দৃষ্টি নিউজ:
ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের দিন পুলিশের এক সদস্যকে হত্যায় ‘নেতৃত্ব’ দেওয়া ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। মঙ্গলবার(৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
সিটিটিসি ইউনিট জানায়, গ্রেপ্তার এই ব্যক্তির নাম আমান উল্লাহ আমান। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ছিলেন। তাকে সোমবার(৬ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২৮ অক্টোবর সমাবেশকেন্দ্রিক দায়িত্ব পালনকালে রাজধানীর ফকিরাপুলের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় হামলায় নিহত হন পুলিশ সদস্য মো. আমিরুল ইসলাম পারভেজ (৩২)। তিনি কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায়। এ ঘটনায় ২৯ অক্টোবর পল্টন থানায় হত্যা মামলা করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা ছিল, পুলিশের ওপর বর্বরোচিত ও নৃশংস হামলা করতে হবে। হামলার মাধ্যমে পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতে হবে।
এক বা একাধিক পুলিশ সদস্য হত্যার মাধ্যমে তাঁরা দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। একটি নতুন ইস্যু সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। বিএনপি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে মহাসমাবেশের দিন আমান উল্লাহ তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে কনস্টেবল আমিরুলকে হত্যা করেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, সমাবেশকেন্দ্রিক দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অবস্থান সম্পর্কে আগেই আমান উল্লাহ ও তাঁর অনুসারীদের জানা ছিল। মহাসমাবেশের দিন কাকরাইলে উপস্থিত বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করেন। এর জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এই সুযোগে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কাছের ভিক্টরি হোটেলের পাশের গলি দিয়ে আমান উল্লাহ ও তাঁর সহযোগীরা পুলিশের ওপরে হামলা করার জন্য অগ্রসর হন। তাঁরা পল্টন টাওয়ারের সামনে এসে দুটি দলে বিভক্ত হন।
একটি অংশ বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির দিকে যায়। অপর অংশ আমান উল্লাহর নেতৃত্বে বক্স কালভার্ট রোডের পূর্ব প্রান্তের দিকে এগিয়ে যায়। বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছানোর পর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সেখানে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যদের ওপরে অতর্কিত হামলা করেন।
এ সময় পূর্ব প্রান্তের পুলিশ সদস্যরা বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম দিকে অগ্রসর হন। পশ্চিম দিকে অগ্রসরমাণ পুলিশ দলটির ওপর আমান উল্লাহর নেতৃত্বে হামলা হয়। হামলার একপর্যায়ে ইটের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। তখন তাঁকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন হামলাকারীরা। আমিরুল জ্ঞান হারান। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর নিথর দেহ রাস্তায় পড়ে থাকে।
সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান বলেন, হামলায় আমিরুলের মাথা থেকে পা পর্যন্ত সারা শরীর গুরুতর জখম হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তাঁর নিথর শরীরের ওপরে বর্বরভাবে আঘাত করতে থাকেন হামলাকারীরা। আমিরুলের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর আমান উল্লাহ তাঁর দলবল নিয়ে বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম দিক দিয়ে চলে যান।