আজ- শুক্রবার | ২৩ মে, ২০২৫
৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ | রাত ১০:৩৯
২৩ মে, ২০২৫
৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
২৩ মে, ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

পানির স্রোতের চাপে সাঁকো ভেঙে জনদুর্ভোগ চরমে!

দৃষ্টি নিউজ:

কয়েকদিন ধরে যমুনায় পানি বাড়ছে- বাড়ছে টাঙ্গাইলের অব্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও। বর্ষার নয়া পানির সঙ্গে ভেসে যাচ্ছে কচুরিপানা সহ ছোট-খাট গাছ-গাছরা ও জঙ্গল। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের লৌহজং নদীর ওপর কুমুদিনী হাসপাতাল ঘাটের বাঁশের সাঁকোটিও পানির স্রোত ও কচুরিপানার চাপে ভেসে গেছে।

বিকল্প পারাপারের ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালটিতে সেবা নিতে আসা রোগী ও মির্জাপুরের দক্ষিণাঞ্চলসহ আশপাশের অন্তত ৩৫ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তারা প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে পোষ্টকামুরী ও পাহাড়পুর এলাকার দুই সেতু দিয়ে উপজেলা সদরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তাদের অতিরিক্ত অর্থ ও সময় ব্যয় হচ্ছে।


এলাকাবাসী জানায়, কয়েক দিন ধরে নদীর পানি বাড়ছে। এতে উজান থেকে আসা ছোটখাট গাছ-গাছরা ও জঙ্গল এবং বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা কচুরিপানা পানির স্রোতের সঙ্গে ভাটির দিকে যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার(৬ জুন) রাতে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিতে নদীতে পানির স্রোত আরও বেড়ে যায়। উজান থেকে আসা ছোটখাট গাছ-গাছরা ও জঙ্গল এবং বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা কচুরিপানা কুমুদিনী হাসপাতাল ঘাটের বাঁশের সাঁকোতে এসে জমাট বাধে। আগাছা ও জঞ্জালের সঙ্গে কচুরিপানা যোগ হওয়ায় সাঁকোতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে।

ওই চাপ সহ্য করতে না পেরে সাঁকোটি ভেঙে যায়। সাঁকোর ভেঙে যাওয়া বাঁশও নদীর স্রোতে ভেসে যায়। ওই সাঁকো দিয়ে মির্জাপুর উপজেলা সদরের সাহাপাড়া, সরিষাদাইড়, আন্ধরা ছাড়াও মির্জাপুরের দক্ষিণাঞ্চলের ভাওড়া, বহুরিয়া, উয়ার্শী ইউনিয়নের অন্তত ৩৫ গ্রামের মানুষ হালকা যানবাহন ব্যবহার করে চলাচল করেন।

এ ছাড়া কুমুদিনী হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং স্কুল ও কলেজ, ভারতেশ্বরী হোমসের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাঁকোটি ব্যবহার করেন। সাঁকোটি দিয়ে অনেকে মোটরসাইকেলে পার্শ্ববর্তী ঢাকার ধামরাই, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়াসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় পারাপারের জন্য কোনো নৌযান না থাকায় অন্তত ৩৫টি গ্রামের মানুষদের প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে।


স্থানীয়রা জানায়, নদীর ওই ঘাট টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ থেকে প্রতিবছর ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এখনও সেখানে সেতু নির্মাণ হয়নি। সাঁকো ভেঙে যাওয়ার ফলে বিকল্প উপায়ে প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে পূর্ব ও পশ্চিম পাশে পাহাড়পুর ও পোষ্টকামুরী এলাকার দুটি সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।


একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্স উমা ঘোষ জানান, নদীর অদূরে সাহাপাড়া এলাকায় তাদের বাড়ি। হেঁটে তিনি কর্মস্থল থেকে বাড়ি যেতেন। শুক্রবার ও শনিবার(৮ জুন) তার যাতায়াতের জন্য বাড়তি ১২০ টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। তবে সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের আয় বেড়েছে।


মির্জাপুরের পাকুল্যা এলাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক নাদিম হোসেন বলেন, তিনি দিনে এক হাজার টাকা আয় করতেন। বাঁশের সাঁকোটি ভাঙার কারণে তার আয় অনেকটা বেড়েছে। শুক্রবার(৭ জুন) সারাদিনে চালকদের অনেকেই চার হাজার টাকার বেশি আয় করেছেন। শনিবার(৮ জুন) সকাল ১০টা পর্যন্ত তার এক হাজার ২০০ টাকা আয় হয়েছে। এসব যানবাহনের চালকরা অনেকটা পথ ঘুরে ২০ টাকায় যাত্রীদের নদী পার করে দিচ্ছেন।


মির্জাপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের(এলজিইডি) প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান জানান, ঘাটটি পৌর সভার সীমানায় অবস্থিত। তাই সেখানে তারা কোনো উন্নয়ন কাজ করতে পারবেন না। এর দায়িত্ব পৌরসভার।


মির্জাপুর পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার জানান, জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুতই এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। পরে প্রাক্কলন তৈরি করে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়