আজ- শনিবার | ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | রাত ১২:২৪
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুসেতু-ভূঞাপুর সড়ক বালুবাহী ট্রাকের দখলে!

দৃষ্টি নিউজ:

dristy-dir-57
টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধুসেতু-ভূঞাপুর সড়ক এখন ধুলাবালি ও বালুবাহী ট্রাকের দখলে। প্রতিদিন শ’ শ’ ট্রাক বালু নিয়ে চলাচল করছে ওই সড়কে। এতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ঘটছে নানা রকম ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অপরদিকে, ট্রাক চলাচলে সৃষ্ট তীব্র ধুলা-বালির কারণে সড়কের দুপাশে আশ্রয় নেওয়া যমুনা নদী ভাঙনের অসহায় মানুষ বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ের শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে, আগে সপ্তাহে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর গরুর হাট গোবিন্দাসীর হাটবার রোববার ও বৃস্পতিবার অতিরিক্ত গরুর ট্রাক ও সিএনজি চালিত অটোরিকসা-অটোভ্যান যাতায়াতের কারণে সড়কে জ্যাম লেগে থাকত। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শুধু হাটের দিন নয়, রাত-দিন ২৪ ঘণ্টাই দেদারছে চলছে বালুভর্তি ট্রাক। সকাল হলে ছেলে-মেয়েরা অবাধ বালুভর্তি ট্রাক চলাচলের কারণে নিয়মিত স্কুলে পৌঁছতে পারে না। ভিন্ন রাস্তায় ১-২ কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে যেতে হয়। বালুবাহী অতিরিক্ত ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তায় সৃষ্টি হচ্ছে ধুলা-বালি। যানবাহনের বাতাসের সাথে সেই ধুলায় প্রতিনিয়ত অসুস্থ হচ্ছে শিশু থেকে সব বয়সের মানুষ।
স্থানীয়রা আরো জানায়, অতিরিক্ত ট্রাক চলাচলের কারণে বঙ্গবন্ধুসেতুর গোলচত্বর ও রেল স্টেশন থেকে ভূঞাপুর যাওয়ার গোবিন্দাসী টি-রোড পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী যানজট লেগে থাকে। বিশেষ করে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়। বালু উত্তোলের পয়েন্ট গুলোর মধ্যে রয়েছে, গোবিন্দাসীতে ২টি, কষ্টাপড়ায় ৩টি, জিগাতলায় ১টি, চিতুলিয়া পাড়ায় ৯টি, মাটিকাটায় ৪টি, সিরাজকান্দিতে ৫টি, নেংরা বাজার এলাকায় ২টি এবং পাথাইলকান্দি ও সারপলশিয়া এলাকায় ৩টি। এই পয়েন্টগুলো থেকে শ’ শ’ ট্রাকে বালু লোড দেওয়ার সময় দীর্ঘ লাইন পড়ে যায় সড়কের বাম পাশে। আবার লোড করে যাওয়ার পথে ডান পাশে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। অন্য দিকে যাত্রীবাহী সিএনজি ও অটোরিকসা-অটোভ্যান তো রয়েছেই। এতে জনদুর্ভোগ চরম হতাশায় পড়েছে যাত্রী পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। এই বালুবাহী ট্রাকের দীর্ঘ লাইনের কারণে যাত্রীরা সঠিক সময়ে গন্তব্য স্থাঁনে পৌঁছাতে পারে না।
মাটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিার্থী জানায়, সকালের খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার জন্য সড়কে পা দিলেই বালুবাহী ট্রাকের শো’ শো’ আসা-যাওয়ায় ধুলাবালিতে চোখ বন্ধ করে পথ চলতে হয়, আবার কখনো ট্রাকের দীর্ঘ লাইন থাকায় ঠিক মত রাস্তাও পাড় হওয়া যায়না। মাঝে মাঝে তারা স্কুলেও নিয়মিত উপস্থিত হতে পারেনা অনেকে। এতে ধুলা-বালি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অধিকাংশ শিশু।
গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ুয়া যমুনা থেকে আসা শিার্থীরা জানায়, বঙ্গবন্ধুসেতুর যমুনা থেকে বিশেষ করে গোবিন্দাসী পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী যানজটের কবলে পড়তে হয়। বাইসাইকেল ও সিএনজি অথবা অটোরিকসা-অটোভ্যানে যাতায়াত করতে যে সময় লাগত অতিরিক্ত বালুবাহী ট্রাকের কারণে এখন তার চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগে স্কুলে পৌঁছতে। অন্যদিকে, অতিরিক্ত ট্রাক চলাচলের কারণে ধুলা-বালি চোখ-মুখ সহ পুরো শরীরে লেগে কাপড়-চোপড় নোংরা হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় বিভিন্ন রোগ, লেগে যায় সর্দি-জ্বর।
ওই সড়কে চলাচলকারী সিএনজি চালিত অটোরিকসা শ্রমিকরা জানান, বালুবাহী অতিরিক্ত ট্রাকের দীর্ঘ লাইনের কারণে এ সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়, সেজন্য বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনায় পড়তে হয়।
অটোরিকসা-অটোভ্যান শ্রমিকরা জানায়, অতিরিক্ত বালুবাহী ট্রাকের কারণে সেতু থেকে ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী পর্যন্ত প্রতিদিনই তীব্র যানজট লেগে থাকে। ট্রাকের কারণে সঠিক সময়ে গন্তব্য স্থানে পৌঁছতে সমস্যা হয়। এছাড়া সড়কের কিছু কিছু স্থানে অীতরিক্ত ধুলা-বালির সৃষ্টি হয়। যা বাতাসের সাথে চোখে লাগলে ঝাঁপসা দেখা যায়। শরীরে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন রোগ। তারা এ থেকে মুক্তি চান।
শুধু শিার্থী, যাত্রী, যাত্রী পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগই শেষ নয়। অভিযোগ রয়েছে পথচারীর, রাস্তার দু-পাশে থাকা নদী ভাঙা মানুষদের এবং এলাকাবাসীর। তারা উপজেলা প্রশাসন, গোবিন্দাসী এবং নিকরাইল ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেও কোন সুফল পাননি।
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আ. আওয়াল জানান, এ বিষয়ে কেউ তার কাছে অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে ভাল হয়, তারপরও তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়