আজ- বুধবার | ২৬ মার্চ, ২০২৫
১২ চৈত্র, ১৪৩১ | বিকাল ৪:৪৫
২৬ মার্চ, ২০২৫
১২ চৈত্র, ১৪৩১
২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২ চৈত্র, ১৪৩১

বাসাইলে পোস্টম্যানের বিরুদ্ধে বীমার টাকা আত্নসাতের অভিযোগ || খেসারত দিচ্ছে ৬৭ বীমা গ্রাহক

দৃষ্টি নিউজ: dristy-34টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা সদর পোস্ট অফিসের সাবেক পোস্টম্যান আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ডাক জীবন বীমার গ্রাহকদের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ উঠলেও কর্তৃপক্ষ তাকে ‘আড়াল’ করে খোদ গ্রাহকদের বীমাগুলোই বাতিল বলে গণ্য করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
৬৭ জন গ্রাহক তাদের ডাক জীবন বীমা পূনরুজ্জীবিত করণে এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল না পাওয়ায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা পোস্টমাষ্টার জেনারেলের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বাসাইল সদর পোস্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, এ রকম প্রতারিত ও বাতিল হয়ে যাওয়া গ্রাহকের সংখ্যা কমপক্ষে ৬৭ জন। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানায়, অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন বিগত ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাসাইল উপজেলা সদর পোস্ট অফিসে পোস্টম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। তখন কাউন্টার অপারেটর পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ডাক জীবন বীমা গ্রাহক তার নিকট নানা অংকের কিস্তির টাকা জমা দেন। আলমগীর হোসেন গ্রাহকদের টাকা গ্রহনের বিপরীতে রশিদ প্রদান করলেও রশিদ বইয়ের মুড়িতে টাকার পরিমাণ কম লিখে গ্রাহকদের নামের লেজার বইয়ে সেই কম টাকা জমা করে মোটা অংকের টাকা আত্নসাত করেছেন। আলমগীর হোসেন বর্তমানে মির্জাপুর উপজেলা সদর পোস্ট অফিসের পোস্টাল অপারেটর পদে দায়িত্ব পালক করছেন।
অনেক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে আলমগীর হোসেন তাদের পূর্ণ কিস্তির টাকাই আত্নসাৎ করেছেন। ফলে বীমা গ্রাহকরা নিয়মিত কিস্তি জমা দিয়ে আসলেও তা নিজেদের অনুকূলে জমা না হওয়ায় তাদের ডাক জীবন বীমা কর্তৃপক্ষ বাতিল করেছে। বীমা গ্রাহকদের অভিযোগ, এ ব্যাপারে তারা প্রধান কার্যালয় বরাবরে একাধিক অভিযোগপত্র পাঠিয়েও প্রতিকার না পাওয়ায় পুনরায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারীদের একজন বীমা গ্রাহক জলি ভূইয়া কেন্দ্রীয় সার্কেল ঢাকার পোস্ট মাস্টার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহবুব রশিদ বরাবর গত ১৮ জুলাই ২০১৬ইং  লিখিত ৬৫৭ নম্বর অভিযোগ পত্রে জানান, আমি পোস্টম্যান আলমগীর হোসেনের কাছে ২০১২ এবং ২০১৩ সালে দুই বারে মোট ৪ হাজার ৯৯২ টাকার কিস্তি জমা দিলেও পরে লেজার চেক করে জানতে পারি আলমগীর হোসেন আমার নামে ৩ হাজার ৭৪৪ টাকা জমা করে অবশিষ্ট ১ হাজার ২৪৮ টাকা আত্নসাত করেছেন। ফলে আমার নামীয় বীমাটি বাতিল হয়ে আছে। বীমা গ্রাহকদের অভিযোগ, এভাবে আলমগীর হোসেন তাদের ডাক জীবন বীমা থেকে লাখ টাকার অধিক হাতিয়ে নিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানান, একবার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও হয়তো জেলা কার্যালয়ের কোনো কর্তাব্যক্তি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে শাস্তি হতে অব্যাহতি দিয়ে তার পদোন্নতির ব্যবস্থা করে দেন। গ্রাহকরা তাদের ডাক জীবন বীমা সচল করার পাশাপাশি আলমগীর হোসেনের শাস্তি দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে বাসাইল সদর পোস্ট অফিসের সাবেক পোস্টম্যান বর্তমানে মির্জাপুর উপজেলা সদর পোস্ট অফিসের পোস্টাল অপারেটর অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন অর্থ অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, এজন্য আমি দীর্ঘদিন সাময়িক বরখাস্ত ছিলাম। গ্রাহকদের ৩০ হাজার টাকা আমি ফিরিয়েও দিয়েছি।
এ ব্যাপারে বাসাইল উপজেলা সদর পোস্ট অফিসের মাস্টার মিনহাজ উদ্দিন তাঁর অধিনস্ত পোস্টম্যান আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গ্রাহকদের বীমা সচল করার প্রক্রিয়া চলছে। তাকে একবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে পুনরায় বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়