আজ- বৃহস্পতিবার | ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
৩০ মাঘ, ১৪৩১ | রাত ১১:৪৭
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
৩০ মাঘ, ১৪৩১
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৩০ মাঘ, ১৪৩১

যমুনায় ডুয়েল গেজ রেলসেতু নির্মাণ করা হবে

দৃষ্টি নিউজ:

dristy-pic-23
যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতুতে পৃথক রেলসেতু নির্মাণ করা হবে। ফোরলেনের ডুয়েল গেজ সেতু দিয়ে দ্রুতবেগে যাত্রীবাহী ও কন্টেইনার ট্রেন চলাচল করবে। এ জন্য ‘যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এতে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৭৪০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ২০১ কোটি ৫৭ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত। রেল সূত্র জানায়, বিদ্যমান যমুনা সেতুর উপর চাপ কমাতেই এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
বর্তমানে বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুতে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার রেল সংযোগ রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২৫/২৬টি ট্রেন এই সেতু দিয়ে চলাচল করে। তবে ঝুঁকির কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ট্রেন চলাচল করে খুবই ধীর গতিতে। সেতুর উপর ট্রেনের গতিবেগ ঘণ্টায় ৭ কিলোমিটার বেশি তবে ১৪ কিলোমিটারের কম। তারপরেও ইতিপূর্বে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেয়েছে ট্রেন যাত্রীরা। রেল সেতুর কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু ক্রমে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে বলে ইতিপূর্বে বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল রিপোর্ট দিয়েছিল। সেই থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশাপাশি পৃথক রেল সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে সরকার ভাবতে থাকে। রেল মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুকে রক্ষা করতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশে পৃথক একটি রেলসেতু নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। মহাসড়কের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ফোরলেন ডুয়েলগেজ রেলসেতু নির্মাণ করা হবে। এতে করে যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশাপাশি ওয়াগন ও কন্টেইনার বাল্ক অধিক পরিমাণে বহন করা সম্ভব হবে। দেশের উত্তরাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ নিরাপদ ও দ্রুতগামী রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগ পাবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ে এখন ‘যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প’ একটি আলোচিত বিষয়। প্রকল্পের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। যতো দ্রুত প্রকল্পের যাবতীয় কাজ শেষ করা যায় সে লক্ষ্যেই সব কাজ এগিয়ে চলছে বলে জানান প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা।
এর সাথে এগিয়ে চলছে পদ্মা রেলসেতু প্রকল্পের কাজও। পদ্মা সেতুতে রেলওয়ে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক)। ডাবল ডেকার পদ্মাসেতুর নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। ঢাকা থেকে ট্রেন যাবে খুলনা পর্যন্ত। এ ছাড়া তৃতীয় পর্যায়ে পদ্মা সেতু হয়ে বরিশাল পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হবে। এজন্য পৃথক প্রকল্প হাতে নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
সূত্র জানায়, যমুনায় নতুন রেলসেতু নির্মাণের মাধ্যমে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করা হবে। একই সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে ভারী মালামাল পরিবহনে কন্টেইনার বাহন বাড়ানো হবে। এতে করে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে আর্থিক সচ্ছলতা বাড়বে। নতুন রেলসেতুর মাধ্যমে গ্যাস সংযোগ বাড়ানো হবে। রেল সূত্র জানায়, যমুনায় রেলসেতু নির্মাণের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বছরওয়ারী প্রকল্পটির জন্য টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এই প্রকল্পে ঋণ দেবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান হবে সেতুটির। ফলে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক)ভুক্ত চারটি দেশের সঙ্গে রেলপথে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়বে। ভারত, মায়ানমার, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব হবে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যমুনায় রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের মে মাসে জাপান সফরে গিয়েছিলেন। সেই সময় প্রকল্পটির বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছিল। প্রকল্পের তাৎপর্য এবং গুরুত্বের কথা বিবেচনা এবং বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে জাইকা ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়