দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইল পৌরসভার আগ শাকরাইল গ্রামে সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সহপাঠীদের হাতে মমিনুল(১৫) নামে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্র নির্মমভাবে খুন হয়েছে। মমিনুল টাঙ্গাইলের সন্তোষ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় টেকনিক্যাল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র এবং আগ শাকরাইল গ্রামের রংমিশ্রি শহিদুল ইসলাম বিশার ছেলে।
নিহত স্কুলছাত্রের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, মমিনুল, পরশ ও হালিম তিন বন্ধু এক সাথে লেখাপড়া করে। সবার পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় এক সাথে তারা চলাফেরা করে। তাদের চলাফেরায় আমরা কখনই নিষেধ করিনি। সোমবার সকাল ১১টার দিকে হালিম আমার ছেলে মমিনুলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। দুপুর ১২টার দিকে পরশদের বাড়ি থেকে ডাক চিৎকারের আওয়াজ শুনে আমরা এগিয়ে যাই। গিয়ে দেখি আমার ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। মাথায় ও মুখে এলোপাতাড়িভাবে কোপানো হয়েছে। মুমুর্ষূ অবস্থায় তাকে টাঙ্গাইলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। তিনি এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত হালিম ও পরশের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন।
নিহতের খালু জাকির সরকার জানান, হালিম বাসা থেকে ডেকে নিয়ে তারা তিন বন্ধু একসাথে স্কুলের সামনে একটি দোকান থেকে চানাচুর কিনে খেয়েছে। তখন তাদের সাথে কোন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে হালিম তাকে ডেকে নিয়ে পরশদের বাড়িতে যায়। ওই বাড়িতে গিয়ে পরশের শোবার ঘরে দরজা আটকিয়ে মমিনুলকে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় পরশের বাড়ির লোকজনের ডাকচিৎকারে গ্রামের লোকজন ও মমিনুলের বাবা-মা এগিয়ে আসলে মমিনুলকে রক্তাক্ত অবস্থায় পরে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। পথেই সে মারা যায়।
টাঙ্গাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক ভূঁইয়া জানান, এদের পরিবারের মধ্যে কারও সাথে কোন পূর্ব শত্রুতাও ছিল না। কেন, কি কারণে এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে হালিম ও পরশ পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বিকালে লাশের ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে, মমিনুলের লাশ সোমবার সন্ধ্যায় তার গ্রামের বাড়ি আগ শাকরাইলে আনা হলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের লোকজন ও আত্বীয়-স্বজন। এমন হত্যাকান্ড তারা কোনভাবেই মানতে পারছেন না। রাতেই জানাযা শেষে শাকরাইল সামাজিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।