টানা দুই ম্যাচ জিতে প্রথম দল হিসেবে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ ষোলোয় উঠেছে ফ্রান্স। এই প্রথম বড় কোনো প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ পাওয়া আলবেনিয়াকে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ২-০ গোলে হারিয়েছে ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়নরা।
বুধবার রাতে মার্সেইয়ে প্রথমার্ধের অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সের পর দ্বিতীয়ার্ধের দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দিদিয়ে দেশমের দল। একের পর এক আক্রমণ করে গেলেও সাফল্য মিলছিল না, অবশেষে শেষ দিকে অঁতোয়ান গ্রিজমানের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান আরও বাড়ান দিমিত্রি পায়েত।
সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আর শক্তির বিচারে অনেক এগিয়ে থাকা ফ্রান্সের শুরুটা ছিল সাধারণ মানের। প্রথমবার ইউরোয় খেলতে আসা আলবেনিয়াও ছিল চমকহীন। তাই প্রথম ২০ মিনিটে দুই গোলরক্ষকের কাউকেই কোনো পরীক্ষায় পড়তে হয়নি। ২১তম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় ফ্রান্সের অন্থনি মার্শিয়াল। পায়েতের বাড়ানো বল ডি বক্সে পেয়েও শট নিতেই ব্যর্থ হন গ্রিজমানের পরিবর্তে প্রথম একাদশে ঢোকা এই ফরোয়ার্ড। প্রথমার্ধে দুটি দলই গোলের লক্ষ্যে মোট ৪টি করে শট নেয়, কিন্তু কোনোটাই গোল বরাবর ছিল না।
প্রথমার্ধে অনুজ্জ্বল থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মার্শিয়ালকে বসিয়ে বিরতির পর বর্তমানের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার পল পগবাকে নামান কোচ দেশম। দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ফরাসিরা, কিন্তু কিংসলে কোমানের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৫৩তম মিনিটে গগবার হাফ ভলি ক্রসবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে গেলে ফের হতাশ হতে হয় ফ্রান্সকে।
এই দুই হতাশার মাঝে ৫১তম মিনিটে উল্টো গোল খেতে বসেছিল স্বাগতিকরা; তবে আলবেনিয়ার মিডফিল্ডার লেদিয়ান মেমুসাইয়ের প্রচেষ্টা পোস্টে লাগলে বেঁচে যায় দুবারের চ্যাম্পিয়নরা।
৬৭তম মিনিটে ম্যাচের সহজতম সুযোগটি পায় ফ্রান্স; কিন্তু ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড করেন জিরুদ। পরের মিনিটে দুর্ভাগ্য বাঁধ সাধে; এই আর্সেনাল স্ট্রাইকারের জোরালো হেড পোস্টে লাগে।
এরপরই আতলেতিকো মাদ্রিদের হয়ে দারুণ একটি মৌসুম কাটানো গ্রিজমানকে মাঠে নামান কোচ। তাতে আক্রমণের ধার বাড়ে, কিন্তু শেষ ১৫ মিনিটে পুরোপুরি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়া আলবেনিয়ার প্রাচীর ভাঙতে পারছিলেন না পগবা-গ্রিজমানরা। অবশেষে নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে আদিল রামির ক্রসে দুর্দান্ত এক হেডে দলকে এগিয়ে নেন আতলেতিকোর গত মৌসুমের সেরা গোলদাতা গ্রিজমান। বল জালে ঢোকা দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের।
আর যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে ডি বক্সের মধ্যে থেকে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে জয় নিশ্চিত করেন পায়েত। রোমানিয়ার বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচেও শেষ দিকে জয়সূচক গোলটি করেছিলেন ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের এই মিডফিল্ডার। দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট পাওয়া ফ্রান্সের কমপক্ষে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ নিশ্চিত হয়ে গেল।