আজ- ৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার  দুপুর ২:৪০

মির্জাপুরের পাকুল্যা-লাউহাটি সড়কের কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও!

 

দৃষ্টি নিউজ:

dristytv-2
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার পাকুল্যা-লাউহাটি সড়কটি খানাখন্দের কারণে যান চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায় এক বছর আগে সড়কটির সংস্কারের কাজ শুরু হয়; কিন্তু কাজ ফেলে উধাও হয়েছেন ঠিকাদার!
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সূত্রমতে, মির্জাপুর থেকে ঢাকা ও আশপাশের কয়েকটি জেলার সরাসরি যোগাযোগের জন্য ২০০৪ সালের মার্চে ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পাকা ওই সড়কটি চালু হয়। সড়কটি বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত।
সড়কটি দিয়ে পাশের দেলদুয়ার, নাগরপুর, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ও ঢাকার ধামরাই উপজেলা হয়ে রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার লোকজন যাতায়াত করে। ঈদের আগে ও পরে যানজট বাঁধলে বিকল্প হিসেবেও সড়কটি ব্যবহার করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে রাস্তাটিতে খানাখন্দ তৈরি হতে থাকে। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের যানবাহন চলাচলের কারণে রাস্তাটির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আর আশপাশের মাঝহালিয়া, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, বানাইল থেকে মাটি কেটে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাই এ সড়কের ওপর চাপ বেশি পড়ে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তাটির পাকুল্যা, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, কাওয়ালীপাড়া, কুরালিয়াপাড়া, পল্টন ও দেওড়া এলাকার অধিকাংশ স্থানেই খোয়া-পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অবাধে চলছে মাটিবোঝাই ট্রাক। সড়কের কোনো কোনো জায়গায় এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলছে। কারণ, বাকি অংশের ইট আর খোয়া উঠে গর্ত তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি হলে গর্তে পানি জমে যায়। তখন চলাচল করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে।
ওই সড়কের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. মোক্তার মিয়া বলেন, দেওড়া এলাকায় সড়কটির বড় গর্তে মাঝেমধ্যেই ট্রাক আটকে থাকে। এ কারণে যানবাহন ঠিকমতো চলতে পারে না। কাওয়ালীপাড়া এলাকায় প্রায় আট ফুট জায়গাজুড়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। খানাখন্দের কারণে ২৫ মিনিটের ওই রাস্তা পাড়ি দিতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগছে।
উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ফিরোজ রেজা জানান, স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আলিফ ট্রেডার্স সড়কটির মির্জাপুর অংশের ১০ কিলোমিটার এলাকা সংস্কারের জন্য প্রায় তিন কোটি টাকার কাজ পায়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিক এম আর খান টুটুল। গত বছরের ৪ আগস্ট সড়কটির কার্যাদেশ দেয়া হয়।
এ বছরের আগস্টে কাজ শেষ করার কথা ছিল; কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সময় বাড়ানোর আবেদন করে। তখন কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়। বর্ধিত এ মেয়াদ ১৫ অক্টোবর শেষ হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, ঠিকাদার সড়কটির পাকুল্যা থেকে চুকুরিয়া জলকপাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এবং কুরালিয়াপাড়া পল্টন এলাকা থেকে দেওড়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকার কাজ ফেলে রেখে চলে যান। বাকি অংশের কাজও ভালো হয়নি। ইতিমধ্যে অনেক স্থানে সড়কে আবারও খানাখন্দ হয়ে গেছে। ঠিকাদার এম আর খান টুটুলের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মির্জাপুরের পাকুল্যা অটোরিকশা, টেম্পো ও সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সিকদার বলেন, সড়কটি দিয়ে ঢাকাসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার প্রায় দুই হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। এ সড়ক দিয়ে গড়ে প্রতিদিন তিন হাজার যানবাহন চলাচল করে। এর মধ্যে মালবোঝাই ভারী যানবাহনও আছে। বিশেষ করে মাটিবোঝাই প্রায় ৪০ টন ওজনের ট্রাক চলায় সড়কটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙা রাস্তায় যানবাহনের স্প্রিং, চাকার রিং ভেঙে যায়। এতে চালকেরা দিনে গড়ে ৫০০ টাকা আয় করলে ২০০-৩০০ টাকা অটোরিকশা মেরামতেই ব্যয় করেন।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন জানান, ১০ টন ধারণক্ষমতার রাস্তাটিতে ৪০ টন পর্যন্ত মাটিবোঝাই ট্রাক ও ভারী যানবাহন চলাচল করে। সড়কের বিষয়টি টাঙ্গাইল জেলা ও মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আর ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তাগাদাপত্র দেয়া হয়েছে।
এলজিইডি মির্জাপুরের উপসহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ রেজা বলেন, তাগাদাপত্র দেয়া হলেও ঠিকাদার কোনো জবাব দেননি।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno