রুত ভিসি নিয়োগের দাবিতে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে একটি প্রেস কনফারেন্সও করেছেন। কিন্তু অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি।
প্রকাশ, গত ৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিনের চার বছর মেয়াদ শেষ হয়। এরপর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদ শূণ্য রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ভাইস চ্যান্সেলর ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এই গুরুত্বপূর্ণ পদ দুটি নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য (রাষ্ট্রপতি)।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno