আজ- রবিবার | ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫
১২ মাঘ, ১৪৩১ | রাত ৪:১৩
২৬ জানুয়ারি, ২০২৫
১২ মাঘ, ১৪৩১
২৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২ মাঘ, ১৪৩১

লৌহজং নদী পুনরুদ্ধারে অগ্রগতি নিয়ে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়(ভিডিও সহ)

দৃষ্টি নিউজ:

dristy-pic-60
টাঙ্গাইলের লৌহজং নদী পুনরুদ্ধার ও দুইপাড়ে সড়ক নির্মাণের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। শনিবার(১৭ ডিসেম্বর) সকালে দখল উচ্ছেদ ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ১৯তম দিনে জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন পুনরুদ্ধার অভিযান কাজের অগ্রগতি বিষয়ে নদীপাড়ে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
এ সময় টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মাহবুব আলম পিপিএম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) সানোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলা সহ বিভিন্ন প্রিণ্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময়ে জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন জানান, লৌহজং নদীর দুই পাড়ের জায়গা দখলকারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজ উদ্যোগে স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে প্রশাসনের নির্দেশে কর্তব্যরত সেচ্ছাসেবকরা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পুনরুদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। তিনি জানান, লৌহজং নদী পুনরুদ্ধার, খনন ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি প্রকল্প তৈরি করে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনে নৈতিক সমর্থন পেয়েছে, আগামীকাল(১৮ ডিসেম্বর) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বোর্ড মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে চলমান অভিযান আরো দ্রুত গতিতে চালানো যাবে।[vsw id=”dVPVQ_pTFRo” source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”no”]
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কোন স্থাপনা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রধান, সাংবাদিক, প্রতিটি পেশার প্রতিনিধি ও সরকারের সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঢালান-শিবপুর থেকে মির্জাপুরের বংশাই নদী পর্যন্ত প্রায় ৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই লৌহজং নদী। পুরো নদী এলাকাই দখল ও দুষণমুক্ত করার পরিকল্পনা তাদের রয়েছে। তবে যেহেতু টাঙ্গাইল শহর এলাকার প্রায় ১০ কিলোমিটার দখল-দুষণ মুক্ত করা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। তাই ওই এলাকায় প্রথম ধাপে কাজ শুরু করা হয়েছে- এটা চলমান থাকবে। গত ১৯ দিনে নদীর দুই পাড়ে এক কিলোমিটার করে প্রায় দুই কিলোমিটার দখলমুক্ত হয়েছে। যেসব ভূমিহীন পরিবার অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাদের পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
প্রকাশ, টাঙ্গাইল শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ নদীটি দখল আর দূষণের ফলে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দীর্ঘ ৫০ বছর পর গত ২৯ নভেম্বর সকাল থেকে সমন্বিত উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ অভিযানে অংশ নিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, সিটিজেন জার্নালিস্ট গ্রুপসহ কয়েক হাজার সদস্য। dristy-pic-61
এই নদীর টাঙ্গাইল শহরের উপর দিয়ে বয়ে চলা প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকার দুপাশে কয়েক হাজার বাড়ি-ঘর অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠে নদী দখল করে সরু খালে পরিণত করেছিল। অথচ এক সময় এই নদী দিয়ে জাহাজ ও লঞ্চ চলতো শহরের আমঘাট পর্যন্ত। নদী দখল হয়ে নদীটি মৃতপ্রায় অবস্থায়। এই নদী ও নদীর পরিবেশ বাঁচাতে ২৯ নভেম্বর থেকে সকলের অংশগ্রহণে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। সকাল ১১টায় টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বেড়াডোমা ব্রিজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবৈধ স্থাপনা উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন। এই অভিযানে বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যদের কাঁধ কাঁধ মিলিয়ে দখলকারীরাও স্বতঃস্ফূর্ত এই কাজে অংশ নিচ্ছেন।
এরআগে কয়েক মাস যাবত লৌহজং নদী দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরে মাইকিং, নদীর ধারে মানববন্ধনসহ ফেসবুকে জনমত গঠনের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ‘লৌহজং নদী রা করি- পরিবেশ বান্ধব টাঙ্গাইল গড়ি’ স্লোগানে সেচ্ছাসেবকরা পুনরুদ্ধার অভিযানে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশ নিচ্ছে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়