আজ- সোমবার | ১৭ মার্চ, ২০২৫
৩ চৈত্র, ১৪৩১ | বিকাল ৫:৪৪
১৭ মার্চ, ২০২৫
৩ চৈত্র, ১৪৩১
১৭ মার্চ, ২০২৫, ৩ চৈত্র, ১৪৩১

তিনি একাই ক্লাস নেন, ঘণ্টা বাজান, ঝাড়ুও দেন!

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালীছেও দক্ষিণ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালান একমাত্র শিক্ষক সেলিনা আক্তার । কাগজে-কলমে তিনিও ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক নন। তিনি পাশের আকন্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক। ওই বিদ্যালয়ের চার শিক্ষক অবসরে যাওয়ায় গত ১০ মাস আগে সেলিনা আক্তার ওই বিদ্যালয়ে প্রেষণে যোগ দিয়েছেন। তিন মাস ধরে ওই বিদ্যালয়ে তিনি একাই প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, দপ্তরির দায়িত্ব পালন করছেন।
সখীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কাঙ্গালীছেও দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কালাচাঁন সরকার ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ, সহকারী শিক্ষক নরেশ চন্দ্র ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি, সহকারী শিক্ষক সুমন্ত সরকার ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ও আরেক সহকারী শিক্ষক গোলক চন্দ্র সরকার চলতি বছরের ১৩ আগস্ট অবসরে যান।
সুমন্ত সরকারের অবসরে যাওয়ার দিন পাশের বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিনা আক্তার প্রেষণে যোগ দেন। গত ১৩ আগস্ট গোলক সরকার অবসরে যাওয়ায় গত তিন মাস ধরে সেলিনা আক্তার একা হয়ে পড়েছেন। ফলে তাঁকে ওই বিদ্যালয়ে দুই শিফটে ছয় শ্রেণির শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিদিন মোট ২৬টি ক্লাস সামাল দিতে হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওই বিদ্যালয়ে সর্বমোট শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। সেলিনা আক্তার একাই তিনটি শ্রেণিতে তিনটি ক্লাস এক সঙ্গে ক্লাস নিচ্ছেন। এক ক্লাস থেকে অন্য ক্লাসে যাচ্ছেন। শিক্ষক যে ক্লাসে আছেন সেই ক্লাস নীরব থাকলেও অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীরা গোলমাল, চেঁচামেচি করছেন।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হারেজ আলি বলেন, সামনে পিএসসি (প্রাথমিক সমাপণী) পরীক্ষা। শিক্ষক না থাকায় পুরো বছর ভালোভাবে পড়া হয়নি। ফলাফল বেশি একটা ভাল নাও হতে পারে বলে সে জানায়।
একাধিক অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন,‘এই বিদ্যালয়ে কোনো পড়া-টরা নেই। শিক্ষার্থী সামলাতেই শিক্ষকের সময় চলে যায়। এভাবে কোন সরকারি প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না।
এ বিষয়ে সেলিনা আক্তার বলেন, শুক্রবার ও বন্ধের দিন বাদে প্রতিদিন সকাল নয়টায় বিদ্যালয়ে এসে চারটি কক্ষের তালা খুলে ঝাড়ু দেই। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণিতে মোট ২৬টি ক্লাস নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। হাজিরা খাতায় নাম লিখতে হয়। আবার ঘণ্টাও বাজাতে হয়। পরীক্ষাও চালাতে হয়। মাসে কমপক্ষে চার-পাঁচবার উপজেলা শিক্ষা অফিসে নানা কাজে যেতে হয়। আমি আর পারছি না এভাবে একাই একটি বিদ্যালয় চালাতে হয়। । এভাবে কী একটা স্কুল চালানো যায়?
সখীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ওই বিদ্যালয়টি একজন শিক্ষকই চালাচ্ছেন। শিগগিরই আরও দুইজন শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ে দেওয়া হবে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়