আজ- মঙ্গলবার | ২২ এপ্রিল, ২০২৫
৯ বৈশাখ, ১৪৩২ | রাত ১১:১৮
২২ এপ্রিল, ২০২৫
৯ বৈশাখ, ১৪৩২
২২ এপ্রিল, ২০২৫, ৯ বৈশাখ, ১৪৩২

টাঙ্গাইলে নারীর অাইনি ক্ষমতায় স্বামীর ঘর-বাড়ি দখল করলেন স্ত্রী

দৃষ্টি নিউজ:

dristy-p-1
টাঙ্গাইল শহরের বিশ্বাস বেতকায় নারী নির্যাতন মামলায় স্বামী, শ্বাশুড়ীসহ বাড়ির সকলকে আসামী করে পুলিশি ধাওয়ার উপর রেখে দুই পৌর কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে তালা ভেঙ্গে বাড়ি-ঘর দখল করে নিয়েছেন মামলার বাদি ফাতেমাতুজ জহুরা।
বিশ্বাস বেতকা গ্রামের মৃত ছাত্তার মিয়ার ছেলে শাহীন খন্দকার জানান, দীর্ঘ ১২ বছর অাগে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার সাবালিয়া গ্রামের মো. নুরুন্নবী মিয়ার মেয়ে মোছা. ফাতেমাতুজ জহুরার সাথে পারিবারিকভাবে তার বিবাহ হয়। এর মধ্যে তাদের ঘরে সামিউল হাসান সামি(৯) ও ছাদ (৩) নামে দু’জন পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। শাহীন বিশ্বাস বেতকায়  পৈত্রিক সম্পত্তির ১৪ শতাংশ জমি থেকে ৭ শতাংশ জমি নিজের নামে পেয়েছেন। সেখানে একটি তিনতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করেন। তিনতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় এক পাশে শাহীন পরিবার নিয়ে ও অন্যপাশে তার প্রবাসী ছোট ভাই রবিনের স্ত্রী লিপি আক্তার ও মা রওশন আরা বেনু বসবাস করেন। সংসার চলাকালে স্ত্রী জহুরা তার স্বামী শাহীনকে ওই ৭ শতাংশ ভূমি লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। এ বিষয় নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হতো। এরই সুত্র ধরে গত ২২ সেপ্টেম্বর স্ত্রী ফাতেমাতুজ জহুরা বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি নারী নির্যাতনের একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় স্বামী শাহীন খন্দকার, শ্বাশুড়ি রওশন আরা বেনু ও জা লিপি আক্তারকে আসামী করা হয়। পুলিশের ভয়ে গ্রেপ্তার এড়াতে শাহীন খন্দকার, তার মা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীসহ সকল সদস্যরা বাড়ি-ঘর ছেলে অন্য আত্নীয়দের বাড়িতে পালিয়ে রয়েছেন। এমতবস্থায় সোমবার(১৭ অক্টোবর) সকালে জহুরা, তার বাবা নুরুন্নবী ও ভাইসহ আরো ৭-৮ জনের একদল সন্ত্রাসী শ্রেণিল লোকজন নিয়ে শাহীন খন্দকারের ঘরের তালা ভেঙ্গে বাড়ি-ঘর জবরদখল করেছেন। এ ঘটনার সময় টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ হুমায়ুন ও ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল বাবুল উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ওই বাড়ির নিচতলার ভাড়াটিয়া সাজিদা বেগম জানান, সকাল ১০টার দিকে একদল লোকজন এসে দো’তলার শাহীন ভাই’র রুমের তালা ভাংতে দেখেছি। অনেক লোকজনের উপস্থিতি থাকায় আমরা এগিয়ে সামনে যেতে সাহস করিনি।
ওই বাড়ির টিনের ঘরের ভাড়াটিয়া আলী আহম্মদ জানান, আমি সকালে ঘুমেই ছিলাম। এমন সময় শাহীন ভাই’র দো’তলায় কিছু ভাঙার বিকট শব্দ হচ্ছিল। পরে দেখলাম অনেক লোকজন দা, শাবল ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে রুমের তালা ভাংচুর করছে। আমরা ভাড়াটিয়া তাই সাহস করে সামনে যাইনি।
১৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ হেল ওয়ারেজ (হুমায়ুন) এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি বিষয়টি সম্পর্কে বিষদ জানিনা। তবে সকালে পৌরসভায় যাওয়ার পথে ওই এলাকায় হইচই দেখে এগিয়ে গিয়েছিলাম। তবে তালা ভেঙ্গে বাড়ি-ঘর দখল করেছে কিনা জানিনা।
মামলার বাদী ফাতেমাতুজ জহুরার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পুলিশের পরামর্শ নিয়েই আমি বাড়িতে ওঠেছি। আমার স্বামী-ম্বাশুড়িসহ সকলেই পলাতক রয়েছে। তাই বাড়ি-ঘরের তালা ভেঙ্গে দুই কাউন্সিলের উপস্থিতিতেই বাড়িতে ওঠেছি।
টাঙ্গাইল মডেল থানার এসআই নুরুল বাশার জানান, মামলার বাদী জহুরা আমাকে জানালেন যে তার স্বামী তাকে বাড়িতে ওঠতে বলেছে। আমি বলেছি আপনি বাড়িতে ওঠলে উল্টো ঝামেলায় পড়তে পারেন। আমি শুনলাম তিনি ঘরের তালা ভেঙ্গে বাড়িতে ওঠে পড়েছেন। নারী নির্যাতনের মামলা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়