আজ- বুধবার | ২৬ মার্চ, ২০২৫
১২ চৈত্র, ১৪৩১ | বিকাল ৪:৩৪
২৬ মার্চ, ২০২৫
১২ চৈত্র, ১৪৩১
২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২ চৈত্র, ১৪৩১

পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করায় এক কূলবধূ গৃহবন্দি!

দৃষ্টি নিউজ:

গৃহবধূ জাহানারা বেগম
গৃহবধূ জাহানারা বেগম

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নে তুচ্ছ কারণে মা ও শিশুপুত্রকে ৪ দিন আটকে রেখে নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করায় জাহানারা বেগম নামে এক গৃহবধূকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।
অভিযোগে প্রকাশ, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার মাকেশ্বর গ্রামের বাকী শেখের স্ত্রী গৃহবধূ জাহানারা বেগম(৩২) ও তার ছেলে জাহিদকে(১৪) গোপালপুরের হাবিবুল্লাহ পীরের দরগাহ থেকে ডেকে এনে বেদম মারপিট করে আনেহলা ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার শাজাহানের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান তাদেরকে গত ২৯ অক্টোবর একটি ইজিবাইক চুরির কথা শিকার করতে বলেন এবং শিকার না করলে পরিস্থিতি অন্য রকম হবে বলে শাসায়। বাধ্য হয়ে গৃহবধূ জাহানারা বেগম ও তার ছেলে জাহিদ ইজিবাইক চুরির কথা শিকার করে। তখনই ইউপি চেয়ারম্যান সালিশ বসিয়ে এক তরফাভাবে অভিযুক্ত করে ইজিবাইকের মূল্য হিসেবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য় করেন এবং উল্লেখিত টাকা পরিশেঅধ না করা পর্যন্ত ইউপি ভবনের একটি কক্ষে ৪ দিন আটকে রাখেন। গৃহবধূ জাহানারা বেগমের ১০ শতাংশ ভূমি ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা দাম সাব্যস্ত করে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ইউপি চেয়ারম্যান নিজের কাছে রাখেন এবং কয়েকটি কাগজে নাম-স্বাক্ষর রেখে মা-ছেলেকে ছেড়ে দেন। ওই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে জাহানারা বেগম গত ৬ নভেম্বর টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে ক্ষুব্ধ ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার শাজাহান ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন।
গৃহবধূ জাহানারা বেগমের ভাগ্নে আফজাল হোসেন জনান, পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগের খবর জানতে পেরে ইউপি চেয়ারম্যান থালুকদার শাজাহান তার পেটোয়া বাহিনী দিয়ে জাহানারা বেগম ও তার ছেলেকে গত তিনদিন ধরে (বুধবার-৯ নভেম্বর থেকে অদ্যাবদি শুক্রবার-১১ নভেম্বর পর্যন্ত) গৃহবন্দি করে রেখেছেন। বাড়িতে থেকে ঘর-সংসার করলে কেউ কিছু বলছেনা, কিন্তু বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে দেয়া হচ্ছেনা। বাড়ি থেকে বের হলেই চেয়ারম্যানের পেটোয়া বাহিনী বাধা দিচ্ছে। এতে, গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে পরিবারটি। তাছাড়া যার ইজিবাইক তার ভাবী(ভাইয়ের স্ত্রী) ইজিবাইক চুরির নাটকীয় ঘটনা স্বীকার করার পরও চেয়ারম্যানের জেদের কারণে এসব হচ্ছে।dristy-pic-fo-67
আনেহলা ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার শাজাহান জানান, গ্রাম্য সালিশে ওই মহিলা ও তার ছেলে ইজিবাইক চুরির কথা শিকার করেছে। পরিষদে নিয়ে আসার আগে ছেলেটাকে সামান্য মারপিট করা হয়েছিল, তিনি নিজ উদ্যোগে ছেলেটির চিকিৎসা করিয়েছেন। সালিশের টাকা তার কাছে জমা রয়েছে, ১০ শতাংশ ভূমি ক্রেতাকে দলিল করে না দেওয়া পর্যন্ত তার কাছেই জমা থাকবে। বিষয়টি মিমাংসা হয়েছিল। মহিলাটি পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছে। তাকে গৃহবন্দি করে রাখার কথা অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান।
ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. চান মিয়া জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। উল্লেখিত ইজিবাইক চুরির বিষয়ে কোন সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে বলে তার জানা নেই। তবে পুলিশ সুপারের কাছে দেয়া অভিযোগের কোন নির্দেশনা পেলে তিনি অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়