আজ- বুধবার | ২৬ মার্চ, ২০২৫
১২ চৈত্র, ১৪৩১ | সন্ধ্যা ৬:০০
২৬ মার্চ, ২০২৫
১২ চৈত্র, ১৪৩১
২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২ চৈত্র, ১৪৩১

২০০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক

দৃষ্টি নিউজ:

dristy-pic-2প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। মঙ্গলবার(১৮ অক্টোবর) বিকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ সমর্থন জানান।
সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার সরকার যে পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে, তার সঙ্গে তিনি সম্পূর্ণ একমত।’
তিন দিনের সফরে এসে বাংলাদেশিদের আতিথেয়তা, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য জয়ে নেওয়া নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগ দেখে অভিভূত ও মুগ্ধ জিম ইয়ং কিম। গতকাল বরিশালের মানুষ যেভাবে তাঁকে বরণ করেছে, তার ভূয়সী প্রশংসা করে কিম বলেন, ‘এখানকার মানুষের অতিথিকে সম্মান জানানো ও নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা অসাধারণ। দীর্ঘদিন ধরে এ দেশ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। এককথায় বলতে পারি, এ দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল।’ ঢাকা ছাড়ার আগে গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি সহমর্মিতা জানিয়েছেন ওই সব মানুষের প্রতিও, যারা প্রতিনিয়ত জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আগামী তিন বছরে বাংলাদেশকে ২০০ কোটি ডলার (প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা) ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী। আমাদের দুই পক্ষের সম্পর্কটা অত্যন্ত মজবুত, যা ভাঙা কঠিন। আমরা বাংলাদেশ থেকে শিখছি, আর তোমরা আমাদের কাছ থেকে শিখছ।’
গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কিমের সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব জানান, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তার জন্য বিশ্বব্যাংকের পূর্ণ অঙ্গীকারের কথাও বলেছেন বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট। এ খাতে তহবিল সংগ্রহে বাংলাদেশকে সহযোগিতার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশকে দারুণ সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন কিম। বাংলাদেশে সহজে ব্যবসা করার সুযোগ থাকার বিষয়টি অন্যদের কাছে তুলে ধরবেন বলেও জানিয়েছেন।untitled-1-copy
এদিকে বাসস জানিয়েছে, কিমের সঙ্গে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকারের মূল লক্ষ্য জনগণের জন্য খাদ্য ও বাসস্থানসহ মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা। তিনি বলেছেন, ‘দেশের দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারের বিভিন্ন বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপারে সরকারের পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেককে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার কাঠামোর ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন স্তর, ইউনিয়ন পরিষদের বিগত নির্বাচনে প্রায় ৪৫ হাজার নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সর্বত্র নারীরা সাফল্য লাভ করছে। নারীরা বর্তমানে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, শিক্ষা, ক্রীড়া, সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে ক্ষেত্রে উচ্চপদে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। সে সময় ঘাতকরা কাউকে জাতির পিতার নামটি পর্যন্ত উচ্চারণ করতে দেয়নি।
শেখ হাসিনা দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সম্পর্কে বলেন, ১৯৯৬ সালে তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবারের মতো বেসরকারি টিভি চ্যানেলের লাইসেন্সের অনুমোদন দেয়। ফলে বর্তমানে দেশে ২৪টি চ্যানেল চলছে এবং আরো অনেক চ্যানেল চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। এতে এ সেক্টরে অনেক কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী টেলিকম সেক্টরের উন্নয়ন সম্পর্কে বলেন, তাঁর সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি মন্ত্রীর মালিকানাধীন মাত্র একটি কম্পানির একচেটিয়া ব্যবসা ভেঙে দিয়ে এ সেক্টরে আরো কম্পানি করার সুযোগ করে দেয়।  ফলে এ খাতে ব্যবসা আরো প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয় এবং কলরেট উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমে যায়।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, ইআরডি সিনিয়র সচিব মেজবাউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সুভাষ চন্দ্র গ্রেগ ও বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
এ দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল : বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জিম ইয়ং কিম বলেছেন, নিজের চোখে বাংলাদেশের ইতিহাসকে প্রস্ফুটিত হতে দেখেছি আমি। নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি এ জন্য যে আমি বাংলাদেশ বিষয়ক ছাত্র।’ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় গতকাল ২০০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার ঘোষণা দেওয়ার আগের দিনই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক শেষে শিশুদের অপুষ্টি রোধে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন কিম। মূল ঋণ সহায়তার বাইরে এই সফরে আগামী তিন বছরে বাংলাদেশকে বাড়তি ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিলেন জিম ইয়ং কিম।
আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস পালন উপলক্ষে গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় আসেন বিশ্বব্যাংক প্রধান। তিন দিনের সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতসহ বেসরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অংশ নেন গণবক্তৃতায়। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শনে বরিশালে যান কিম। সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে গতকাল বিকেলে ঢাকার বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান চিমিয়াও ফান, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানট ডিক্সন, বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা আইএফসির দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের পরিচালক ম্যানগিসটো অ্যালেমায়েহু ও ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। গতকাল রাতেই ঢাকা ত্যাগ করেন বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট।
সংবাদ সম্মেলনে কিমের বক্তৃতার বড় একটি অংশজুড়ে ছিল এ দেশের মানুষের সাফল্যগাথা। বলেছেন, ‘দারিদ্র্যকে জয় করতে মানুষ যেসব উদ্ভাবনী ধারণা বের করেছে, তা দেখে আমি সত্যিই অভিভূত।’ জিম ইয়ং কিম বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রতিনিয়ত জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির সঙ্গে যুদ্ধ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব দেশ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশের নাম সবার আগে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে দরিদ্র মানুষের। অবশ্য দুর্যোগ প্রতিরোধে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা অন্য দেশের তুলনায় ভালো বলে অভিমত তাঁর। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এখানে যেসব বড় বড় ঘূর্ণিঝড় ও সাইক্লোন হয়েছে, তাতে ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় তাই বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ২০০ কোটি ডলার আর্থিক সহযোগিতা দেবে। সোমবার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংককে এ খাতে অর্থায়ন বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
কিমের প্রতি সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে যেসব জঙ্গি হামলা হয়েছে তাতে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছু দেখেছেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ সব দেশের জন্যই সমস্যা। যুক্তরাষ্ট্রেও জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলা হয়। ফ্রান্সে হয়। কোনো দেশই সন্ত্রাসমুক্ত নয়। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। তবে এ দেশের সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখে আমি সন্তুষ্ট। আজকের বাংলাদেশকে দেখে আমি সত্যিই খুব মুগ্ধ। আমি অনেক কিছু শিখেছি।
যে পদ্মা সেতু নিয়ে এত জল ঘোলা হলো, সে পদ্মা সেতুর দুর্নীতির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জিম ইয়ং কিম বলেন, দুর্নীতির বিষয়ে বিশ্বব্যাংক সব সময় জিরো টলারেন্স দেখিয়ে আসছে। এ ক্ষেত্রে কোনো সমঝোতা নয়। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কোনো প্রকল্পে দুর্নীতি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। সোমবার পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে করা আলাদা এক প্রশ্নের জবাবে কিম অবশ্য বলেছিলেন, পদ্মা সেতুর জন্য যে ১২০ কোটি ডলার বরাদ্দ ছিল, সেটি কেটে নেওয়া হয়নি। অন্য প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রতি কিছু পরামর্শও দিয়ে গেছেন কিম। বলেছেন, প্রতিবেশী দেশের তুলনায় এখানে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেশ কম। এটি বাড়াতে হলে অবকাঠামোতে আরো বেশি খরচ করতে হবে। তিনি বলেন, সুশাসনে আরো মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ আছে। অবশ্য সেটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করা হয়েছে। বিচার বিভাগ, সরকারি ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। একই সঙ্গে সুধী সমাজের কাজের পরিধিও বাড়াতে হবে বলে জানান তিনি।
আগামীতে বাংলাদেশের কোন কোন খাতে সহযোগিতা থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যানট ডিক্সন বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো, জলবায়ু পরিবর্তনে বিশেষ গুরুত্ব দেবে বিশ্বব্যাংক।  তবে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ থাকবে জ্বালানি বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে। এ ছাড়া বিবিআইএন সফল করতেও বিনিয়োগ করা হবে বলে জানান ডিক্সন।
বাংলাদেশে নারীদের ব্যাপক উত্থানের প্রশংসা করে কিম বলেন, যেকোনো উন্নয়নে নারীদের অংশগ্রহণ বিশাল অর্জন। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ খুবই জরুরি। যেটা বাংলাদেশ করে দেখিয়েছে। সংসদসহ তৃণমূলেও বিভিন্ন আইন প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে।
কিম বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটাই আমার প্রথম বাংলাদেশ সফর। আর প্রথম সফর হিসেবে আমি এ দেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য ২০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি। আগামী তিন অর্থবছরে এ অর্থ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, আমি এখানকার তৃণমূলের মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আমাকে সাইক্লোন ও ঝড়ের ঝুঁকির কথা বলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, স্বাধীনতার পর গত ৪৫ বছরে বিশ্বব্যাংক তাদের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) মাধ্যমে সহজ শর্তে দুই হাজার ৪০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। আইডিএ ১৮ প্যাকেজের আওতায় আগামী তিন অর্থবছরে (২০১৭-২০) ৭৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়া হবে। যেটি কার্যকর হবে আগামী বছর জুলাই থেকে। যদিও চলমান আইডিএ ১৭ প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশকে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা রয়েছে। সে হিসাবে আগামী তিন বছরে বাংলাদেশের জন্য ঋণ সহায়তা বাড়বে ৫০ শতাংশ। সংবাদ সম্মেলনে কিম বলেন, আইডিএভুক্ত যতগুলো দেশ আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে কম সুদে ঋণ সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের রেকর্ড সব সময় ভালো। কোনো সময় দেশটি দেরি করেনি। ঋণের সুদের হারের বিষয়ে তিনি বলেন, সুদের হার ২ শতাংশ হবে। তবে সেটা আরো পরে।
জিম ইয়ং কিম তাঁর তিন দিনের সফরে স্কুল ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখেছেন। গ্রামের মানুষ যেভাবে সোলার হোম সিস্টেম ব্যবহার করছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। গ্রামের দরিদ্র মানুষ তাঁকে জানিয়েছেন, সৌরবিদ্যুতে তাঁদের জীবনমানের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। তাঁরা আগেই জানতে পারছেন ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের খবর। সাইক্লোন শেল্টার তৈরি করা হয়েছে। বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা হয়েছে। কিম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বাংলাদেশের আরো অনেক করণীয় আছে।
জিম ইয়ং কিমের এই সফরকে বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখছে সরকার। বিশেষ করে তিনি যেভাবে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করে গেছেন, তা আগামী দিনে এ দেশের পথ চলা সহজ করে দেবে বলে অভিমত নীতিনির্ধারকদের।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়