মির্জাপুর প্রতিনিধি:
ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলস’ নামক একটি বাসে ডাকাতি ও নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তিন দিন পর শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ওমর আলী নামে ওই বাসের এক যাত্রী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশাররফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি(সোমবার) দিনগত মধ্যরাতে আমরি ট্রাভেস নামক বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। যদিও ডাকাতির সময় দুই নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে সেসময় অভিযোগ ওঠে। তবে ওমর আলীর বর্ণনামতে, সেদিন মূলত শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে।
মামলার বাদী জানান, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসটিতে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েকজনকে রক্তাক্ত করে ডাকাতি শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি করার পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের নির্জন স্থানে বাস থামিয়ে ডাকাতদল নেমে যায়।
ডাকাতরা বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর চালক বাসটি নিয়ে গন্তব্যে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে যাত্রীদের চাপের মুখে চালক বাস নিয়ে পুনরায় যাত্রা শুরু করেন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার পর যাত্রীরা বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে যান। ওইদিন সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে বাসটি বড়াইগ্রাম থানায় ঢোকানো হয়। এসময় ডাকাতিতে জড়িত সন্দেহে বাসের চালক বাবলু আলী (৩০), সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) ও হেলপার মাহবুব আলমকে (২৮) আটক করে ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে নাটোর আদালতে পাঠায় বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ। পরে তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।
বুধবার(১৯ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। অবশেষে ঘটনার তিনদিন পর মির্জাপুর থানায় মামলা নেওয় হয়।
বাসটি বড়াইগ্রামে পৌঁছার পর মজনু আকন্দ নামে এক যাত্রী জানিয়েছিলেন, সেদিন রাত ১১টার দিকে রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজশাহী যাওয়ার জন্য বাসটি ছেড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আটজন ডাকাত ছুরি এবং পিস্তল নিয়ে বাসের চালকসহ সবাইকে জিম্মি করে। এসময় বাসের ৫০ জন যাত্রীর কাছ থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে নেয় এবং দুই নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। পরে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানা এলাকার ফাঁকা স্থানে বাস থেকে নেমে ডাকাতদল পালিয়ে যায়।
ওই যাত্রী আরও বলেছিলেন, বিষয়টি মির্জাপুর থানায় জানানো হলেও তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। পরে যাত্রীদের চাপের মুখে চালক বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিতে বাধ্য হন। যাত্রীদের কাছে ডাকাতির বর্ণনা শুনে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ চালক, হেলপার এবং সুপারভাইজারকে আটক করে মামলা নেয়।