আজ- ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার  দুপুর ২:২২

শততম টেস্টে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়

 

দৃষ্টি স্পোর্টস:

4d5b19c7db9ce094a18e0f8e89c28bf4-58ce608174ed6
দিলরুয়ান পেরেরার বলে মুশফিকের রিভার্স সুইপ। গ্যালারির বাংলাদেশ সমর্থকেরা উল্লাসে চিৎকার করে উঠলেন। জয়ের জন্য তখন বাংলাদেশের দরকার ৪ রান। মুশফিকের সেই শট বাউন্ডারি হতে যাচ্ছে ভেবেই উল্লাস। হলো না। তবে দৌড়ে দুই রান নিলেন মুশফিক-মোসাদ্দেক। কিন্তু নাটকের তখন আরও বাকি। পরের ওভারে হেরাথের দ্বিতীয় বলে কট বিহাইন্ড হয়ে গেলেন মোসাদ্দেক। জয় তখন এত কাছে, ওই আউট গ্যালারির উচ্ছ্বাস থামাতে পারল না। দুই বল পরেই হেরাথকে স্কয়ার লেগে সুইপ করে দুই রান নিয়ে নিলেন মিরাজ। দৌড় শেষ করে তাঁর সঙ্গী মুশফিকের সে কী উচ্ছ্বাস! ৪ উইকেটে জিতেছে তাঁর দল। কলম্বোর পি সারায় শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে নিজেদের শততম টেস্ট জিতল বাংলাদেশ।
অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের পর ইতিহাসের চতুর্থ দেশ হিসেবে শততম টেস্টে জয় পেল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়, যেটি এল ১৮তম বারের চেষ্টায়।
টেস্টে বাংলাদেশ এর আগে রান তাড়া করে জিতেছে মাত্র দুবার। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে গ্রেনাডায় ২১৫ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল ৪ উইকেটে। ২০১৪ সালের অক্টোবরে মিরপুর টেস্টে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১০১ রানের লক্ষ্যটা অবশ্য তাড়া করতে নেমে ঘাম ছুটে গিয়েছিল বাংলাদেশের, জিতেছিল ৩ উইকেটে। এ জয়ের মাহাত্ম্য নিঃসন্দেহে আগের দুটিকে ছাড়িয়ে গেছে।
অথচ দিনটা শুরু হয়েছিল একটা শঙ্কা জাগিয়ে। আগের দিন অপরাজিত থাকা শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটসম্যান দিলরুয়ান পেরেরা-সুরঙ্গা লাকমলকে ফেরাতেই আরও ১৩.২ ওভার লেগে যায় বাংলাদেশের। কিন্তু তার আগেই আগের দিনের ১৩৯ লিডের সঙ্গে আরও ৫১ রান যোগ করে ফেলে শ্রীলঙ্কা। মিস ফিল্ডিংয়ে রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়েছেন পেরেরা। তবে এর আগেই পেয়ে যান নিজের চতুর্থ টেস্ট ফিফটি। পরের ওভারেই সাকিবের দ্বিতীয় বলে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন সুরঙ্গা লাকমল। নবম উইকেট জুটিতে দুজন যোগ করেছেন ৮০ রান। ৮ উইকেটে দিন শুরু করা শ্রীলঙ্কা অলআউট হলো ৩১৯ রানে। বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯১। সেটা তাড়া করতে নেমে ৮ ওভারের মধ্যেই ২২ রানে ২ উইকেট নেই বাংলাদেশের। শঙ্কা নয় তো কী!
রঙ্গনা হেরাথকে কেন ওভাবে ডাউন দ্য উইকেটে মারতে গেলেন সৌম্য সরকারই ভালো বলতে পারবেন। বাঁহাতি ওপেনারের আত্মাহুতির পর ফিরে যান ইমরুল কায়েসও। ‘বার্থ ডে বয়’ হেরাথের পরের বলেই স্লিপে গুনারত্নেকে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে ফেরেন ইমরুল।
কিন্তু শুরুর ধাক্কা সামলে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ২ উইকেটে ৩৮ রান তুলে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ। লাঞ্চের পর এসে যেন অন্য এক বাংলাদেশ! তামিম-সাব্বির খেলতে থাকেন স্বচ্ছন্দে। ৮৭ বলে টেস্টে নিজের ২২তম ফিফটিটিও পেয়ে যান তামিম। সবচেয়ে বড় কথা সাব্বির রহমানের সঙ্গে জুটি গড়ে বাংলাদেশের শততম টেস্ট জয়ের স্বপ্নটা উজ্জ্বল করে তোলেন। তবে জেতার জন্য যখন ৬০ রান দরকার, পেরেরাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান তামিম। লং অনে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেছেন চান্ডিমাল। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১৮ রান দূরে তখন বাংলাদেশ ওপেনার। ভেঙে যায় ১০৯ রানের জুটি।
তামিমকে দুর্দান্ত সঙ্গ দিচ্ছিলেন সাব্বির। কিন্তু সঙ্গী হারিয়ে তিনিও যেন অধৈর্য হয়ে গেলেন। পেরেরাকে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়লেন। মাঠের আম্পায়ার শ্রীলঙ্কানদের আবেদনে সাড়া না দিলেও রিভিউতে বাঁচতে পারেন সাব্বির।
পরপর দুই ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে আবার কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। দায়িত্বটা গিয়ে পড়ে সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান মুশফিক আর সাকিবের কাঁধে। ৪ উইকেটে ১৫৬ রান নিয়ে চা বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশ বিরতির পর এসে আবার একটা ধাক্কা খায়। সেই পেরেরার বলেই দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্লেড-অন হয়ে যান সাকিব। ২ উইকেটে ১৩১ থেকে ৫ উইকেটে ১৬২ হয়ে যায় বাংলাদেশ! পি সারার শ্রীলঙ্কান সমর্থকেরাও যেন নতুন আশায় একটু নড়েচড়ে বসলেন। টেলিভিশন পর্দায় বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের চিন্তিত মুখ! সেই মুখে আরও অন্ধকার নেমে যখন পেরেরার বলেই মুশফিককে এলবিডব্লিউ দিয়ে দেন আম্পায়ার সুন্দরম রবি। রিপ্লে নিয়ে অবশ্য বেঁচে যান মুশফিক।
শেষ পর্যন্ত মিরাজকে সঙ্গী করে সেই মুশফিক হাসি মুখেই মাঠ ছাড়লেন। কোচ হাথুরুসিংহের মুখে অন্ধকার সরে গিয়ে তখন আলো ঝলমলে হাসি। হাসি বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে, হাসি পুরো বাংলাদেশের মুখে।Tamim20170319161257

জয়ের নায়ক যারা:
মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে উইনিং শট। ব্যাট ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে দৌড় দিলেন মুশফিকুর রহিম। শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শততম টেস্টটা স্মরণীয় করে রাখল বাংলাদেশ। সীমানা থেকে ছুটে আসছেন সতীর্থরা, জয়ের আলিঙ্গনে বাঁধতে হবে না মিরাজ-মুশফিককে!
১৬ তারিখ সন্ধ্যাবেলায়ও কী এমন দৃশ্য দেখার চিন্তা মাথায় আনতে পেরেছিলেন কেউ? ৬ রানের মধ্যে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন তিনজন। দিনের আলো ফুরিয়ে আসার আগে সাকিব আল হাসানের পাগলাটে ব্যাটিংটা তো ভয়ই ধরিয়ে দিয়েছিল। লিড নেওয়া তো দূরের কথা তৃতীয় দিনের সকালে কতক্ষণ টিকতে পারে বাংলাদেশ সেটা নিয়েই বরং বাজি ধরতে চেয়েছেন অনেকে। সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে মুশফিকের দল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ পেয়ে গেছে টেস্টে প্রথম জয়। যে জয় সবার মিলিত পারফরম্যান্সেরই ফল। তবে আলাদা করে কয়েকজনের কথা তো বলতেই হয়-
তামিম ইকবাল (১৩১ রান):
প্রথম ইনিংসে ভাগ্যের সহায়তায় ৪৯ করেছিলেন। চোখ জুড়ানো ইনিংস না হলেও দল একটা ভিত্তি পেয়েছিল সে ইনিংসে। তবে আজ শেষ দিনে দলের বড্ড প্রয়োজনের মুহূর্তে ঠিকই তামিম ইকবাল দেখা দিলেন নিজের রূপে। লক্ষ্যটা ছোট হলে খোলসে না ঢুকে ইতিবাচক খেলার কথা শুনিয়েছেন অনেকেই। সেটাই করেছেন, প্রথম থেকেই বুঝিয়ে দিয়েছেন রঙ্গনা হেরাথ কিংবা দিলরুয়ান পেরেরার স্পিন জুজুতে সিঁটিয়ে থাকবেন না। তাই বলে অযথা ঝুঁকিও নেননি, নিজের প্রথম চার মারতে হেরাথের প্রথম বাজে বল পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। ততক্ষণে ইনিংসের ১৩ ওভার পেরিয়ে গেছে, গত কিছুদিনের দুই ওপেনিং সঙ্গীকেও হারিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু অপর প্রান্তে সাহসী সাব্বির রহমানকে পেয়েই ওসব ভুলেছেন। চমৎকার দুটি ঘণ্টা উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটকে। পেরেরাকে অযথা মারতে গিয়ে ওভাবে আউট না হলে সেঞ্চুরিটা পেয়েই যেতেন তামিম!
সাকিব আল হাসান (১৩১ রান ও ৬ উইকেট):
তামিম হতে পারেন দ্বিতীয় ইনিংসের নায়ক। তবে ম্যাচের মূল চরিত্র বলুন কিংবা আলোচিত চরিত্র- সব জায়গাতেই এগিয়ে সাকিব। দ্বিতীয় দিনের শেষ আধা ঘণ্টার ওই ব্যাটিংয়ের কোনো যুক্তি খুঁজতে যাওয়ার মানে হয় না। সিরিজ সেরা হওয়ার পরও সে প্রশ্নের উত্তরটা দিতে পারেননি সাকিব নিজেই। কিন্তু তৃতীয় দিনেই সাকিব দেখিয়ে দিয়েছেন কেন তিনি সাকিব! প্রথমে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দেখে নিজেকে সামলে নিয়েছেন, ইনিংস গড়ায় মন দিয়েছেন। মুশফিকের বিদায়ের পরও হাল ছাড়েননি, অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেনকে সাহস জুগিয়েছেন, চিনিয়েছেন ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণের নানা দিক। মাত্র অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে দেশের ১০০তম টেস্টে সেঞ্চুরি করেই দায়িত্ব ভুলে যাননি। দ্বিতীয় ইনিংসেও শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের কাঁপিয়ে দিয়ে তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
এখানেও গল্পটা শেষ হয়নি। ৮ উইকেট হাতে রেখে মাত্র ৬০ রান দরকার এমন অবস্থায় হঠাৎ ঝড়, ১২ রানের মধ্যে চলে গেলেন তামিম-সাব্বির। দুর্ভাগ্যের চরম সীমায় থাকা এক অদ্ভুতরে আউট হয়ে ফেরার আগে অন্তত আজকের বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ ১৫ রান করে গেছেন।
সাব্বির রহমান (৮৩ রান):
দ্বিতীয় দিন বিকালে সৌম্য সরকার আউট হওয়ার পরই চমকে উঠলেন সবাই। সাব্বির নামছেন কেন? টেস্টে চার নম্বরে নামেন দলের সেরা ব্যাটসম্যান। যিনি দলের সব ভার নিজের কাঁধে নিয়ে দলকে টেনে নিতে পারেন ভয়ংকর বিপর্যয়ের মধ্য দিয়েও। মুশফিক কিংবা সাকিবের মতো ব্যাটসম্যান থাকা সত্ত্বেও সাব্বিরের তাই এমন মুহূর্তে নামার কারণটা বোঝা যাচ্ছিল না। কলম্বো টেস্টের পর সেটা এখন সবারই বুঝে ফেলার কথা-সাহস! প্রথম ইনিংসে ৪২ রান করেছেন, কিন্তু আজ এক রান কম করেও সে ইনিংসকে ছাড়িয়ে গেছেন। ১৯১ রানের লক্ষ্যে ২২ রানে পরপর দুই দুই বলে আউট সৌম্য-ইমরুল। শ্রীলঙ্কার মাঠে চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের আগের সব ধসের কথা মনে পড়ছিল তখন। তখনই চরিত্র, সাহস আর ক্ষমতার সর্বোচ্চটা দেখিয়ে দিয়েছেন। তামিমের সঙ্গে তাঁর ১০৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটিতেই মাঝের ওই ধসটা সামলে নিতে পারল বাংলাদেশ।
মোস্তাফিজুর রহমান (৫ উইকেট):
গত ছয় মাসে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষে। টেস্টগুলো খারাপ খেলেনি বাংলাদেশ, তবু একটা অস্বস্তি ছিলই। মোস্তাফিজ যে খেলতে পারছেন না! শ্রীলঙ্কা সফরেই দুঃখটা ঘুচল। প্রথম ইনিংসে ২ উইকেট পেলেও, সবার প্রিয় মোস্তাফিজকে পাওয়া গেল কাল। দুর্দান্ত এক ৭ ওভারের স্পেলে ৩ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড গুঁড়িয়ে দিলেন। তাতেই বড় লিড নেওয়ার স্বপ্নটা শেষ হয়েছে স্বাগতিক দলের, বাংলাদেশও দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশ।
মুশফিকুর রহিম (৭৪ রান ও ৫ ডিসমিসাল) ও মোসাদ্দেক হোসেন (৮৮ রান):
তৃতীয় দিনটা বাংলাদেশ শঙ্কা নিয়ে শুরু করেছিল। সাকিবকে নিয়ে স্থিতি এনে দিয়েছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুরই। ফিফটি করে আউট হলেও ওই ইনিংসের গুরুত্ব তাই কমছে না। দ্বিতীয় ইনিংসে সেটাও পাননি, তবু এ ইনিংসের গুরুত্বটা বোধ হয় এর চেয়েও বেশি। হঠাৎ এক ঝটকায় বিপাকে পড়েছে দল, এমন অবস্থায় মাথা ঠান্ডা রেখে ঠিকই দলকে জয় এনে দিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন।
অভিষেক ইনিংসেই ৭৫ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৩। কিন্তু নিক্তির দুই দিকে দুটি ইনিংসকে রাখুন। ধারে-ভারে পিছিয়ে থাকবে না কোনোটাই। ভাগ্যের পরিহাসে সাকিবের বিদায়ের পর দুশ্চিন্তার কালো মেঘ উড়া উড়ি করছিল আকাশে। কিন্তু অধিনায়কের সঙ্গী হয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে এসেছেন। শুধু আউটের শটেই বোঝা গেছে, এটা তাঁর অভিষেক টেস্ট। জয় থেকে ২ রান দূরে, এমন অবস্থায় আউট হয়েছেন মোসাদ্দেক। তাতেও খুব একটা অসুবিধা হয়নি, অভিষেক টেস্টের সবচেয়ে উপহার তো পেয়ে গেছেন, জয়!

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno