নাড়ির টানে ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কে খোলাট্রাক-পিকআপে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ

দৃষ্টি নিউজ:

ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র একদিন। ঈদের আনন্দ পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে খোলাট্রাক, পিকআপভ্যান ও থ্রি-হুইলারে চেপে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ। বাস ভাড়া বেশি নেওয়ায় প্রচণ্ড রোদে খোলা ট্রাক, পিকআপভ্যান ও থ্রি-হুইলারের যাত্রী হয়েও যাচ্ছেন শিশু-বৃদ্ধ নারী ও পুরুষ।

শনিবার(১৫ জুন) দুপুরে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কের এলেঙ্গা বাস স্টেশন, রাবনা বাইপাস, আশেকপুর বাইপাস, জোকারচর, হাতিয়া ও সল্লা এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

পাবনার সন্দেশ আলী নামে এক পিকআপভ্যানের যাত্রী জানান, ঢাকা থেকে বাসে দুইগুণেরও বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এজন্য ঝুঁকি নিয়ে হলেও ৩০০ টাকা ভাড়ায় টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত এসেছেন। পিকআপভ্যানটি আর যাবেনা। এরপরের রাস্তাটুকুও তিনি খোলাট্রাক বা সিএনজি চালিত অটোরিকশা বা পিকআপভ্যানে চেপে যাবেন।

সিরাজগঞ্জের আহমদ আলী জানান, গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছেন। তিনি একটি পোশাক কারখানায় চাকুরি করেন। এবার বেতন-বোনাসসহ তিনি ২০ হাজার টাকা হাতে পেয়েছেন। ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে ২৫০ টাকা ভাড়ায় ব্যক্তিগত কাজে টাঙ্গাইলের আশেকপুর বাইপাস এলাকায় নেমেছেন।

তিনি ঈদে স্বজনদের জন্য কেনাকাটায় ব্যয় ১২ হাজার টাকা ব্যয় করেছেন। বাকি ৮ হাজার টাকা দিয়ে ঈদ খরচ ও ছুটি শেষে তাকে কর্মস্থল ঢাকায় ফিরতে হবে। এ টাকা বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলাট্রাকে চেপে আশেকপুর বাইপাস পর্যন্ত এসেছেন।

টাঙ্গাইলের বাসিন্দা সুমন মিয়া জানান, ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের বাসভাড়া স্বাভাবিক সময়ে ২৫০ টাকা। সেখানে দ্বিগুণ অর্থাৎ ৫০০ টাকা ভাড়ায় টাঙ্গাইল নামিয়ে দিচ্ছে। তিনি জানান, ঈদে বাড়ি ফিরতে হবে এ জন্য অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও কিছু করার নেই। পরিবারের সাথে ঈদ করতেই হবে।

বগুড়া এলাকার একটি খোলা ট্রাকের চালক সোহাগ রহমান জানান, তিনি সব সময় বালু পরিবহন করেন। এবার ঈদে গরু নিয়ে গাবতলী গরুর হাটে গিয়েছিলেন। ট্রাকে যাত্রী নেওয়ার কোনো চিন্তা-ভাবনা তার ছিল না। ফেরার পথে দুই যাত্রী ট্রাক থামিয়ে তাদের দুঃখের কথা বলেন- এজন্য ফ্রিতে তাদের ট্রাকে উঠান। পরে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছামাত্র যাত্রীরা হুরমুর করে ট্রাকে ওঠেন। নামতে বললে তারা রেগে উঠে বলেন, তারা তো ফ্রিতে যাবেন না, ভাড়া দিবেন। পরে ভাড়া মিটিয়ে রওনা হয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা একটি পরিবহনের বাস চালক জানান, ঈদের ছুটিতে যাত্রীদের চাপ ও মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এ জন্য একটু বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ(ওসি) মীর সাজেদুর রহমান জানান, পিকআপভ্যান ও খোলা ট্রাকের ছাদে উঠে যেন যাত্রী না নেওয়া হয় সেজন্য তারা বাঁধা দিচ্ছেন। যারা কথা শুনছেন না তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া সিএনজি চালিক অটোরিকশা বা থ্রি-হুইলার মহাসড়কে দেখতে পেলেই মামলা দেওয়া হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে