দৃষ্টি নিউজ:
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘কাজের বিনিময়ে খাদ্য’ (কাবিখা), ‘টেস্ট রিলিফ’ (টিআর) ও জিআর প্রকল্প এবং ব্রিজ, কালভার্ট, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে সরকারের বিশেষ বরাদ্দের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিনব কৌশল দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছে এই মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বিশেষ করে খোদ মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের নামেও ভুয়া চাহিদাপত্র তৈরি করে বরাদ্দের অর্থ, গম ও ঢেউটিন নয়-ছয় করার অভিযোগে কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করে। বুধবার(২৬ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এনিয়ে কমিটির সদস্যদের কারও কারও সঙ্গে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বচসা’র ঘটনাও ঘটে।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এনিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেচেন। শম্ভু শুক্রবার(২৯ অক্টোবর) সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কাছে (সংসদীয় কমিটির কাছে) অনিয়মের বেশকিছু তথ্য-প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ এসেছে। অভিযোগগুলো নিয়ে বৈঠকে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়। এ ব্যাপারে মন্ত্রীর কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছে। পরে মন্ত্রণালয়ের সচিবকে (শাহ্ কামাল) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে সচিবকে ২০ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় সংসদীয় কমিটির পরবর্তী বৈঠকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর ওইদিনই বৈঠক শেষে কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে কমিটি সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন ‘মন্ত্রণালয়ের সচিবের প্রতিবেদন যদি গ্রহণযোগ্য মনে না হয় তাহলে সংসদীয় কমিটি নিজ উদ্যোগেই অভিযোগগুলো তদন্ত করবে। আমার জানামতে, দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) অভিযোগগুলো গেছে। সংসদীয় কমিটির পাশাপাশি প্রয়োজনে দুদকও উদ্ভুত অভিযোগসমূহ খতিয়ে দেখতে পারে। দরকার হলে সংসদীয় কমিটি অভিযোগগুলো দুদকের কাছে পাঠিয়ে তদন্তের জন্য সুপারিশ করবে।’
বুধবার(২৬ অক্টোবর) কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ছাড়াও তালুকদার আব্দুল খালেক, বি এম মোজাম্মেল হক, আবদুর রহমান বদি, শফিকুল ইসলাম শিমুল, এসএম জগলুল হায়দার, সৈয়দ আবু হোসেন ও হেপী বড়াল অংশ নেন।
সংসদীয় কমিটির এক সদস্য জানান, কতিপয় ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি চক্র বিভিন্ন এলাকা থেকে মন্ত্রী, এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের প্যাড সংগ্রহ করে ডিও লেটারসংবলিত ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে আবেদনপত্র তৈরি করে বরাদ্দ ভাগিয়ে নিয়ে গম-টিন বাইরে বিক্রি করে দিচ্ছে, সঙ্গে হাতিয়ে নিচ্ছে নগদ অর্থ। এর ফলে বানভাসি ও বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় লোকজন বঞ্চিত হচ্ছেন। এজন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দে স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়েছে।