আজ- বুধবার | ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
১৭ বৈশাখ, ১৪৩২ | সকাল ১০:৩৬
৩০ এপ্রিল, ২০২৫
১৭ বৈশাখ, ১৪৩২
৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ১৭ বৈশাখ, ১৪৩২

মির্জাপুরে মসজিদের ইমামের রাজকীয় বিদায়

মির্জপুর প্রতিনিধি:

তিনি কোন সামরিক বা বেসামরিক অথবা উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা নন, নন কোন মন্ত্রী-এমপিও। তিনি ধর্মীয় আনুগত্যে বিশ্বাসী নিভৃত পল্লী এলাকার একটি মসজিদের ইমাম, নাম মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান। তিনি মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের মৃত কোরবাপন আলীর ছেলে। তিনি ঢাকার লালবাগের একটি মাদ্রাসা থেকে মাওলানা পাস করেন। প্রায় তিন যুগ ইমামতি শেষে তাকে অবসরকালীন রাজকীয় বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছেন গ্রামবাসী। বিদায়বেলায় ইমামকে ফুল ছিটিয়ে এবং ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সাথে এককালীন পেনসন হিসেবে দেওয়া হয় ৯ লাখ টাকা। পরে ঘোড়ার গাড়িতে করে ইমামকে পৌঁছে দেওয়া হয় তার বাড়িতে। মঙ্গলবার(১ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নতুন কহেলা জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খানকে এই রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। ইমামের এই রাজকীয় বিদায় অনুষ্ঠান দেখতে ভিড় করে শ’ শ’ মানুষ। তাকে সম্মানিত করতে ঘোড়ার গাড়ি বহরের সঙ্গে সঙ্গী হয়েছিল অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল। নতুন কহেলা জামে মসজিদ কমিটি এবং গ্রামবাসী ওই রাজকীয় বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

 

 

 

 

জানা যায়, ১৯৯১ সালে ৬০০ টাকা বেতনে নতুন কহেলা জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগদান করেন মাওলানা মোহাম্দ শাহজাহান খান। বিদায়ের প্রাক্কালে ইমামের বেতন ছিল ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। তার দীর্ঘ ইমামতি পেশায় থাকাকালীন এলাকায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি অসংখ্য মানুষকে কুরআনের শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি জানাজা পড়িয়েছেন হাজারের অধিক মানুষের। গ্রামের মানুষ নানা ধরনের উপহার দিয়েও তাকে বিদায় জানান। তার বিদায়ী সফর সঙ্গী হয়ে ওই গ্রামের তিন শতাধিক মানুষ ৭ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে ইমামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন। এমন বিদায় জানাতে পেরে খুশি নতুন কহেলা গ্রামবাসী। অন্যদিকে সরকারি চাকরিজীবীদের মতো পেনশন দিতে পারায় খুশি স্থানীয়রা। পুরো দেশের ইমামদের দিকে সুদৃষ্টি দিবে গ্রামবাসীর এমনটাই মনে করে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নতুন কহেলা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাশেম খান বলেন, ইমান মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান তার চাকরি জীবনে গ্রামের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই ইমামের প্রতি গ্রামবাসীর অসীম ভালোবাসা রয়েছে। আমরা গ্রামবাসী একজন উচুমানের ইমামকে বিদায় দিয়ে ব্যথিত।

বিদায়ী ঈমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান বলেন, আমি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার মানুষের জানাজা পড়িয়েছি। ৬০০ জনকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে আমি কাজগুলো করতে পেরে মহান আল্লাহরকোছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার বিদায় বেলায় এলাকার মানুষ এত বড় আয়োজন করেছে তার জন্য এলাকার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

 

 

 

 

 

 

এ ব্যাপারে নতুন কহেলা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেলিম খান বলেন, এমন বিদায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি এলাকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। ইমামের পরবর্তী জীবন ভালো কাটতে সরকারি চাকরির মত পেনশন দেওয়া হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়