দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে যৌতুক দাবি ও পরকীয়ায়র কারণে প্রসূতি ফাতেমা আক্তার লিয়াকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। ফাতেমা বর্তমানে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছে।
টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, প্রসূতি ফাতেমা আক্তার লিয়াকে নির্যাতনের ঘটনার মামলায় সোমবার(১২ ডিসেম্বর) তার স্বামী শফিকুল ইসলাম, শ্বশুর মো. আব্দুল হামিদ ও শাশুড়ি মোছা. রোকেয়া বেগম টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চীফ জুডিয়িশাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করে। আদালতের বিচারক হামিদুল আলম জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরকে জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
প্রকাশ, টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের চাঁন আমুলা গ্রামের শফিকুল ইসলামের সাথে ফাতেমা আক্তার লিয়ার (২৫) বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে শফিকুল ইসলামকে ১ লাখ টাকা ও মেয়ের গহনা বাবদ ২ ভরি স্বর্ণলঙ্কার প্রদান করেন তোফাজ্জল হোসেন। বিয়ের পর কিছুদিন ভালোই চলতে থাকে তাদের দাম্পত্য জীবন। স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে নানা অজুহাতে অত্যাচার চালাতে থাকে তার উপর। দাবি করতে থাকে মোটা অঙ্কের যৌতুক। ফাতেমা ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অত্যাচারের খড়গ নেমে আসে তার উপর। প্রতিনিয়ত চলতে থাকে নির্মম শারীরিক অত্যাচার। গত মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে স্বামী, শাশুড়ি ও শ্বশুর ফাতেমার ঘরে ঢুকে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। পরে শ্বশুর-শাশুড়ি হাত-পা ধরে রাখে আর স্বামী শফিকুল ইসলাম দা এনে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এসময় ফাতেমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
সারা শরীরে শুধু আঘাতের চিহ্ন। দুই সন্তানের জননী ফাতেমার কোলে মাত্র ১২ দিন আগে ফুটফুটে ছেলে শিশু এসেছে। ১২ দিনের সন্তান তার আহত মায়ের পাশে শুয়ে হাত-পা নাড়াচ্ছে। মাথা ও ঘাড়ে বেশ কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়েছে ফাতেমার। তার অবস্থা অঅগের তুলনায় অনেকটা ভাল বলে জানান চিকিৎসকরা।
এ ঘটনা ফাতেমার বাবা তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে স্বামী শফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে শাশুড়ি মোছা. রোকেয়া বেগম ও শ্বশুর মো. আব্দুল হামিদের বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।