আজ- ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  বিকাল ৪:০৭

রাত পোহালেই কালিহাতীতে ভোট ॥ সোহেল হাজারি এমপি হচ্ছেন!

 

দৃষ্টি নিউজ:

dristy-dir-49প্রবীণ রাজনীতিক সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর পদত্যাগে শূন্য টাঙ্গাইল-৪(কালিহাতী) আসনে উপ-নির্বাচনের ভোট গ্রহন রাত পোহালেই। রোববার(২৯ জানুয়ারি) মধ্য রাতে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) ভোট গ্রহন অনুষ্ঠানে জেলা নির্বাচন কমিশন সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
সোমবার(৩০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কালিহাতী উপজেলা হল রুম থেকে ভোটকেন্দ্র গুলোতে নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। বিভিন্ন কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা তা বুঝে নেন। পরে আইনশৃঙ্খলার সহায়তায় এসব মালামাল কেন্দ্রগুলোতে নেয়া হয়। মঙ্গলবার(৩১ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারি (নৌকা), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এর প্রার্থী আতাউর রহমান খান(টেলিভিশন) ও ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির(এনপিপি) প্রার্থী ইমরুল কায়েস (আম) এই তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শেষ পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণার নির্বাচনের মাঠে ছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারি ও এনপিপি প্রর্থী ইমরুল কায়েস। অপর প্রার্থী বিএনএফ-এর আতাউর রহমান খান ভোট গ্রহনের তারিখ পরিবর্তনের আবেদন নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করেন। সোমবার(৩০ জানুয়ারি) তার সময়ের আবেদন নাকচ করে দেয়া হয় বলে জানাগেছে।
এদিকে, অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হচ্ছে আ’লীগ প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারি এক প্রকার বিনা বাধায় এমপি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন! হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারিই বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে।
এছাড়া এ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী অঅ’লীগ প্রার্থী ব্যতিত যে দুই প্রার্থী রয়েছেন তাদের বাড়ি কালিহাতীতে নয়। বলা চলে তারা এখানে উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও এই দুই প্রার্থীর কাউকেই ভালো মতো চিনেন না ভোটাররা। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারির বাড়ি কালিহাতীতে। ছাত্রাবস্থা থেকেই তিনি আওয়ামী রাজনীতিতে অগ্রসরমান পুরুষ। কালিহাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন। এরফলে স্থানীয়রা তাকে আত্নীয়র মতোই চিনেন-জানেন। এছাড়া দলীয় প্রতীকের কারণেও ভোটের পাল্লাটা বেশ ভারী হবে বলেই অভিমত উপজেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাধারণ ভোটারদের।
কালিহাতী সদরের দক্ষিণ বেতডোবার দলিল লেখক রফিকুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করেই শুনলাম আগামী ৩১ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই নির্বাচনে কোনো আমেজ নেই। নির্বাচনে সোহেল হাজারির প্রতিদ্বন্দ্বী যে দুই প্রার্থী আছেন আমরা তাকে কখনো দেখি নাই, চিনিও না। তাদের সর্ম্পকে আমাদের কোনো ধারণাই নেই। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে আমরা চিনি। তিনি আগে থেকেই রাজনীতি করে আসছেন। ধরতে গেলে এই উপনির্বাচন একতরফা হবে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীই নির্বাচনে জয়লাভ করবেন। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৪ মাস নির্বাচন না হওয়ায় উন্নয়ন কাজে পিছিয়ে পরেছে কালিহাতী। এছাড়াও আটকে রয়েছে এমপি কোটার অনেক উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ। নির্বাচনে যিনিই জয়লাভ করুন না কেন ওই বিজয়ী প্রার্থী যেন উপজেলার উন্নয়ন কাজ করেন- এটাই দাবি কালিহাতীবাসীর। এসময় তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে কারচুপি হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই। কেননা নির্বাচনই হচ্ছে একতরফা, সেহেতু এ নির্বাচনে কেন কারচুপি করবেন? এই একতরফা নির্বাচনের ফলে ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা কম হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
উপজেলার মগড়া গ্রামের বাসিন্দা বিষ্ণু পাল বলেন, নির্বাচনে যদি কাদের সিদ্দিকী বা বিএনপির কোনো প্রার্থী থাকতো তাহলে ভোটের আমেজ থাকতো। তখন নির্বাচনে লড়াই জমজমাট হতো এবং কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলতো না। তখন নির্বাচনের মাঠ উত্তাপ থাকতো। সরগরম থাকতো নির্বাচনী এলাকা।
এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজানুর রহমান মজনু বলেন, কাদের সিদ্দিকী থাকলে নির্বাচন ‘কনটেস্ট’ হতো। কিন্তু কাদের সিদ্দিকী জয় লাভ করতে পারতো না। আওয়ামী লীগ প্রার্থী যেভাবে প্রচার-প্রচারণা, সভা-সেমিনার ও পোস্টার লাগাচ্ছেন, কিন্তু তার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে আমরা এখন পর্যন্ত এসব কোনো কিছুই করতে দেখিনি। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রয়েছেন এগিয়ে।
তিনি আরও বলেন, এ উপ-নির্বাচনের আসন শূন্য থাকায় অনেক দিন ধরে কালিহাতীর এমপি কোটায় তেমন কোনো উন্নয়নই হয়নি। আমরা খুশি যে আগামীকাল(মঙ্গলবার) এ উপজেলায় ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। আবারো কালিহাতী উন্নয়নের ধারায় ফিরবে। তবে যিনি নির্বাচিত হবেন তিনি যেন দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়ন কাজ করেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
উপ-নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কালিহাতী উপজেলার দুইটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে দুই লাখ ৯০ হাজার ৫৫জন। এরমধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৪৬ হাজার ৮০০ এবং পুরুষ ভোটার এক লাখ ৪৩ হাজার ২৫৫জন। উপজেলার ১০৭টি ভোট কেন্দ্রের ৬৬১টি কক্ষে ৩১ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহন করা হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno