আজ- বৃহস্পতিবার | ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
৩১ আশ্বিন, ১৪৩২ | রাত ৮:৩৪
১৬ অক্টোবর, ২০২৫
৩১ আশ্বিন, ১৪৩২
১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ৩১ আশ্বিন, ১৪৩২

আ.লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি ঘোষণা শিগগিরই

দৃষ্টি নিউজ:

image_1938_296451দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে শিগগিরই আশা পূরণ হচ্ছে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির মর্যাদাপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ পদ ‘সহ-সম্পাদক’ প্রত্যাশীদের। ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়। শুক্রবার(৩০ জুন) বিকালে বৈঠক শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গত কেন্দ্রীয় উপ-কমিটিতে খেয়াল খুশি ও ঢালাওভাবে সহ-সম্পাদক নিয়োগে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তাই এবার নতুন করে ভুল করতে চায়নি দলটি। এবার ব্যাপক যাচাই-বাছাই করেই সহ-সম্পাদক মনোনীত করা হচ্ছে। সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. দীপু মনি, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, মেসবাহ উদ্দিন সিরাজ, একেএম এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সংস্কৃতি সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রোকেয়া, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
ওবায়দুল কাদের বৈঠকের কার্যসূচি তুলে ধরে বলেন, আমাদের যে ১৯টি উপ-কমিটি রয়েছে, এগুলো গঠনের ব্যাপারে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার আবার আমরা বসে উপ-কমিটির বিভিন্ন সম্পাদকদের প্রস্তাব অনুযায়ী আলাপ-আলোচনা করব। তিনি আরো বলেন, এবার বিচার-বিশ্লেষণ করে উপ-কমিটিগুলো করা হবে। যাতে বিতর্ক না হয়। সবদিক বিবেচনা করে উপ-কমিটিগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা তো পুরনোদেরকে চিনি। এবার নতুনদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়েছি। এখানে আমাদের একটা ক্যাটাগরি আছে। যারা অন্যান্য শাখা বা কমিটিতে আছেন, তারা কিন্তু উপ-কমিটিতে অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি থাকতে পারবেন না। কিন্তু মেম্বার (কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য) থাকতে পারবেন। যারা অন্য কমিটিতে আছেন, এমন কেউ অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি (সহ-সম্পাদক) হতে পারবেন না। তিনি আরো বলেন, আমরা এই অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি (সহ-সম্পাদক) ১০০ অতিক্রম করব না। সর্বমোট ৯৫ জনের মতো হবেন।
কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকদের দায়িত্ব বণ্টনের বিষয় তুলে ধরে কাদের বলেন, আমাদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে তিনজন করে সহ-সম্পাদক সংযুক্ত থাকবেন। এ বিষয়ে আমরা আজকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রচার এবং দপ্তর এই দুইটি বিভাগে ৫ জন করে করে থাকবেন। তথ্য-গবেষণায় চারজন থাকবেন। এইভাবে আমরা চিন্তা-ভাবনা করেছি। ওই আলোকে আমরা পরবর্তী মিটিংয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করব। হয়ত সেক্ষেত্রে আরো একটি মিটিং করে চূড়ান্ত করা হবে। এরপর আমরা আওয়ামী লীগ সভাপতির সাথে পরামর্শ করে ধারাবাহিকভাবে গণমাধ্যমে প্রকাশ করব।
কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্যদের ‘পদ সংখ্যার’ সীমা তুলে ধরে তিনি বলেন, উপ-কমিটির সদস্য পদে ২০ জন থেকে ৩০ জন থাকবেন। এখানে পার্লামেন্টের মেম্বাররা থাকবেন ৫ থেকে ৭ জন। অনেক আছে আওয়ামী লীগ মনস্ক। আমাদের আদর্শের লোক। এমন যারা আছেন তারাও স্থান পাবেন। আর ১৯টি উপ-কমিটির মধ্যে ১৬টি উপ-কমিটির মধ্যে তিনজন করে অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অন্তর্ভুক্ত থাকবেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। তবে এর আগে আওয়ামী লীগের ১৯টি উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিরের নাম ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, দলের গঠনতন্ত্রের ২৫ অনুচ্ছেদের ‘চ’ ধারায় (বিভাগীয় উপ-কমিটি গঠন) বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রত্যেক সম্পাদকীয় বিভাগের কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল ও সমন্বিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি সম্পাদকীয় বিভাগে একটি করে উপ-কমিটি গঠন করবে। উক্ত উপ-কমিটি ১ জন চেয়ারম্যান, ১ জন সম্পাদক, অনূর্ধ্ব ৫ জন সহ-সম্পাদক, প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞ সদস্য, সংশ্লিষ্ট সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হবে।
সর্বশেষ ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর কাউন্সিলের পর কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার সঙ্গে ৬৬ জন সহ-সম্পাদকের নামও ঘোষণা করা হয়। এসব সহ-সম্পাদক নিয়োগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। পরে তা বেড়ে ৪৫০ ছাড়িয়ে যায়। ২০তম জাতীয় সম্মেলনের পূর্বে উপ কমিটির সহ-সম্পাদকদের নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে তৎকালীন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ধানমণ্ডির এক কমিউনিটি সেন্টারে বলেছিলেন, ‘উপ কমিটির সহ-সম্পাদক ব্যাঙের ছাতার মতো বেড়েছে। পার্টি অফিসের সামনে যার সাথে ধাক্কা লাগে সেই বলে আমি আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক। কিন্তু তারা যে উপকমিটির সহ-সম্পাদক এটা তারা বলে না। এই সহ-সম্পাদকের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে অনেকে নিজ জেলায় অনেক হুমকি-ধমকিও মারে। তাই আগামী সম্মেলনে উপকমিটির সহ-সম্পাদকের সংখ্যা একশ’র মধ্যে কমিয়ে আনা হবে।’
এ ছাড়া ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, আমাদের আটটি জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। কমিটি জমা পড়েছে কিন্তু সেটা পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এই আটটি জেলার ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে ঢাকায় আসবেন। আমরা তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে পূর্ণাঙ্গ কমিটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়