আজ- বুধবার | ২৬ মার্চ, ২০২৫
১২ চৈত্র, ১৪৩১ | বিকাল ৫:৪৯
২৬ মার্চ, ২০২৫
১২ চৈত্র, ১৪৩১
২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২ চৈত্র, ১৪৩১

এমপি রানা সহ চার ভাইয়ের ফাঁসির দাবিতে আ’লীগের বিক্ষোভ

দৃষ্টি নিউজ:

এমপি রানা সহ চার ভাইয়ের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের
এমপি রানা সহ চার ভাইয়ের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাই সহ সকল আসামীদের ফাঁসির দাবিতে সোমবার(১৯ সেপ্টেম্বর) শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা আওয়ামীলীগ।
সোমবার সকাল থেকে দলে দলে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে  এসে সমবেত হন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, যুগ্ম-সম্পাদক নাহার আহমদ, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরণ, জেলা আ’লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনি, পৌরসভার প্যানেল মেয়র তানভীর হাসান ফেরদৌস প্রমুখ।

এমপি রানা সহ চার ভাইয়ের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের একাংশ
এমপি রানা সহ চার ভাইয়ের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের একাংশ

এদিকে, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহামেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে প্রেরণ করায় আনন্দ মিছিল করেছে ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ।
রোববার(১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধায় উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ আনন্দ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি ঘাটাইল বাসস্ট্যান্ড চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদণি করে। এ সময় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে আনন্দ মিছিলটি স্থানীয় পারুল প্লাজার সামনে গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে এক সংপ্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম লেবু’র সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ঘাটাইল পৌর মেয়র শহীদুজ্জামান খান ভিপি শহিদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান আজাদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুর রহিম মিয়া, ধলাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার, অ্যাডভোকেট শাহানশাহ সিদ্দিকী, আবু সাইদ রুবেল প্রমুখ।

ঘাটাইলে এমপি রানা সহ চার ভাইয়ের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের একাংশ
ঘাটাইলে এমপি রানা সহ চার ভাইয়ের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের একাংশ

উভয় সমাবেশে বক্তারা বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার অন্য আসামীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং সদ্য আতœসমর্পণকৃত সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাই সহ অভিযুক্তদের ফাঁসি দাবি করেন।
প্রকাশ, রোববার(১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাত টার দিকে টাঙ্গাইল আদালতে হাজির হন সাংসদ রানা। কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই তিনি টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ঢুকে পড়েন। আত্নসমর্পণ করার পরে সাংসদের পরে আইনজীবীরা জামিন চান। রাষ্ট্রপ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পরে বক্তব্য শেষে বিচারক আবুল মনসুর আহমেদ জামিন নামঞ্জুর করে আমানুর রহমান রানাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে বেলা ১১ টার দিকে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
চাঞ্চল্যকর বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় জড়িত টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিনভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তি, জেলার সাবেক ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ অপর আসামীরা হচ্ছেন, কবির হোসেন, সাবেক কমিশনার মাসুদ মিয়া, চাঁনে, নুরু, সানোয়ার হোসেন ও দাত ভাঙ্গা বাবু। এরা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪/১২০ বি ধারায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে আসামী আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী ও সমির হোসেন আগেই গ্রেপ্তার হয়ে টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন। আসামী ফরিদ হোসেন কিছুদিন আগে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। আর আসামি আবদুল হক পলাতক অবস্থায় কয়েক মাস আগে দুস্কৃৃতকারীদের হাতে নিহত হন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ ১৪জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আত্নসমর্পণের পর এমপি রানাকে আদালত থেকে কারাগারে নেয়া হচ্ছে।
আত্নসমর্পণের পর এমপি রানাকে আদালত থেকে কারাগারে নেয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ টাঙ্গাইলের কলেজপাড়া এলাকায় তাঁর বাসার সামনে পাওয়া যায়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমদ টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্ত শুরু করে। ২০১৪ সালের আগস্টে ওই মামলার আসামি আনিছুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী গ্রেপ্তার হন। আদালতে তাঁদের স্বীকারোক্তিতে সাংসদ রানা ও তাঁর তিন ভাইয়ের এ হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। এরপর থেকে সাংসদ ও তাঁর ভাইয়েরা আতœগোপনে রয়েছেন।
এ বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সাংসদ রানা ও তাঁর তিন ভাইসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। ৬ এপ্রিল আদালত মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক সাংসদ রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ১৭ মে ওই ১০ জনের বিরুদ্ধে হুলিয়া ও মালামাল জব্দ করার নির্দেশ দেন আদালত। ২০ মে পুলিশ সাংসদ ও তাঁর তিন ভাইয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মালামাল জব্দ করে, তবে সেখানে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না। সর্বশেষ ১৬ জুন আদালত আসামিদের হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়ার নির্দেশ দেন। সাংসদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি চিঠি দিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে জানানো হয়।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়