দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের মুন্দিরাপাড়া গ্রামে প্রেমিকের পরিবার বিয়ের দাবি মেনে না নেয়ায় প্রেমিকের বাড়িতেই বিষপানে আত্নহত্যা করেছে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী। মঙ্গলবার(২০ সেপ্টেম্বর) সকালে তানিয়ার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানাগেছে, মির্জাপুর উপজেলার মুন্দিরাপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আবু রায়হান (২২) মির্জাপুর বাজারের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মার্কেটে গার্মেন্টেসে কাজ করে। মোবাইল ফোনে একই উপজেলার বাঁশতৈল নয়াপাড়া পাঁচগাঁও গ্রামের কাতার প্রবাসী মো. নজরুল ইসলামের মেয়ে বাঁশতৈল নয়াপাড়া হাজী ময়েজ উদ্দিন দাখিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়ার(১৪) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে আবু রায়হানের। দীর্ঘ দিন প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে তানিয়াকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এভাবে দীর্ঘ দিন চলার পর রায়হানকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে তালবাহানা শুরু করে।
গত শুক্রবার(১৬ সেপ্টেম্বর) তানিয়া পালিয়ে রায়হানের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করে। তানিয়া প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করায় প্রতারক প্রেমিক রায়হান বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। গত তিন দিন ধরে তানিয়া ওই বাড়িতেই অবস্থান করে। এ ঘটনা দেখার জন্য শতশত লোকজন ওই বাড়িতে ভিড় করতে থাকে। সোমবার(১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে তানিয়া বিষপান করলে স্থানীয় লোকজন গুরুতর অবস্থায় তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু রাত সাড়ে ১১টার দিকে তানিয়া মারা যায়। এরআগে রায়হান তাকে বিয়ে না করলে আত্নহত্যা করবে বলে ওই বাড়িতে আসা দর্শকদের জানায় তানিয়া।
এ বিষয়ে রায়হানের বাবা আব্দুর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। ছেলে পলাতক রয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম আহমেদ জানান, খবর পেয়ে গুরুতর অবস্থায় আহত তানিয়াকে কুমুদিনী হাসপাতালে দেখার জন্য উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান খান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আকতারুজ্জামান, সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা মো. আহসান হাসিব খান, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম ও কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফুর রহমান দেখতে যান। তারা তানিয়াকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মাইন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তানিয়া আত্নহত্যা করার পর থেকেই রায়হান ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।