আজ- শুক্রবার | ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
২৪ মাঘ, ১৪৩১ | সকাল ৭:২৮
৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
২৪ মাঘ, ১৪৩১
৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২৪ মাঘ, ১৪৩১

লেখাপড়া বাদ দিয়ে বুলেট এখন পান বিক্রেতা

20160615_195618-copy

আভাব অনটনের সংসারে শিশু বয়সে উপার্জনশীল বুলেট। যে বয়সে বুলেট বই হাতে পাঠশালায় যাওয়ার কথা। সে বয়সে উপার্জন করে সংসার চালায়। যে সময়টাতে তার পারিবারিক শিক্ষা গ্রহণের কথা, কিন্তু ঠিক সেই সময়ই শুরু হলো অবহেলিত জীবন। বুলেট নামটি আসলে বাবা-মায়ের দেয়া কোন নাম নয়। তার কর্মচঞ্চলতা দেখে এই নামেই ডাকে স্থানীয় জনসাধারণ। বুলেটের আসল নাম ফেরদৌস মিয়া। সে বাটাজোর গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে ।
ফেরদৌস যখন ছোট তখন তার মা ফরিদা বেগমের সাথে পিতা খলিল মিয়ার বিয়ে বিচ্ছদ ঘটে এবং তারা চলে আসে নানা বাড়ি সখীপুরে। ফেরদৌস বর্তমানে সখীপুর উপজেলার বোয়ালী গ্রামের হাফেজ উদ্দিনের নাতি হিসেবেই এলাকায় পরিচিত।
নানা বড়িতেও আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় বেঁচে থাকার তাগিদে শিশু বয়স থেকেই বেছে নিতে হয়েছে কর্মজীবন। বুলেটের বর্তমান বয়স ১২ বছর। পারিবারিক অভাব দূও করতে শিশু বয়সে এখন নানা পেশার সাথে সম্পৃক্ত সে। সারাদিন পরিশ্রম করে যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে তাদের অভাবের সংসার।
গামছা গলায় পানের ঝাকা নিয়ে ছেলেটি এখন হাটে বাজারে পান সিগারেট বিক্রি করছে। বোয়ালী, নলুয়া, তক্তারচালা, শোলাপ্রতিমা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে সে পান সিগারেট বিক্রি করে। বুলেট জানায়, এক সময় সে তার সমবয়সী সকলের সাথে খেলতো, বেড়াতো এবং স্কুলেও যেত। কিন্তু এখন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজে ব্যস্ত থাকায় খেলতে পারে না। তাই কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে অন্য বাচ্চাদের খেলা দেখে।
কি কারণে তাকে পান-সিগারেট বিক্রি করতে হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে বুলেট জানায়, অনেক বছর আগে বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরবর্তীতে তার এক বড় বোনের বিয়ে দেয়া এবং তাদের সংসার চালানোর জন্যই নিরূপায় হয়ে এত অল্প বয়সেই তাকে দায়িত্ব নিতে হয়েছে।
সে আরও জানায়, প্রতিদিন পান সিগারেট বিক্রি করে ১৫০থেকে ২০০ টাকা আয় থাকে। সারাদিন উপার্জন করে যে টাকা রুজি হয়, সেখান থেকে বাড়িতে খাবার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র কেনে এবং রাতে বাড়িতে ফিরে বাকি টাকা মায়ের হাতে তুলে দেয়। এতে মা খুশি হয়ে এ টাকা থেকে যা দেন, তা পেয়েই সে তুষ্ট । শিশুদের শ্রম তো নিষিদ্ধ এমন প্রশ্ন করলে সে পাল্টা প্রশ্ন করে বলে, ‘কাম না করলে সংসার চলবো কেমনে? আমরা খাব কি?।
পড়ালেখা কোন পর্যন্ত করেছো জিজ্ঞাসা করলে মাথা নিচু করে প্রথমে লজ্জায় কিছু না বললেও পরে জানায়, পোলাপানের নগে প্রাইমারিতে কিছু দিন গেছিলাম। পরে আভাবের কারণে পড়ালেখা বাদ দিয়ে এখন বিভিন্ন ধরনের কাজ করি।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়