প্রথম পাতা / অপরাধ /
যৌন নিগ্রহের মামলায় আ’লীগ নেতা বড়মনি কারাগারে
By দৃষ্টি টিভি on ১৫ মে, ২০২৩ ৫:১২ অপরাহ্ন / no comments
দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলে এক কিশোরীর দায়েরকৃত যৌন নিগ্রহের মামলায় শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড়মনিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার(১৫ মে) দুপুরে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহমুদুল মহসীন তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ নেতা বড় মনি কিশোরীকে যৌন নিগ্রহের মামলায় জামিন নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আদালতে হাজির হন। বড়মনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির বড় ভাই।
টাঙ্গাইল আদালতের পরিদর্শক তানবীর আহমেদ জানান, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া বড়মনি কিশোরীকে যৌন নিগ্রহের মামলায় হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। গত ১৮ এপ্রিল(মঙ্গলবার) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি ইকবাল কবির ও একেএম রবিউল হোসেনের আদালত তাদের চার সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু গত ৩০ এপ্রিল চেম্বার জজ আদালত চার সপ্তাহের জামিন স্থগিত করে ২ সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
রোববার(১৪ মে) ছিল ২ সপ্তাহের শেষ দিন। টাঙ্গাইল আদালতের একজন আইনজীবীর মৃত্যু জনিত কারণে রোববার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তিনি সোমবার দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
টাঙ্গাইল আদালতের সরকারি কৌঁশুলী (পিপি) এস আকবর খান জানান, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বড়মনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থণা করেন। এসময় অর্ধ শতাধিক আইনজীবী তার পক্ষে জামিন শুনানিতে অংশ নেন। বাদি পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের বিরোধীতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রকাশ, বর্তমান সময়ে টাঙ্গাইলের আওয়ামী রাজনীতির জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব গোলাম কিবরিয়া বড় মনির নামে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে মামলা দায়ের হওয়ায় বিষয়টি লুফে নেয় তার বিরোধী ঘরাণার রাজনীতিকরা। মামলা দায়ের করার পর স্থানীয় আওয়ামীলীগের একটি অংশও তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য শহরে পোস্টার-ব্যানার টাঙায়।
আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া বড় মনির শাস্তির দাবিতে সচেতন নারী সমাজের ব্যানারে শহরে মিছিল-মিটিং করার প্রয়াশ পায়। গোলাম কিবরিয়া বড় মনির কর্মী-সমর্থকরাও পাল্টা অনুরূপ কর্মসূচি পালন করে। এতে শহরে আওয়ামী রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। পরে উচ্চ আদালত থেকে গোলাম কিবরিয়া বড় মনি ও তার স্ত্রী আগাম জামিন পেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল রাতে এক কিশোরী বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় গোলাম কিবরিয়া বড়মনির বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও মারধর ও যৌন নিগ্রহে সহযোগিতা করার জন্য আসামি করা হয়। মামলায় ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
মামলায় ওই কিশোরী (১৭) অভিযোগ করেন, গোলাম কিবরিয়া তার পূর্বপরিচিত। গত ১৭ ডিসেম্বর তাকে শহরের আদালত পাড়ায় একটি ভবনে ডেকে নেন। সেখানে তাকে যৌন নিগ্রহ করেন ও আপত্তিকর ছবি তুলে রাখেন। পরে আপত্তিকর ওই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একাধিকবার যৌন নিগ্রহ করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, একপর্যায়ে ওই কিশোরী অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি গোলাম কিবরিয়া বড়মনি জানার পর গর্ভস্থিত সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। ওই কিশোরী রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ তাকে শহরের আদালত পাড়ায় গোলাম কিবরিয়ার শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে ওই কিশোরীর উপর আবার যৌন নিগ্রহ চালান তিনি।
ওই কিশোরী গত ৬ এপ্রিল বেলা তিনটার দিকে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেসকে জান্নাত রিপা কিশোরীর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে কিশোরীকে তার এক আত্মীয় শামীমা আক্তারের জিম্মায় দেন আদালত। ওই সময় ডাক্তারী পরীক্ষায় ওই কিশোরী ২৫ সপ্তাহের অন্তঃস্বত্তা বলে জানান টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. সাদেকুর রহমান।
মন্তব্য করুন
সর্বশেষ আপডেট
-
যায়যায়দিন সমাজের প্রকৃত চিত্রের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে
-
টাঙ্গাইলে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপিত
-
বাসাইলে আড়াই লাখ টাকার চায়না জাল ধ্বংস
-
গণতন্ত্র মঞ্চের রোড মার্চ টাঙ্গাইলে নির্ধারিত সমাবেশ করতে পারেনি
-
কালিহাতীতে মাদ্রাসার ভূমি জবরদখল ॥ উদ্ধারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
-
বাসাইলে পুকুরে ডুবে বৃদ্ধার মৃত্যু
-
টাঙ্গাইলে নিষিদ্ধ অনলাইন স্ক্যামিংয়ের ভয়াল থাবা!
-
তীব্র গরমে শিশুদের খেলার আয়োজন করা ঠিক হয়নি :: ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী
আপডেট পেতে লাইক করুন
