রজত পাল:
এক সময় মানুষ স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে। পরনির্ভরশীলতার কুফল সম্পর্কে সচেতন হয়। তখন ফটোগ্রাফারের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেরাই নিজেদের ফটো তুলতে থাকে। যাকে বলা হয় সেলফি। অতঃপর পৃথিবীর অভিধানে যুক্ত হয় নতুন একটি শব্দ ‘সেলফি’।
ধীরে ধীরে ভাইরাসের মতো গোটাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে সেলফি। যত্রতত্র মানুষ সেলফি উঠাতে শুরু করে। ফেসবুকের পাতা ছেয়ে যায় সেলফিতে। সেলফির মতো এত অল্প সময়ে অন্য কোনো কিছু এমনকি প্রাণঘাতী রোগগুলোও বিকাশ লাভ করতে পারেনি। সেলফির হাত ধরে অনেক কিছু আবিষ্কৃৃত হয়েছে। যেমন- সেলফি স্টিক, স্মার্টফোনে উন্নত ফ্রন্ট ক্যামেরা ইত্যাদি।
সেলফির কারণে শুধু ব্যাক ক্যামেরাওয়ালা হ্যান্ডসেটগুলো তাদের স্বর্ণযুগ ও জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলে নিঃস্ব হয়ে যায়। পাতি ফটোগ্রাফি পেশা বিপর্যস্ত হয় এবং পাতি ফটোগ্রাফারদের কিছুটা অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়।
এই পৃথিবীতে কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। সেলফি তুলতে ফ্রন্ট ক্যামেরা অন করলেই কিছু বিশেষ শ্রেণির মানুষের মুখাকৃতি পাল্টে যায়। আজকাল মাত্রাতিরিক্ত সেলফি তোলাকে মানসিক রোগ হিসেবে আখ্যা দেয় সভ্য সমাজ।
ঐতিহাসিকগণ ধারণা করেন, প্রবল রাজনৈতিক, পারিবারিক, সামাজিক চাপে ও তাপে সংকুচিত এবং গলিত হয়ে একবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে আস্তে আস্তে সেলফি শব্দটি বিলুপ্ত হতে শুরু করে পৃথিবী থেকে।
লেখকঃ শিক্ষার্থী। ১ম বর্ষ, সংস্কৃত বিভাগ, জগন্নাথ হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।