আজ- বুধবার | ২৬ মার্চ, ২০২৫
১২ চৈত্র, ১৪৩১ | সন্ধ্যা ৬:১০
২৬ মার্চ, ২০২৫
১২ চৈত্র, ১৪৩১
২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২ চৈত্র, ১৪৩১

ভূঞাপুরের ফরিদ হত্যায় পরিকল্পনা ও অর্থায়ন করেন আ’লীগের তিন নেতা

দৃষ্টি নিউজ:

নিহত আ'লীগ নেতা রকিবুল ইসলাম ফরিদ
নিহত আ’লীগ নেতা রকিবুল ইসলাম ফরিদ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা রকিবুল ইসলাম ফরিদকে হত্যা করতে উপজেলা আওয়ামী লীগের তিন নেতা পরিকল্পনা করেন এবং তাঁরা ঘাতকদের টাকার জোগান দেন। এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার শওকত হোসেন ওরফে সৈকত শনিবার(৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য দেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, গত শুক্রবার(৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে শওকতকে টাঙ্গাইল শহরের জেলা সদর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শওকত জিজ্ঞাসাবাদে জানান, ঘটনার মাসখানেক আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের তিনজন নেতা ফরিদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া শওকত ও তাঁর সঙ্গীদের দুই লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ওই তিন নেতা। তাঁরা এক লাখ টাকা হত্যাকাণ্ডের আগে অগ্রিম প্রদান করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী শওকতসহ ছয়জন ঘটনার পাঁচ দিন আগে বৈঠক করেন। তাঁরা শপথ নেন যে কেউ ধরা পড়লে অন্য কারও নাম প্রকাশ করবেন না। ঘটনার দিন শওকত নিজ হাতে ফরিদকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, ফরিদের মোবাইল ফোনসহ সব আলামত ভাড়ই গ্রামে অবস্থিত এটিবি নামক ইটভাটায় পুড়িয়ে ফেলেন।
গত ৬ ডিসেম্বর সকালে ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম ফরিদের গলা কাটা লাশ তাঁর নিজ গ্রাম ভাড়ই মধ্যপাড়ার একটি পুকুরপাড় থেকে উদ্ধার করা হয়। আগের দিন রাত সাড়ে নয়টার পর তিনি নিখোঁজ হন।
৬ ডিসেম্বর ফরিদের ভাই ফজলুল করিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে ভূঞাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ফজলুল করিম বাদী হয়ে ১৫ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতে একটি সম্পূরক মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক তাহেরুল ইসলাম তোতা, অপর যুগ্ম-আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য আবদুল হামিদ মিয়া ভোলা, অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সরকারসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়। বিচারিক আদালত থানা ও আদালতে দায়ের করা মামলা দুটি একসঙ্গে তদন্তের আদেশ দেন।
মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে। এর আগে গোয়েন্দা পুলিশ গত ২২ জানুয়ারি এ মামলায় ভূঞাপুরের ভাড়ই মধ্যপাড়া গ্রামের মাঈনুল হাসান মাসুদকে গ্রেপ্তার করে। মাসুদও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অশোক কুমার সিংহ বলেন, শওকত এই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কথা স্বীকার করেছেন। শনিবার বিকালে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার পরিকল্পনাকারী, অর্থ জোগানদাতাসহ জড়িত সবার নাম বলেছেন। টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রুপন কুমার দাস গ্রেপ্তারকৃত শওকতের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেছেন।
আদালত-সংশ্লিষ্ট ও তদন্ত সংস্থার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শওকত আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, কিছু নেতার সঙ্গে মতবিরোধ এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ও জনপ্রতিনিধির নামও তিনি বলেছেন।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়