আজ- ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার  রাত ৮:৫৬

২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেট উপস্থাপন

 

দৃষ্টি নিউজ:

১৯৭৩-৭৪ সালের বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার পর পৃথিবীতে এত খারাপ সময় আর কখনো আসেনি। করোনাভাইরাস আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সব হিসাব ওলট-পালট করে দিয়েছে।

সংকটে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। বেড়েছে দ্রব্যমূল্য। মূল্যস্ফীতি গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। কমেছে দেশের মানুষের আয়। নতুন করে দরিদ্র হয়েছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। এই সংকট থেকে রেহাই পাওয়াই মানুষের সবচেয়ে বড় আশা।


এবারের বাজেটে করোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে তেমন আলোচনা ছিল না। ছিল দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোর দিকে বেশি মনোযোগ। কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জন্য বিশেষ কিছু করা হোক। নতুন করে যারা দরিদ্র হয়েছেন তাদের জন্য কিছু করা হোক। মানুষের হাতে নগদ টাকা আসুক।


কঠিন এই বাস্তবতায় বৃহস্পতিবার (৯ জুন) আগামী অর্থবছরের (২০২২-২৩) অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু এই বাস্তবতার প্রতিফলন পাওয়া গেল না অর্থমন্ত্রীর নতুন বাজেটে।


দেশের ১৪তম অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার চতুর্থ বাজেট। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৪তম বাজেট এটি যা দেশের ইতিহাসে একক কোনো দলের টানা ১৪ বার বাজেট দেওয়ার রেকর্ড। অর্থমন্ত্রী এবারের বাজেট বক্তৃতার প্রধান শিরোনাম দিয়েছেন ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’।


খয়েরিরঙা ব্রিফকেস হাতে দুপুর ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবনে পৌঁছান অর্থমন্ত্রী। উন্নয়নে ফেরার বাজেট পেশ শুরু করেন বেলা ৩টায়। তিনি বাজেটে মূল লক্ষ্য নিয়েছেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক ঝুঁকি থেকে দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা। অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যে অর্থনেতিক সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা রয়েছে। যদিও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ঘাটতি রয়েছে তার বাজেটে।


জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর এক বছর। অভিজ্ঞতা বলে, নির্বাচনের আগের বছরের জাতীয় বাজেটে থাকে ভোটের হাওয়া। বাজেট সাজানো হয় ভোটের বিষয়টি মাথায় রেখে। এই বাজেট প্রস্তাবনায় এবার সেই ভোটের হাওয়ার আভাস নেই। প্রকল্প অনুমোদনে সাংসদদের তদবিরও তেমন একটা নেই। কাবিখা, টিআর কর্মসূচির জন্য বেশি বেশি বরাদ্দের দাবিও কম। রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাব নিয়ে নেই দৌড়ঝাঁপ। অর্থমন্ত্রী এই বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন- মূল্যস্ফীতি ঠেকাও, ভর্তুকির চাপ সামলাও।

এছাড়া অর্থমন্ত্রী বাজেটে ৭টি খাতে অগ্রাধিকার দিয়েছেন তা হলো- (১) কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধ উদ্ভূত বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটজনিত কারণে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা ও অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি; (২) কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়ন ও সম্পন্নকরণ; (৩) অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন, সারে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রাখা; (৪) ব্যাপক কর্মসৃজন ও পলস্নী উন্নয়ন; (৫) শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ সার্বিক মানবসম্পদ উন্নয়ন; (৬) সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ এবং (৭) নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে বিনা/স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিতরণ। কিন্তু এসব অগ্রাধিকার খাত কীভাবে বাস্তবায়ন করবেন তার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তিনি বাজেটে দেননি।


আবার বিশাল আকারের বাজেট আর বড় অঙ্কের প্রবৃদ্ধির আলোচনায় আটকে থাকলেন অর্থমন্ত্রী। বিশাল বাজেটে আর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির বড় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের উচ্চাভিলাষ বজায় রেখেছেন তিনি। অথচ এবার সব পক্ষই অর্থমন্ত্রীকে উদার হস্তে ছাড় দিতে চেয়েছিলেন। অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বাজেটের আগে আলোচনা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।

সে সময় সবাই বলেছেন, এবার আর জিডিপি বা বাজেট ঘাটতির আলোচনার প্রয়োজন নেই; বরং সরকারকে ব্যয় করতে হবে। চাহিদা বাড়াতে সাধারণ মানুষের হাতে অর্থ দিতে হবে। সুতরাং ঘাটতি বাড়লেও সমস্যা নেই। কিন্তু সে পথে হাঁটলেন না অর্থমন্ত্রী। অথচ সাধারণ মানুষের কাছে অর্থ না থাকলে বাড়বে না চাহিদা। চাহিদার অভাবে শ্লথ হয়ে থাকবে অর্থনীতি।


আবার অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, বিভিন্ন খাতের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলাকে মাথায় রেখে বাজেট তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সাময়িক বড় সংকটে পড়া নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণি বিশেষত কাজ হারানো বা নতুন করে দরিদ্র হওয়া বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেটে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাব রয়েছে।


অন্যদিকে বাজেটের আয় ও ব্যয়ের প্রাক্কলনে গতানুগতিকতার খুব বেশি বাইরে যেতে পারেননি অর্থমন্ত্রী। রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে নিশ্চিত হয়েও অর্থমন্ত্রী রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন বাস্তবতার বিবেচনায় অনেক বেশি। প্রতিবারই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ধরা হয়।


এদিকে এবার বাজেট ঘাটতি একটু বেশিই ধরেছেন অর্থমন্ত্রী। ঘাটতি মেটাতে বড় অঙ্কের ঋণের চিন্তা মাথায় রেখে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা সামলাতে আগামী অর্থবছরে মোট ৬,৭৮,০৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
এ ব্যয় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৪ দশমকি ২৫ শতাংশ বেশি। আর মূল বাজেটের চেয়ে ১২ দশমকি ৩২ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।


মূল্যস্ফীতি:আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫.৬ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।


আয়ের খাত:আগামী প্রস্তাবিত বাজেটে মোট আয় (রাজস্বপ্রাপ্তি) ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। তবে অনুদানসহ ঘাটতি থাকছে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। এ ঘাটতি মোটানো হবে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নিয়ে। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি ছিল জিডিপির ৫ দশমকি ১ শতাংশ।
নতুন বাজেটে মোট রাজস্বপ্রাপ্তির এবারও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে সিংহভাগ অর্থের জোগান দেওয়া হবে।
এনবিআরের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। আর এনবিআর বহির্ভূত খাত থেকে জোগান মিলবে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে কর ব্যতীত রাজস্ব থেকে আসবে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান থেকে প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।


বাজেটের ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশ- এ দুটি উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী ও সংস্থার কাছ থেকে এবার ৯৫ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকার ঋণ নেওয়া হবে বাজেটে অর্থায়নের জন্য। ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৭ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা।


ব্যয়ের প্রধান খাত:


বাজেট বরাদ্দের বেশিরভাগ টাকা প্রধানত তিনটি খাতে খরচ করা হবে। এগুলো হলো- সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা, ঋণের সুদ পরিশোধ এবং ভর্তুকি। এই তিনটি খাতে মোট বাজেটের প্রায় ৩৫ শতাংশ চলে যাবে। সব মিলে এই তিনটি খাতে মোট ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেতন-ভাতায় ৭৬ হাজার ৪১২ কোটি, সুদ পরিশোধে ৭৩ হাজার ১৭৫ কোটি এবং ভর্তুকি বাবদ ৮৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।


অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য: ২০২২-২৩ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে বাজারের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার দেশে বিরাজমান চাহিদার প্রবৃদ্ধি কমিয়ে সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান বাড়ানোসহ সামষ্টিক অর্থনীতির অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চায়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একটা উলেস্নখযোগ্য অংশকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনা হয়েছে যাদের কাছে ডিজিটাল ব্যবস্থায় নগদ অর্থ দেওয়ার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে আগামী অর্থবছরে জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, সার ও বিদু্যৎ খাতে সরকারের যে ঘাটতি হবে তা মূল্য বাড়িয়ে ভোক্তা পর্যায়ে শতভাগ চাপিয়ে দিতে চান না অর্থমন্ত্রী।


যে জন্য প্রশংসা পাবেন অর্থমন্ত্রী: অর্থমন্ত্রী অর্থনীতির উত্তরণের জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন, নানা ধরনের পরিকল্পনার কথা বলেছেন। অর্থনীতির সামনে যত ধরনের ঝুঁকি ও আশঙ্কা রয়েছে তার কথাও বলেছেন। কী করতে চেয়েছেন এবং কী পারেননি তা-ও বলেছেন। অর্থনীতি নিয়ে আশার কথাও শুনিয়েছেন। কর ছাড় দিয়েছেন স্থানীয় শিল্পকে। উদ্যোক্তাদের দাবি মেনে করপোরেট করের হারও কমিয়েছেন। এসব পদক্ষেপ অর্থনীতিকে স্বস্তি দেবে, অর্থমন্ত্রী প্রশংসাও পাবেন।


আরও রয়েছে আগামী (২০২২-২৩) অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন চালু, বিদেশ থেকে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনা; আগামী অর্থবছরে ৮ লাখ ১০ হাজার কর্মীকে বিদেশে কর্মসংস্থানে ব্যবস্থা করা; ১৫ টাকা কেজি দরে ৫০ লাখ পরিবারকে চাল দেওয়ার ঘোষণা; টিসিবির ‘ফ্যামিলি কার্ড’ পাবে এক কোটি পরিবার; তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর লোকজনকে চাকরি দিলে বিশেষ কর ছাড়ের ব্যবস্থা; কৃষি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ও আগামী অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন চালুর সিদ্ধান্ত ঘোষণায় প্রশংসা পেতে পারেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।


আবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের নতুন বাজেট প্রস্তাবে খুশি হবেন ব্যবসায়ীরা। নানাভাবেই ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু বাজেটে নেই সাধারণ মানুষের জন্য কোনো ছাড়।


বাস্তবায়নই বড় চ্যালেঞ্জ:পরিশেষে রবীন্দ্রনাথের কবিতার লাইন দিয়ে শেষ করা যাক। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘অল্প কিছু আলো থাক/ অল্প কিছু ছায়া/ আর কিছু মায়া।’ পরিস্থিতি ঠিক এ রকমই আলো খুবই অল্প, কিন্তু ছায়া ও মায়া দুটোরই যেন অভাব। যা কিছু সুবিধা, সবই বড়দের, ছোট ও কষ্টে থাকা মানুষেরা ছায়া বা মায়া কিছুই পেল না এই বাজেট থেকে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno