আজ- মঙ্গলবার | ১৪ অক্টোবর, ২০২৫
২৯ আশ্বিন, ১৪৩২ | রাত ১২:১৯
১৪ অক্টোবর, ২০২৫
২৯ আশ্বিন, ১৪৩২
১৪ অক্টোবর, ২০২৫, ২৯ আশ্বিন, ১৪৩২

ঐতিহাসিক মাতৃসদন হাসপাতাল অন্যত্র সরানোর পায়তারা!

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইল শহরের সন্তোষে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক ‘ওবায়দুল্লাহ আল ওবায়দি সোহরাওয়ার্দী মাতৃসদন ও হাসপাতাল’টি অন্যত্র সরানোর পায়তারা চলছে। হাসপাতালটি অন্যত্র সরানোর খবরে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছে। যে কোনো সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে।

মাতৃসদন ও হাসপাতালটি মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে রাখার দাবিতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার(২১ সেপ্টেম্বর) পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।


জানা যায়, ১৯৫৭ সালে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ‘ওবায়দুল্লাহ আল ওবায়দি সোহরাওয়ার্দী মাতৃসদন ও হাসপাতাল’টি প্রস্তাবিত তৎকালীন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রতিষ্ঠা করেন। নানা আন্দোলন-সংগ্রামের নীরব সাক্ষী ওই হাসপাতাল।

অবিভক্ত পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সন্তোষ ও আশপাশের এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করছে। হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটি সন্তোষ থেকে অন্যত্র সরানোর পায়তারা করছে। হাসপাতালটি সন্তোষেই রাখার দাবিতে এলাকাবাসী ২১ সেপ্টেম্বর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। এছাড়াও এলাকায় শাস্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নিমিত্তে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছেও পৃথক একটি লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী জানায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে হিসাব বিজ্ঞান এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে বহিরাগতদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কয়েক দফা বাকবিতন্ডা ও ঝগড়া হয়। এরপর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।


স্থানীয় বাসিন্দা মাছুম আহমেদ জানান, ‘হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সন্তোষ ও এর আশপাশের লোকজন সহজে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটি সন্তোষ থেকে অন্যত্র সরানোর পায়তারা করছে। জানতে পেরে এলাকাবাসী জোটবদ্ধ হয়েছে। তারা কোনোভাবেই এই হাসপাতালটি অন্যত্র সরাতে দেবে না।


তিনি আরও জানান, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা ক্যাম্পাস থেকে বাইরে এসে এলাকার পাড়া-মহল্লায় হামলা চালাচ্ছে। একাধিক লোকজনকে মারধর করেছে। হাসপাতালটি অন্যত্র সরানোর অংশ হিসেবে প্রতিনিয়ত তারা এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের যন্ত্রণায় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে।


স্থানীয় বীর মুুক্তিযোদ্ধা ছিদ্দিক হোসেন জানান, তারা কোনোভাবেই হাসপাতালটি অন্যত্র সরাতে দেবেন না। এলাকাবাসী হাসপাতালটি সন্তোষ অথবা এর আশপাশে রাখার দাবি জানিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।


মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ডক্টর মো. ফরহাদ হোসেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মুঠোফোনে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।


টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, তার কাছে দেওয়া আবেদনটি তার হাতে এসে পৌঁছায়নি। কাগজটি হাতে পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর শাস্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়