আজ- ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার  রাত ১১:০৬

যমুনায় কমছে পানি, গিলছে বাড়ি ॥ বাড়ছে রোগ-বালাই, পুড়ছে কপাল

 

দৃষ্টি নিউজ:

dristy.tv-56
যমুনার নদীর পানি কমতে শুরু করার সাথে সাথে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে টাঙ্গাইলের সাত  উপজেলায়। টাঙ্গাইল সদর, ভূঞাপুর, মির্জাপুর, কালিহাতী, দেলদুয়ার, গোপালপুর ও নাগরপুর উপজেলায় যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি কমার সাথে সাথে ভাঙন শুরু হয়েছে। এ সাতটি উপজেলায় ভয়াবহ ভাঙনে শতশত বাড়িঘরসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা যমুনা ও ধলেশ্বরীর পেটে চলে যাওয়ায় নদীপাড়ের মানুষের কপাল পুড়ছে।
গত কয়েক দিনের ভাঙনে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের চরপৌলি এলাকার দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, একটি মসজিদ ও একটি মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং প্রায় দুই শতাধিক বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া মাহমুদনগর ও কাতুলী ইউনিয়নেও নদী ভাঙনের কারণে সর্বশান্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি পরিবার। আর ওই সব পরিবারের লোকজন আশ্রয় নিয়েছে অন্যের বাড়িতে। তবুও যেন যমুনার করাল গ্রাস তাদের পিছু ছাড়ছে না। তাদের আশ্রয়স্থল সেই বাড়িগুলোও এখন হুমকির মুখে। এ কারণে অনেকেই আগে থেকেই তাদের বাড়িঘর, আসবাবপত্রসহ জীবিকার একমাত্র অবলম্বন তাঁত শিল্পের যন্ত্রপাতি সড়িয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
মঙ্গলবার(১৮ জুলাই) ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মালামাল সড়িয়ে নেওয়ার জন্য ভালো কোন রাস্তা না থাকায় নদীপথে নৌকা নিয়ে ছুটছেন পরবর্তী বাসস্থানের খোঁজে। আবার কেউ কেউ বাড়ি-ঘর ও আসবাবপত্র রেখে দিয়েছেন দূরে কোথাও অন্যের বাড়িতে কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে।
কাকুয়া ইউনিয়নের চরপৌলী এলাকার স্বামী পরিত্যাক্তা আখলিমা। গত বছর তার শেষসম্বলটুকু যমুনার পেটে চলে যায়। সেই সাথে তার কপালটাই পুড়তে শুরু করে। পরে তিনি আশ্রয় নেয় জয়নাল আবেদিন নামে এক তাঁত মালিকের বাড়িতে। কিন্তু গত কয়েকদিনের করাল থাবায় জয়নাল আবেদিনের বাড়িটিও হুমকির মুখে। ফলে বাড়ির মালিক সবকিছু ভেঙ্গে প্রায় দুই কিলোমিটর দূরে আরেক জায়গায় ঘর তৈরির কাজ শুরু করেছেন।
একই এলাকার নুরুন্নাহার, বাছাতন বেগম, আম্বিয়া আক্তার জানান, গত বছর থেকে এবারের ভাঙনের তীব্রতা অনেক বেশি। গত তিনদিনের ভাঙনে তাদের বাড়ি-ঘর সব নদীর পেটে চলে গেছে। আশ্রয় নিয়েছেন একই এলাকার হাছান আলীর বাড়িতে। তারা অভিযোগ করে বলেন, তাদের এ দুরাবস্থার সময় এলাকার কোন জনপ্রতিনিধি বা সরকারি কর্মকর্তারা কোন খোঁজ নিতে আসেনি। একই সাথে কোন প্রকার সরকারি সহযোগিতাও তারা পায়নি।
ইতিমধ্যেই সদর উপজেলার চরপৌলি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিন্টু মেমেরারিয়ায়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ মসজিদ, মাদ্রাসা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে চরপৌলির বিশাল একটি হাট ও বাজার। এরই মধ্যে বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী তাদের প্রতিষ্ঠান অনত্র সরিযে ফেলেছে। মো. হজরত আলী নামে এক মুদি দোকানি জানান, গতবারের তুলনায় এবার বেশি ভাঙন শুরু হয়েছে। অতিদ্রুত ভাঙন রোধ করা না গেলে পুরো ইউনিয়ন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাদের মত সাধারণ মানুষের যাওয়ার কোন জায়গা থাকবে না।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান সিরাজ জানান, টাঙ্গাইল সদরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে পানি কমতে থাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। উর্র্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। অতিদ্রুতই ভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno