আজ- ২৫শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার  দুপুর ১২:২৬

রাত পোহালেই খুশির ঈদ

 

দৃষ্টি নিউজ:

ঈদ মোবারক! ঈদ মোবারক!! ঈদ মোবারক ঈদ!!! আজ রোববার রাত পোহালেই সোমবার সারা দেশে ত্যাগের মহিমায় উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা।


হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা পালিত হয়। ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহায় ঠিক আগের দিন চাঁদ দেখার বিষয় নেই। ১০ দিন আগেই ঠিক হয়ে যায় ঈদের দিনক্ষণ। সে অনুসারে পশু কেনা, নাড়ির টানে গ্রামে যাওয়াসহ ঈদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে থাকেন সবাই। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শেকড়ের টানে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে মানুষ; সাধ্যমতো কিনছেন পশু।


ঈদুল আজহা আমাদের দেশের মানুষের কাছে ‘কোরবানির ঈদ’ নামেই পরিচিত। এর ইতিহাস সুপ্রাচীন। সারা বিশ্বের মুসলমান ১০ জিলহজ কোরবানি দিয়ে থাকেন। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।


সোমবার সকালে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের মাধ্যমে ঈদ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। নামাজের পর খুতবায় ইমাম সাহেব কোরবানির মর্মবাণী তুলে ধরবেন। পশু কোরবানির মাধ্যমে মনের পশুকে দমনের আহ্বান থাকে খুতবায়। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একসঙ্গে নামাজ আদায়ের পর কোলাকুলি করে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। ঘুচে যাবে সব ভেদাভেদ। দোয়ার মাধ্যমে ঈদ উদযাপনের প্রথম পর্ব শেষ হবে।


নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকেই যাবেন কবরস্থানে। চিরবিদায় নেয়া স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সজল চোখে এই আনন্দের দিনে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আলস্নাহর দরবারে আকুতি জানাবেন। এরপর বাড়ি ফিরে আলস্নাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে ঈদের প্রধান কর্তব্য সম্পন্ন করবেন।


গ্রাম থেকে শহর সব জায়গায় বিকাল পর্যন্ত আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে কোরবানির পশুর মাংস বিতরণের আনন্দে মেতে উঠবেন অনেকে। রাজধানী ঢাকায় বেশ কয়েকটি ঈদের নামাজের জামাত হবে। ঈদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিতের্ যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে।


ঈদুল ফিতরের পর মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহা। আলস্নাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তার প্রিয় পুত্রকে কোরবানি করতে চেয়েছিলেন। ইব্রাহিম (আ.)-এর নিয়ত ও তা বাস্তবায়নের উদ্যোগে খুশি হয়ে তার পুত্রের বদলে পরম করুণাময় আলস্নাহতায়ালার ইশারায় দুম্বা কোরবানি হয়।

হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর অসামান্য এই ত্যাগের মহিমা জাগ্রত রাখতে সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পশু কোরবানি করেন। ঈদুল আজহার পরের দুদিন অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও পশু কোরবানির সুযোগ থাকে।


বস্তুত ঈদুল আজহা শুধুমাত্র পশু কোরবানির আনুষ্ঠানিকতাই নয়, এই ঈদ সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের ত্যাগ, আত্মসমর্পণ ও আত্মোপলব্ধির শিক্ষা দেয়। ঈদুল আজহার চেতনা মহান আলস্নাহর ইচ্ছার কাছে নিজেকে সঁপে দেয়ার শিক্ষাও দেয়। ইসলামের দৃষ্টিতে ঈদুল আজহার দিনে হালাল পশু কোরবানি করা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কাজ।

পবিত্র কোরআনে সূরা কাওসারে বলা হয়েছে, ‘অতএব আপনার পালনকর্তার নামে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন।’ সুরা হজে বলা হয়েছে, ‘কোরবানি করা পশু মানুষের জন্য কল্যাণের নির্দেশনা।’ কোরবানির পশু সম্পর্কে কোরআন মজিদে আরও বলা হয়েছে, ‘এগুলোর গোশত বা রক্ত আমার কাছে পৌঁছায় না, কিন্তু তোমাদের তাকওয়া ঠিকই পৌঁছে যায়।’


রাসুল (সাঃ)-এর হাদিসে বলা হয়েছে, ‘ঈদুল আজহার দিন কোরবানির চেয়ে আর কোনো কাজ আলস্নাহর কাছে অধিক পছন্দনীয় নয়।’ অন্যত্র তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি দিল না, সে যেন ঈদগাহে না যায়।’


সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য কোরবানি ফরজ হলেও ঈদের আনন্দ থেকে দরিদ্র-দুস্থরাও বঞ্চিত হবে না। কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির সমুদয় অর্থ এবং কোরবানি দেয়া পশুর মাংসের তিন ভাগের একভাগ অনেকেই তাদের মধ্যে বণ্টন করবেন।


এদিকে প্রিয়জনদের সান্নিধ্যে ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে বরাবরের মতোই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় শহর থেকে অগণিত মানুষ গ্রামের বাড়িতে যাত্রা শুরু করেছে। রাজধানীর বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে।


পবিত্র ঈদুল আজহার তাৎপর্য তুলে ধরে বরাবরের মতোই দেশের সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করছে বিশেষ সংখ্যা। বেতার থেকে সম্প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠান। অন্যদিকে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ঈদ উপলক্ষে রয়েছে নানারকম আনন্দ-আয়োজন। আগামীকাল সোমবার থেকে টানা প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে চলবে ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno