আজ- রবিবার | ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫
১২ মাঘ, ১৪৩১ | রাত ৪:০৯
২৬ জানুয়ারি, ২০২৫
১২ মাঘ, ১৪৩১
২৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২ মাঘ, ১৪৩১

‘শ্বশুর-শ্বাশুরি হাত-পা ধরে রাখে আর স্বামী দা দিয়ে কোপায়’

দৃষ্টি নিউজ:

dristy-pic-26
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যৌতুকের কারণে স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুরির নির্মম নির্যাতনে ফাতেমা খাতুন লিয়া(২৫) নামে এক প্রসূতি টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এ ঘটনায় ফাতেমার বাবা তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে স্বামী শফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে শ্বশুর-শাশুরির বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের চাঁন আমুলা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শফিকুল ইসলামের সাথে ছয় বছর আগে একই উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে ফাতেমা খাতুন লিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে শফিকুল ইসলামকে ১ লাখ টাকা ও মেয়ের গহনা বাবদ ২ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার দেন তোফাজ্জল হোসেন। বিয়ের পর ভালোই চলতে থাকে তাদের দাম্পত্য জীবন। বছর দুই পরে তাদের ঘরে জন্ম নেয় একটি কন্যা সন্তান। ওই কন্যা সন্তানই কাল হয় ফাতেমার জীবনে। স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুরি মিলে নানা অজুহাতে অত্যাচার চালাতে থাকে তার উপর। দাবি করতে থাকে মোটা অঙ্কের যৌতুক। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আরো ৭০ হাজার টাকা দেয়া হয় শফিকুল ইসলামকে। তাতেও মন ভরেনা তার।

dristy-pic-25আরো এক লাখ টাকা দাবি করে। ফাতেমা ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অত্যাচারের খড়গ নেমে আসে তার উপর। প্রতিনিয়ত চলতে থাকে নির্মম অত্যাচার। এক সপ্তাহ আগে আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় ফাতেমা। এতে আরো মাথা বিগড়ে যায় স্বামী শফিকুলের। গত মঙ্গলবার রাতে স্বামী শফিকুল ইসলাম, শাশুরি মোছা. রোকেয়া বেগম ও শ্বশুর মো. আব্দুল হামিদ একত্রে ফাতেমার ঘরে ঢুকে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। এ সময় শ্বশুর-শ্বাশুরি ফাতেমার হাত-পা ধরে রাখে আর স্বামী শফিকুল ইসলাম দা এনে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এসময় ফাতেমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এঘটনায় ফাতেমার বাবা তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে স্বামী শফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে শাশুরি মোছা. রোকেয়া বেগম ও শ্বশুর মো.আব্দুল হামিদের বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

[vsw id=”H9EoAf7FFxw” source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”no”]
শনিবার(১০ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ১৩ নম্বর বেডে গিয়ে দেখা যায়, মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে বাকরুদ্ধ ফাতেমা। আর তার পাশে শুয়ে হাত-পা নাড়াচ্ছে ৭ দিনের কন্যা অহনা। যে সময় মায়ের ভালোবাসা পাওয়ার কথা ছিল, ঠিক সে সময় বাবা নামক হিং¯্র নরপিশাচের থাবায় মায়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুটি। মাথা ও ঘাড়ে বেশ কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়েছে ফাতেমার, কথা বলার অবস্থা নেই তার। পাশে আহাজারি করছেন মা হালিমা ও বাবা তোফাজ্জল হোসেন।
ফাতেমার মা হালিমা বেগম জানান, আমার মেয়ের কোন দোষ ছিলনা। তারা নির্মমভাবে অত্যাচার করেছে আমার মেয়েকে। আমি তাদের কঠিন শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম কাওছার চৌধুরী বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়