দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইলের আলোচিত জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার অন্যতম দুই আসামি সাবেক কাউন্সিলর মাসুদুর রহমান মাসুদ ও যুবলীগ কর্মী নুরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শনিবার(২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় টাঙ্গাইলের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তারা আত্নসমর্পণ করলে জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। টাঙ্গাইল কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ এর গুলিবিদ্ধ লাশ কলেজপাড়া এলাকায় তার বাসার সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর নিহত ফারুক আহমদের স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে। এই মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট আনিসুল ইসলাম রাজা ও ৫ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ আলী নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে আদালতে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়। এ জবানবন্দিতে টাঙ্গাইল-৩(ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি আমানুর রহমান খান রানা, তার ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ এমপির ঘনিষ্ঠ কয়েকজন এই হত্যাকান্ডে জড়িত বলে তথ্য পায় ডিবি পুলিশ।
এ ঘটনায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এর মধ্যে আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী ও সমির টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছে।
৬ এপ্রিল আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক আমানুর রহমান খান রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ১৭ মে ১০ জনের বিরুদ্ধে হুলিয়া ও মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। ২০ মে পুলিশ সাংসদের টাঙ্গাইল শহরস্থ বাসভবনে অভিযান চালিয়ে মালামাল জব্দ করে। সর্বশেষ আসামিরা হাজির না হওয়ায় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত।
পরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টাঙ্গাইল-৩(ঘাটাইল) আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানা আদালতে আত্নসমর্পণ করার পর জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া। ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর এ মামলার চার্জ শুনানীর তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।