আজ- শুক্রবার | ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৪ আশ্বিন, ১৪৩২ | রাত ৩:৩৬
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৪ আশ্বিন, ১৪৩২
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৪ আশ্বিন, ১৪৩২

মুজিব বর্ষ ১০০’র মোড়ক উন্মোচন

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে তৈরি করা ক্যালেন্ডার

দৃষ্টি নিউজ:

বৈশাখ মাস দিয়ে শুরু হয় বাংলা বর্ষপঞ্জি। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার বা সাধারণ মানুষ যেটাকে ইংরেজি পঞ্জিকা বলে, সেটার শুরু জানুয়ারি দিয়ে। হিজরি সন শুরু হয় মহররম মাস থেকে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বানানো একটি পঞ্জিকা শুরু হচ্ছে ‘স্বাধীনতা’ মাস দিয়ে।

সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় তহবিল যৌথ উদ্যোগে পঞ্জিকাটি তৈরি করেছে। নতুন এই পঞ্জিকার নাম ‘মুজিব বর্ষ ১০০’। মুজিব বর্ষ ১০০-এর বাকি মাসগুলোর নাম হচ্ছে- শপথ, বেতারযুদ্ধ, যুদ্ধ, শোক, কৌশলযুদ্ধ, আকাশযুদ্ধ, জেলহত্যা, বিজয়, ফিরেআসা, নবযাত্রা ও ভাষা।

এই পঞ্জিকার প্রথম দিন হচ্ছে, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন (১৭ মার্চ)। এই দিনটিকে প্রথম দিন ধরে ইংরেজি ক্যালেন্ডারের মতো এটিরও গণনা হবে ৩৬৫ দিন ধরে। তবে বাংলা পঞ্জিকার মতো সপ্তাহের বারগুলোর নাম একই রাখা হয়েছে। এই পঞ্জিকায় ভাষা মাসটি শেষ হয়েছে ২৮ দিনে। ৩১ দিনে শেষ হয়েছে স্বাধীনতা, জেলহত্যা, বেতারযুদ্ধ, ফিরেআসা, শোক, নবযাত্রা, কৌশলযুদ্ধ মাসগুলো। বাকি ৪টি মাস শেষ হয়েছে ৩০ দিনে।

ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্যের অনুকরণে নতুন ঘরানার এই পঞ্জিকার মাসের নামকরণ করা হয়েছে। মাসের নামের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পেয়েছে স্বাধীনতাযুদ্ধের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, ভাষা আন্দোলন, জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড, জাতির পিতার প্রত্যাবর্তন ও হত্যাকাণ্ড।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষ স্মরণে এই পঞ্জিকা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মুজিব বর্ষ ১০০ ক্যালেন্ডারটি তিন হাজার কপি ছাপানো হয়েছে। বাংলা ভাষায় দুই হাজার ও ইংরেজি ভাষায় এক হাজার সংখ্যা। পঞ্জিকাটি সরকারি বিভিন্ন কার্যালয়ে ব্যবহারের জন্য। বিদেশি দূতাবাসগুলোর জন্য ইংরেজিতে প্রকাশিত পঞ্জিকাটি পাঠানো হবে।

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে তৈরি করা ক্যালেন্ডার

গত ১৬ মার্চ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে নতুন পঞ্জিকাটির মোড়ক উন্মোচন হয়। শ্রমসচিব কেএম আলী আজম এর মোড় উন্মোচন করেন। বৃহস্পতিবার(১৯ মার্চ) দুপুরে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ক্যালেন্ডার উদ্বোধন এই জাতির জন্য মাইলফলক। শ্রমমন্ত্রীর এই ক্যালেন্ডারটি উদ্বোধন করার কথা ছিল। তিনি অসুস্থ থাকায় সংগত কারণে আমাকে উদ্বোধন করতে হয়েছে।’ শ্রমসচিব জানান, উদ্যোগটি ভালো। তবে পঞ্জিকাতে বেশ কিছু সংস্কার করা প্রয়োজন। সব অংশীজনের মতামত নিয়ে ক্যালেন্ডারটি চূড়ান্ত করতে হবে। এরপর সরকারি সব দপ্তরে ক্যালেন্ডারটি রাখার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে। পঞ্জিকাটি তৈরি করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় তহবিলের পাঁচ সদস্যের একটি দল।

কেন্দ্রীয় তহবিলের মহাপরিচালক এএমএম আনিসুল আউয়াল বলেন, মুজিব শতবর্ষে নতুন কিছু করার লক্ষ্যে তিন মাস আগে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানব ইতিহাসে অনেক রাজার জন্মদিনকে প্রথম দিন ধরে এমন বিশেষায়িত ক্যালেন্ডার তৈরির প্রচলন আছে। এটি তো একটা চিহ্ন, যা মানুষ আজীবন মনে রাখতে পারবে। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ইতিহাসকে স্মরণ করতেই এই ক্যালেন্ডারটি বানানো হয়েছে।

একের ভেতর চার

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে তৈরি করা ক্যালেন্ডার

নতুন এই পঞ্জিকায় মুজিব বর্ষ ছাড়াও বাংলা সন, গ্রেগরিয়ান সন ও হিজরি সনের মাস ও তারিখ উল্লেখ আছে। একটি পঞ্জিকাতে মিলছে সব কটির হিসাব। সরকারি সাধারণ ছুটির দিনগুলো এতে উল্লেখ আছে। পাশাপাশি প্রতি মাসের গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর ইতিহাস পয়েন্ট আকারে এই পঞ্জিকায় তুলে ধরা হয়েছে। যেমন একাত্তরের ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার শপথ নেয়। মুজিব বর্ষ-১০০ তে দিনটি পড়েছে শপথ মাসের ১ তারিখ। তেমনি ইংরেজি পঞ্জিকার ২১ ফেব্রুয়ারি পড়েছে ভাষার মাসের ৫ তারিখ, ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবস পড়েছে বিজয় মাসের ৩০ তারিখে। এ ছাড়া প্রত্যেক মাসেই ঐতিহাসিক ছবি দিয়ে পঞ্জিকাটি সাজানো হয়েছে।

আনিসুল আউয়াল জানান, খ্রিষ্টাব্দ ৬০০ শতকের পূর্বে রাজা শশাঙ্কের আমলে তৈরি করা হয়েছিল শশাঙ্কব্দ। আড়াইশ’ বছর পর তা বিলুপ্ত হয়। মুজিব বর্ষের এই ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে আধা ঘণ্টার মধ্যেই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর ইতিহাস সম্পর্কে জানা যাবে। মুজিব বর্ষ ১০০ অনুযায়ী আগামি বছর পঞ্জিকাটি পড়বে মুজিব বর্ষ-১০১ এ। এভাবে পঞ্জিকা এগোতে থাকবে। এই পঞ্জিকায় আপাতত কোনো অধিবর্ষ নেই। তবে ভবিষ্যৎ প্রয়োজনে তা সংস্কার করে অধিবর্ষ যুক্ত করা হবে।

তাঁর দাবি, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সরকারি চাকরিজীবীদের মুজিব বর্ষ ভাতা দেওয়া হোক। তাতে মানুষ এই উৎসবটি সহজেই মনে রাখবে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়