আজ- রবিবার | ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫
১২ মাঘ, ১৪৩১ | রাত ৪:৩১
২৬ জানুয়ারি, ২০২৫
১২ মাঘ, ১৪৩১
২৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২ মাঘ, ১৪৩১

আজ বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস

দৃষ্টি নিউজ:

আজ ১১ মে, শনিবার, বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস। এবার দিবসের প্রতিপাদ্যে পোকামাকড় পরিয়ায়ী পাখির জন্য যে বিশেষ ভূমিকা রাখে, তার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ দেশের সৈকত পাখির অনেক প্রজাতি পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। পরিযায়ী পাখি রক্ষায় আমাদের উপকূল আর মিঠাপানির হাওর এলাকার ঘাসবনগুলো রক্ষা করতে হবে। তাতে পোকার আবাসভূমি রক্ষা পাবে আর সঙ্গে সঙ্গে পরিযায়ী পাখির খাবারও নিশ্চিত হবে।


বর্তমান বিশ্বের জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে পাখিদের আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। একারণে পরিযায়ী পাখিরা মারাত্মক খাদ্য সংকটের মধ্যে পড়েছে। এই অবস্থা দূরীকরণই এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য। পরিযায়ী পাখিদের সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা বাড়াতে ২০০৬ সাল থেকে এই দিবস পালন শুরু করা হয়। পরিযায়ী পাখির আবাসস্থলকে নিরাপদ রাখা ও পাখিদের বিচরণস্থল সংরক্ষণে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রতিবছর মে ও অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় শনিবার বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস(World Migratory Bird Day) পালিত হয়।


পাখিদের ওপর একটি দীর্ঘ গবেষণা করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক পাখিবন্ধু দিলীপ দাশ। তিনি অর্ধশতাধিক পাখির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি নেদারল্যান্ডসের বিখ্যাত গ্রোনিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পাখির পরিযায়নের ওপর পিএইচডি করছেন। তাঁর গবেষণায় আরও একটি বিষয় উঠে আসছে যে এই পাখিগুলো কেন উপকূল ও মিঠাপানির জলাশয় ব্যবহার করে। তিনি দেখেছেন, এ দেশে আসা তিনটি উপপ্রজাতি পৃথিবীর তিনটি ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় প্রজননের জন্য যায়।

আবার তিনটি দলই ভিন্ন ভিন্ন পথে বাংলাদেশে আসে। প্রথম দলটি পূর্ব কাজাখস্তানের করিকশা ও তার পার্শ্ববর্তী মঙ্গোলিয়া-রাশিয়া অঞ্চলের ঘাসবনে প্রজনন শেষ করে আগস্ট মাসে বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করে। প্রায় ৩০ দিনে তিন-চারবার বিশ্রাম নিয়ে পাখিগুলো বাংলাদেশের উপকূলের নিঝুম দ্বীপে পৌঁছায়।

দ্বিতীয় আরেকটি দল রাশিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চলে প্রজনন শেষ করে বৈকাল হ্রদ হয়ে হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা পাড়ি দিয়ে এ দেশের উপকূলে পৌঁছায়। আর তৃতীয় দলটি চীন ও মঙ্গোলিয়ার পূর্ব সীমান্তের ঘাসবনে প্রজনন করে তিব্বত হয়ে হিমালয় পাড়ি দিয়ে ভারতের অরুণাচলে আসে। তারপর এরা বাংলাদেশে উপকূলে চলে আসে।


আমাদের দেশে প্রতিবছর সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার কালালেজ জৌরালি পরিযায়ী হয়ে আসে। এ দেশে প্রায় ৬০ প্রজাতির সৈকত পাখি আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে লম্বা পথে পরিযায়ন করা সৈকত পাখির একটি হলো এই কালালেজ জৌরালি।


বাংলাদেশ সরকার পরিযায়ী পাখি/বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ প্রণয়ন করেছেন। সেই আইনের ধারা ৩৮ এর (১ ও ২) অনুযায়ী পরিযায়ী পাখিকে আঘাত করা, দখলে রাখা, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মাংস ভক্ষণ, এয়ারগান দিয়ে শিকার, বিভিন্ন ধরণের ফাঁদ পেতে ধরা, প্রজননের সময় বিরক্ত, ডিম নষ্ট ও হত্যা করা ইত্যাদি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যার সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছর কারাদণ্ড অথবা ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।


পাখিদের নিয়ে রহস্য পাঁচ কোটি বছর আগের। আদিকালে এই রহস্যকে বলা হতো জাদু। সুমেরু ও কুমেরুর প্রাচীন উপজাতিরা মনে করতো পাখি মানুষের আত্মাধারণকারী। বিজ্ঞানীরা আজও রহস্যের সেই জাল ভেদ করতে পারেননি। যা পেরেছে তা শুধুই সাময়িক অভিপ্রয়ানের (মাইগ্রেটরি) বা পরিযায়ী পাখি। নিকট অতীতে নাম ছিল অতিথি পাখি। বর্তমানে প্রাণবৈচিত্রের দূত হয়ে আসা অতিথিদের বলা হয় পরিযায়ী। জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনে পাখিদের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। ওরা খাদ্য সংকটে পড়ছে। এই অবস্থা দূরীকরণে ২০০৬ সাল থেকে পরিযায়ী পাখি দিবস পালন শুরু হয়।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়